ভালো খারাপে কেটেছে সময়, আমাদের জীবন থেকে শেষ হতে চলেছে আরও একটা বছর। বিদায় নিতে চলেছে ২০২৪। সময় থেমে থাকেনি, থাকবেও না তবে সময়ের সঙ্গে থেমে গিয়েছে অনেকেরই পথচলা। ভারতের আকাশ থেকে হারিয়ে গিয়েছেন বহু নক্ষত্র।
নতুন বছরের শেষ মুহূর্তে তাই ২৫ এর প্রাক্কালে সেই সকল নক্ষত্রদের স্মরণে আজ বিশেষ নিবেদন নিউজ পোলের তরফে…..
রতন টাটা (৯ অক্টোবর,২০২৪)
কিংবদন্তি শিল্পপতি এবং জনহিতৈষী রতন টাটা গত ৯ অক্টোবর মাত্র ৮৬ বছর বয়সে পরলোকগমন করেন। তাঁর মৃত্যুর কারণ ছিল উচ্চ রক্তচাপের কারণে কার্ডিয়াক অ্যাটাক। তিনি ভারতীয় শিল্পে এক অদম্য প্রভাব রেখে গেছেন। তাঁর নেতৃত্বে ‘টাটা গ্রুপ’ শুধুমাত্র ভারতে নয় সারা বিশ্বে প্রভাব ফেলেছে। টাটা গ্রুপের কর্মসূচি নতুন প্রজন্ময়কে বিশেষভাবে অনুপ্রাণিত করে। তিনি আমাদের হৃদয়ে সর্বদা বিরাজ করবেন।
জাকির হোসেন (১৫ ডিসেম্বর, ২০২৪)
২০২৪ এ আমরা হারিয়েছি আরও একজন কিংবদন্তিকে। তিনি হলেন বিখ্যাত তবলা বাদক জাকির হোসেন, যিনি ভারতীয় শাস্ত্রীয় সংগীতকে বিশ্বব্যাপী খ্যাতি এনে দিয়েছিলেন। তিনি গত ১৫ ডিসেম্বর মাত্র ৭৩ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে ফুসফুসের রোগে আক্রান্ত ছিলেন। তাঁর অতুলনীয় ছন্দ এবং শৈল্পিকতা তাঁকে একাধিক গ্রামী পুরস্কারসহ অসংখ্য প্রশংসা অর্জন করেছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে ভারতীয় শাস্ত্রীয় সংগীতে একটি যুগের সমাপ্তি ঘটে।
ড. মনমোহন সিং (২৬ ডিসেম্বর, ২০২৪)
মনমোহন সিং ছিলেন একজন ভারতীয় রাজনীতিবিদ, অর্থনীতিবিদ, শিক্ষাবিদ ও আমলা, যিনি ২০০৪ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ভারতের ১৩ তম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনিই প্রথম শিখ ধর্মাবলম্বী প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। বার্ধক্যজনিত কারণে ৯২ বছর বয়সে মৃত্যু হয়। তাঁর মৃত্যুতে ভারতীয় রাজনীতিতে এক অভাবনীয় ক্ষতি হয়ে গেল।
ওস্তাদ রাশিদ খান (৯ জানুয়ারী,২০২৪)
সংগীতশিল্পী ওস্তাদ রাশিদ খান ক্যান্সার আক্রান্ত ছিলেন। দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পর ৯ জানুয়ারী মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর মৃত্যুতে সংগীত জগতে নক্ষত্ৰের পতন ঘটে। পদ্মভূষণ পাওয়া এই সংগীতশিল্পীর মৃত্যুতে শেষ হল সংগীতের এক অধ্যায়।
পঙ্কজ উধাস(২৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪)
পঙ্কজ উধাস ছিলেন একজন ভারতীয় গজল এবং প্লেব্যাক সিঙ্গার। তিনি হিন্দি সিনেমা এবং ভারতীয় উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের জন্য বিখ্যাত। বিশ্ব জুড়ে অ্যালবাম এবং লাইভ কনসার্ট তাঁকে গায়ক হিসেবে খ্যাতি এনে দেয়। ২০০৬ সালে তিনি পদ্মশ্রী পুরস্কারে ভূষিত হন।
সারদা সিনহা (৫ নভেম্বর, ২০২৪)
কিংবদন্তি লোকগায়িকা সারদা সিনহা ৫ নভেম্বর, ২০২৪ সালে মাত্র ৭২ বছর বয়সে নয়াদিল্লির একটি বেসরকারি হাসপাতালে মারা যান। সারদা সিনহা ছিলেন মূলত বিহারের একজন বিশিষ্ট সংগীতজ্ঞ যিনি মৈথিলী, ভোজপুরি ভাষায় গান করেছিলেন। ‘ম্যায়নে পেয়ার কিয়া’ ও ‘হাম আপকে হ্যা কোন’ মতো বিখ্যাত ছবিতে গান গেয়েছিলেন। তিনি ভারতের তৃতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান পদ্মভূষণ প্রাপক ছিলেন।
রামোজি রাও (৮ জুন, ২০২৪)
রামোজি রাও ছিলেন একজন ভারতীয় ব্যবসায়ী, মিডিয়া সত্যাধিকারী ও চলচ্চিত্র প্রযোজক। তিনি রামোজি গ্রূপের প্রধান ছিলেন যেটি বিশ্বের বৃহত্তম ফিল্ম প্রোডাকশন। রামোজি রাও তাঁর প্রযোজনার জন্য ৪ টি ফিল্মফেয়ার পুরস্কার এবং জাতীয় চলচিত্র পুরস্কার অর্জন করেন। ২০১৬ সালে সাংবাদিকতা, সাহিত্য ও শিক্ষার অবদানের জন্য ভারতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান ‘পদ্মবিভূষণ’এ ভূষিত হন।
বিবেক দেবরায় (১ নভেম্বর, ২০২৪)
বিবেক দেবরায় ছিলেন একজন অর্থনীতিবিদ। যিনি ভারতীয় অর্থনীতিতে বিশেষ অবদান রেখে গেছেন। দীর্ঘদিন অসুস্থতার পর ১ নভেম্বর ৬৯ বছর বয়সে মারা যান। বিবেক দেবরায় নীতি আয়োগের একজন সদস্য ছিলেন। তাঁর সাহিত্য আকাডেমি অবদানের জন্য পদ্মশ্রী পুরস্কার পান।
অমিয় কুমার বাগচী (২৯ নভেম্বর, ২০২৪)
অধ্যাপক অমিয় কুমার বাগচী ছিলেন বর্তমান সময়ে অন্যতম বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ, পণ্ডিত ও বুদ্ধিজীবী। সারাজীবন একজন বিদ্রোহী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথ্য বলার জন্য তাঁকে কলেজ ত্যাগ করতে হয়। পরে তিনি প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।
ঋতুরাজ সিং (২০ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪)
হিন্দি ছোটপর্দার অভিনেতা ঋতুরাজ সিং এক কার্ডিয়াক অ্যাটাকে মাত্র ৫৯ বছর বয়সে পরলোকগমন করেন। ‘বানেগা আপকি বাত’, ‘দিয়া ওর বাতি হাম’-এর মতো শোতে অভিনয়ের জন্য বিশেষ পরিচিত ছিলেন। তাঁর মতো প্রতিভাধর অভিনেতার মৃত্যুতে ছাপ ফেলেছে অভিনয় জগতে।