নিজস্ব প্রতিনিধি, নদিয়া:- নিজের প্রিয় পোষ্যকে খুঁজে না পেয়ে কি এমন কান্ড ঘটালেন যা দেখেই হতবাক অনেক নেটাগরিকরা। সম্প্রতি একটি খবর সোশ্যাল মিডিয়ায় খুব ভাইরাল হয়েছে। নদিয়ার বীরনগরের বাসিন্দা নির্মল বিশ্বাস তাঁর প্রিয় পোষ্য বিড়াল (হুলো)–কে হারিয়ে খুবই মন খারাপ। তাকে খুঁজে না পেয়ে না রীতিমতো খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন নির্মল বাবু। অবশেষে প্রিয় পোষ্যকে খুঁজে পেতে এক অভিনব পন্থা অবলম্বন করলেন।
হুলো বিড়ালকে খুঁজে পেতে পুরস্কার ঘোষণা করেছেন নির্মলবাবু। সেই পুরস্কারের অঙ্কটা নেহাত কম নয়। পুরস্কারের মূল্য ছিল ১০ হাজার টাকা। এমনকি মাইকে মাইকে প্রচারও করছেন তিনি।
এইরকম হতবাক করা ঘটনাটি নদিয়ার তাহেরপুর থানার বীরনগর পুরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সমরজিৎ পল্লী এলাকার। পেশায় ফল ব্যবসায়ী নির্মল বিশ্বাস বরাবরই পশুপ্রেমী। সারাদিনে যা আয় হয় তার সিংহভাগ ব্যয় করেন সারমেয় ও বিড়ালদের পিছনে। রাস্তাঘাটে অসুস্থ সারমেয় কিংবা বিড়াল পড়ে থাকলে তাদের সেবা করাই তাঁর একমাত্র জীবনের ব্রত। নিজের এক চিলতে টিনের ঘরে ৮ টি বিড়াল ও বেশ কয়েকটি কুকুর ছানা নিয়েই তাঁর সংসার। এক একটি বিড়ালের একেকটি নাম রয়েছে। যখনই তাদেরকে ডাকেন যে যেখানে থাক ছুটে চলে আসে নির্মল বাবুর কাছে।
উল্লেখ্য, বেশ কিছুদিনআগে তিনি দরকারি কাজে কলকাতায় গিয়েছিলেন। বাড়ি ফিরে এসে অনেক ডাকাডাকি করলেও প্রিয় হুলোকে দেখতে পাননি। নিজের ছোট ছেলে বাইক দুর্ঘটনায় মারা যাবার পর হুলোকেই তিনি সন্তান স্নেহে মানুষ করতেন। এমনকি তার জন্য রয়েছে আলাদা একটা খাট। প্রতিদিন একটি করে মাছ ও এক পোয়া দুধ তার জন্য বরাদ্দ। বাড়ির উঠোনেই চৌবাচ্চা করে তাতে মাছ চাষ করছেন শুধুমাত্র বিড়ালদের খাওয়ানোর জন্য। বাড়ির এই আদরের হুলো হারিয়ে যাওয়ায় মন খারাপ পরিবারের সকলের। দিনরাত চোখের জল ফেলে টোটো নিয়ে মাইকে প্রচার করে বীরনগরের এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্ত ছুটে বেড়াচ্ছেন নির্মল বাবু। প্রায় টানা ১৫ দিন খাওয়া – দাওয়া প্রায় ছেড়ে দিয়েছেন। নির্মলবাবু জানিয়েছেন, যতদিন না তিনি তার আদরের পোষ্যকে ফিরে পাবেন ততদিন এভাবেই দিন কাটাবেন। তাঁর এই পশুপ্রেম দেখে সকলেই হতবাক। বীরনগর পুরসভার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর গোবিন্দচন্দ্র পোদ্দার জানান, নির্মল বাবু পোষ্যদের অত্যন্ত ভালবাসেন। দিন আনতে পান্তা ফুরানোর সংসারে দৈনিক আয়ের সিংহভাগ ব্যয় করেন পশুদের উপর। তাঁর পোষ্যকে যেন তাড়াতাড়ি খুঁজে পায় সেজন্য অনেকই প্রার্থনা করছেন।