সিঙ্গুর আন্দোলনের স্মৃতি বিলুপ্ত হতে চলেছে?

breakingnews জেলা রাজনীতি

নিজস্ব প্রতিনিধি, হুগলি: সিঙ্গুর লোকালের যাত্রাপথ সম্প্রসারণের বিরোধে আজ মঙ্গলবার সিঙ্গুর স্টেশনে বিক্ষোভে সামিল হলেন মন্ত্রী বেচারাম মান্না ও বিধায়ক করবী মান্না। আগামীকাল ১ জানুয়ারি থেকে এই পরিবর্তন কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে। মন্ত্রী জানিয়েছেন, ‘রেলের ইতিহাসে সিঙ্গুর আন্দোলন লোকালকে কখনই মুছে ফেলা যাবে না। তাই আগামীকাল সকালে সিঙ্গুর লোকাল হিসেবে আসা ট্রেনটিকে আটকে দেওয়া হবে। রেল যতক্ষণ না তাদের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে ততক্ষণ পর্যন্ত এই প্রতিবাদ চলবে।’

মন্ত্রীর এই দাবিকে কটাক্ষ করে বিজেপি জানিয়েছে, ট্রেনের রুট পরিবর্তন হলে সিঙ্গুর বাসীর কোন অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। পূর্ব রেলওয়ের তরফে জানানো হয়েছে , ‘জনগণের বৃহত্তর স্বার্থে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কেউ যদি ব্যক্তিগত স্বার্থে বাধা দেয় তার দায়িত্ব রেলের নয়।’

উল্লেখ্য সিঙ্গুর আন্দোলনের স্মৃতিকে সামনে রেখে ২০০৯ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২টি হাওড়া -সিঙ্গুর লোকাল ট্রেন চালু করেছিলেন। সিঙ্গুর আন্দোলন লোকাল নামেই তাদের নামকরণ করা হয়। পাশাপাশি কৃষকদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে সিঙ্গুর স্টেশনে কৃষিকাজ সংক্রান্ত ছবি খোদাই করা হয়েছিল এবং কৃষকদের পণ্য সংরক্ষনের লক্ষ্যে সিঙ্গুর স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় ‘কৃষাণ ভিষাণ’ প্রকল্প নামে একটি পেরিশেবল কার্গো সেন্টার বানিয়েছিলেন। যদিও তা চালু না হওয়ায় ভবনটি জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে আছে। কিন্তু ২টি হাওড়া সিঙ্গুর লোকাল এখনও চালু আছে। একটি সকাল ৬টি ৩০ মিনিটে সিঙ্গুর স্টেশনে পৌঁছয় এবং সকাল ৮ টা ১২মিনিটে সিঙ্গুর থেকে ছেড়ে যায়। অপর ট্রেনটি রাত ৮ টা১৫ মিনিটে সিঙ্গুরে ঢোকে এবং রাত ৯টায় সিঙ্গুর থেকে ছেড়ে যায়।

সম্প্রতি রেল একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে এই দু’টি ট্রেনের রুট পরিবর্তন করেছে। একটি ট্রেনকে তারকেশ্বর এবং অন্যটিকে হরিপাল পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হবে। সিঙ্গুর আন্দোলনের স্মৃতিকে সামনে রেখে চালু হওয়া এই দুটি ট্রেন বাতিল করা যাবে না। এই দাবিকে সামনে রেখেই এদিন সিঙ্গুর স্টেশনে বিক্ষোভ দেখায় তৃণমূল কংগ্রেসের মন্ত্রী ও বিধায়ক।

মন্ত্রী জানান, ‘এই ট্রেন খুবই জনপ্রিয়। সিঙ্গুরের ৫২টি গ্ৰামের মানুষ এই ট্রেনে যাতায়াত করেন। আমরা প্রতিবাদের সামিল হয়ে রেলকে আবেদন করব। রেল তার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে পুনরায় সিঙ্গুর আন্দোলন লোকালকে বহাল রাখবে। আগামীকাল বুধবার সকাল ৬টায় সিঙ্গুর স্টেশনে জমায়েত হবে এবং সেই ট্রেন সিঙ্গুর থেকে হাওড়ায় যাবে, অন্য কোথাও যাবে না।’