তাঁত এখন ইতিহাস, পরিত্যক্ত জঙ্গলে অসামাজিক কাজকর্ম

জেলা রাজ্য

নিজস্ব প্রতিনিধি পূর্ব বর্ধমান: পূর্বস্থলী ২ নম্বর ব্লকের বন্ধ তাঁত সমবায়গুলি অবহেলার এক চিত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে। একসময় এগুলি ছিল এলাকার তাঁতিদের জন্য আশার আলো। বাম আমলে এলাকার তাঁতিদের জন্য বিভিন্ন নামে কয়েকটি এলাকায় তাঁদের সমবায় গড়ে তোলা হয়েছিল। সমবায় গুলির মাধ্যমে তাঁতিরা সরকারি অনুদান পেত এবং তাতের কাপড়, লুঙ্গি, সুতো প্রস্তুত করত। এলাকার বহু তাঁতি সহ মানুষজন প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িয়ে ছিল এই সমবায় গুলির সঙ্গে। যেখান থেকে তাদের দৈনিক আয় হত। কিন্তু কয়েক বছর চলার পর থেকেই অর্থ সংকট সহ বিভিন্ন কারণে সমবায় গুলি একের পর এক বন্ধ হয়ে পড়ে। এরপর থেকেই এই সমবায় গুলি খুলতে বাম সরকার বা তৃণমূল সরকার কোন উদ্যোগী নেয়নি।

দীর্ঘ ৩০ বছরের অধিক সময় বেরিয়ে গেলেও এই সমস্ত সমবায় গুলি আজ পরিত্যক্ত। ভরে গেছে জঙ্গলে। ধুলোয় মিশে যাচ্ছে সমবায়ের ভিতর থাকা যন্ত্রপাতিসহ তাঁত যন্ত্র। চলছে অবাধে চুরি। নির্জন জঙ্গলে ঘেরা কয়েকটি সমবায় রাতে চলে অসামাজিক কাজকর্ম। চলে মদের আসর। তাঁত শিল্পীরা বহুবার এই সমবায় গুলিকে খোলার আবেদন নিয়ে প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছিল। মিলেছিল প্রতিশ্রুতি, কিন্তু আজ পর্যন্ত এই সমবায় গুলি খোলা হয়নি। পড়ে পড়ে নষ্ট হচ্ছে সরকারি জায়গা, নষ্ট হচ্ছে সম্পত্তি। তাঁতিদের বক্তব্য সমবায় গুলি খোলা হলে বহু মানুষের কর্মসংস্থান হবে।

ক্ষুদ্র কুটির শিল্প মন্ত্রী ছিলেন স্বপন দেবনাথ জানান, “বাম আমলের এই সমবায় গুলি আর্থিক ঋণে জড়িয়ে বন্ধ। এই সমবায় গুলি খোলার চিন্তা ভাবনা চলছে।” পূর্বস্থলী উত্তরের প্রাক্তন বাম বিধায়ক প্রদীপ সাহা মৌখিক জানান, “সমবায় গুলি খোলার কোন উদ্যোগ নেয়নি বর্তমান শাসক দল। তাঁরা টাকা আর নিজেদের দলাদলিতে ব্যস্ত। তাই মদের আসর বসা স্বাভাবিক ব্যাপার।” এই প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা রাজীব ভৌমিক জানান “বাম আমলে এই সমবায়ে দুর্নীতি হয়েছে। যাঁরা অসৎ কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিল তাঁরা আজ দল বদল করে শাসক দলের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। তাই তাঁদের কাছ থেকে এর বেশি আর কি আশা করা যায়।”