এবার শিক্ষকের বিরুদ্ধেই অভিযোগ র‍্যাগিংয়ের

জেলা রাজ্য

নিজস্ব প্রতিনিধি, বসিরহাট: উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট মহকুমার মাটিয়া থানার রাজেন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের নলডি গ্রামের ১৬ বছরের মেধাবী এক ছাত্র বর্তমানে নিখোঁজ। আব্বাস হাওড়ার আল-আমিন মিশনের আবাসিক ছাত্র ছিল এবং ২০২৫ সালের মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল। পরিবারের অভিযোগ, তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে এবং সেই কারণেই সে হোস্টেল ছেড়ে বেরিয়ে যেতে বাধ্য হয়।

২০২৪ সালের ৬ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, ওই ছাত্র মিশনের হোস্টেল থেকে বেরিয়ে যায়। এরপর থেকেই তার কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। আল-আমিন মিশন কর্তৃপক্ষ ৭ ডিসেম্বর উদয়নারায়নপুর থানায় নিখোঁজের অভিযোগ দায়ের করে। তবে পরিবারের অভিযোগ, কর্তৃপক্ষের গাফিলতির কারণে এতদিনেও কোনো সমাধান হয়নি।পরিবারের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, বিভিন্ন আত্মীয়-স্বজন ও সম্ভাব্য স্থানে খোঁজাখুঁজি করেও তার কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। মিশন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা পুলিশ ও প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে এবং ছাত্রকে খুঁজে বের করার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

ঘটনার কয়েকদিন পর ওই ছাত্রের কক্ষ থেকে চারটি চিঠি উদ্ধার করা হয়। ওই চিঠিগুলিতে ওই ছাত্র তার শিক্ষক সজিবুল ও ফিরোজ বাবুর বিরুদ্ধে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ তোলে। চিঠিতে লেখা ছিল, “স্যার, আমি বাঁচতে চাই না। আমাকে ক্ষমা করুন।”এই চিঠি উদ্ধারের পর তার পরিবার ও স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে চরম উত্তেজনা ছড়ায়। তারা দাবি করেন, দুই শিক্ষক শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করে ওই ছাত্রকে আত্মহত্যার পথে ঠেলে দিয়েছেন।

নিখোঁজ হওয়ার ৩০ দিন পরেও কোনো সন্ধান না পাওয়ায় ওই ছাত্রের বাবা কুতুবউদ্দিন মোল্লা ও মা রোজিনা বিবি হতাশ। তারা হাওড়া পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন এবং অভিযুক্ত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। আব্বাসের বাবা-মা হুমকি দিয়েছেন, “আমরা যে কোনো মূল্যে আমাদের ছেলেকে জীবিত অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে চাই। যদি না পারি, তবে আত্মহত্যার পথ বেছে নেব।” আল-আমিন মিশনের শিক্ষক সজিবুল বাবু দাবি করেছেন, “আমরা তার নিখোঁজ হওয়ার পরপরই পরিবারকে জানিয়েছিলাম। আমরা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করছি। কোনো শারীরিক বা মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ মিথ্যা। র‍্যাগিংয়ের কোনো ঘটনা এখানে ঘটেনি।”