প্রাথমিক শিক্ষায় ফের বড়ো ঘোষণা পর্ষদের

breakingnews রাজ্য শিক্ষা

নিজস্ব প্রতিনিধি,কলকাতা: প্রাইমারি স্কুলেও আসছে সেমিস্টার, ইদানিং এই বিষয়টিকে ঘিরে শিক্ষা মহলে চলছে জোর চর্চা।পশ্চিমবঙ্গের প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি গৌতম পাল গত সপ্তাহেই সাংবাদিক বৈঠক করেন এই বিষয়ে। বৈঠক শেষে ঘোষণা ঘোষণা প্রাথমিক শিক্ষাতেও এবার থেকে সেমিস্টার সিস্টেম চালু করা হবে।
ব্যবস্থা অনুযায়ী প্রাইমারি স্কুলে বছরে দুইবার নেওয়া হবে পরীক্ষা। পর্ষদ সভাপতি আগেই জানিয়েছিলেন প্রথম শ্রেণী থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত এই নতুন ব্যবস্থা চালু করা হবে।
কিন্তু এরপরই সামনে আসে সবচেয়ে অবাক করা বিষয়। রাজ্যের শিক্ষায় রদবদল সম্পর্কে অবগত নয় খোদ রাজ্য সরকারই! রাজ্য সরকারের জানা নেই নিয়ম বদলের বিষয়ে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই জানান গোটা বিষয়টি নাকি জানেনই না তিনি। সেটা কি করে সম্ভব? স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন করতে থাকেন অনেকেই। সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে রাজনৈতিক মহলে শুরু হয় জোরে চর্চা।

এ বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন গোটা বিষয়টা সম্পর্কে নাকি অন্ধকারে রাখা হয়েছিল খোদ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে। শুধু তাই নয়, এমনকি পশ্চিমবঙ্গের প্রাইমারি স্কুলে সেমিস্টার সিস্টেম চালু করার খবর কানে আসতেই মেজাজ হারান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এহেন নির্দেশ শোনা মাত্রই এই সিদ্ধান্ত বাতিল করার নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তারপর থেকেই প্রাথমিকের এই সেমিস্টার সিস্টেম নিয়ে তোলপাড় হয় রাজ্যের শিক্ষা দফতরের।

সাংবাদিক বৈঠক করে তোড়জাড় করে জানানোর পরেও মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশে বাতিল করতে হচ্ছে প্রাথমিকে সেমিস্টার সিস্টেম চালু করার ঘোষণা। তাঁকে না জানিয়ে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য ভরা সভার মাঝে রাজ্যের শিক্ষা মন্ত্রী ব্রাত্য বসুকেও ছেড়ে কথা বলেননি মুখ্যমন্ত্রী। সকলের সামনে শিক্ষা মন্ত্রীকে রীতিমত ভর্ৎসনা করেন তিনি। তৃণমূল নেত্রীর সিদ্ধান্তে রাতারাতি বিফলে যায় সব আয়োজন। সেই থেকেই তৈরি হয় দ্বন্দ্ব, তবে কি কার্যকরী হবে না নতুন নিয়ম?

একটি কমিটি গঠন করে ৪০ দিন ধরে যে জন্য তৈরি করা হয়েছিল ব্লু প্রিন্ট। আয়োজন করা হয়েছিল এই সেমিস্টার সিস্টেম চালু করার জন্য। পর্ষদ সূত্রে খবর প্রাথমিকে সেমিস্টার পদ্ধতির নীল নকশা বানাতে খরচ হয়েছিল ৫ লক্ষের বেশি টাকা। ৪০ দিন ধরে চারজন পরামর্শদাতা মিলে পর্ষদে বসে এই কাজ করেছিলেন। সূত্রের খবর ৫ লক্ষেরও বেশি টাকা খরচ হয়েছিল শুধু নগদে। ওই চার পরামর্শদাতাদের যাতায়াত এবং সম্মানিকের জন্য ওই টাকা খরচ হয়েছিল। কিন্তু টানা ৪০ দিনের সমস্ত পরিশ্রম ভেসতে যায় মুখ্যমন্ত্রীর একটা নির্দেশেই।
পর্ষদের এমন কর্মকাণ্ডে মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও বেশ কয়েকজন আধিকারিক বিরক্ত বোধ করেন। প্রশ্ন ওঠে টেন্ডার ছাড়া এই কাজ হল কি করে? আর এই প্রশ্ন তুলেছেন খোদ কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার। ব্রাত্য বসুকে এদিন মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট জানিয়ে দেন প্রাথমিকে যেভাবে পঠন-পাঠন চলছে তেমনভাবেই চলবে। কোন পরিবর্তন করা যাবে না। রাজ্যের অভিভাবক হিসাবে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন এই সেমিস্টার ব্যবস্থার চালু হলে ছোট ছোট শিশুদের ওপর চাপ পড়বে,বোঝা বাড়বে। তাই মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী প্রাথমিক শিক্ষার ক্ষেত্রে আগের মতই থাকছে সব। আপাতত কোনও প্রকার বদল হচ্ছে না প্রাইমারি স্কুল গুলিতে।