নিজস্ব প্রতিনিধি,কলকাতা: চেয়েছিলেন লক্ষ্মীর ভাণ্ডার কিন্তু কপালের দুর্ভোগ খণ্ডায় কে? আবেদন করতেই জানতে পারেন স্বামীর মৃত্যু খবর নিজের কাছেই অজানা। অবাক করা কাণ্ড হলেও সম্প্রতি সামনে এলো এমনই ঘটনা। তবে এর পিছনেও নাম জড়িয়েছে এক তৃণমূল নেতার! অভিযোগ তাঁর কীর্তিতেই মারাত্মক এই গণ্ডগোল। থানার তলবে এখন মামলা দায়ের শাশুড়ি ও বৌমার বিরুদ্ধে। হতে পারে জেলযাত্রাও।
স্বামী জীবিত এদিকে তৃণমূল নেতার চক্করে অ্যাকাউন্টে ঢুকেছে ‘বিধবা ভাতা’। লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের আবেদন করে চরম ভোগান্তি। টাকা আসেনি বাড়ির লক্ষ্মীর ভাণ্ডারে! বদলে মিলছে টাকা ফেরতের হুঁশিয়ারি। পুলিশি হেফাজতে সেই ভোগান্তি মেটাতেই থানা পুলিশের ধাক্কা সামলাচ্ছেন অভাবের সংসারের লক্ষ্মী। আইনের গেড়োয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে শাশুড়ি-বৌমা উভয়কেই।
এদিকে গোটা ঘটনায় অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা পলাতক। আপাতত তাঁকে হন্যে হয়ে খুঁজছে পুলিশ।
সোমবার এই মর্মে দায়ের হয় মামলা। ঘটনাটি নদিয়ার শান্তিপুর শহরের ২১ নম্বর ওয়ার্ডের বিশ্বসুখ পল্লীর। পরেশ দে’র স্ত্রী শেফালি দে দু’বছর আগে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের জন্য আবেদন করেন। তবে সে বারে মহিলার দাবি মঞ্জুর হয়নি। এরপরই মহিলাকে টাকা পাওয়ানোর জন্য তৎপর হয়ে ওঠেন তৃণমূলের তৎকালীন বুথ সভাপতি উত্তম হালদার।
এক্ষেত্রে ভোক্তা শেফালিদেবীর দাবি, সেই সময় উত্তমবাবু তাঁর কাছ থেকে হাজার টাকা নেন এই কাজের বিনিময়ে এবং জানান মঞ্জুর হয়েছে তাঁর আবেদন। তবে সে সময়ে অ্যাকাউন্ট করা হলেও পাসবুক দেওয়া হয়নি। কর্তৃপক্ষ জানায়, এক হাজার টাকা ঢুকেছে অ্যাকাউন্টে। এভাবেই মাসের পর মাস টাকা জমা দিলে ব্যাঙ্ক একটা স্লিপ দেয়।অন্যদিকে, টাকা তুললেও মেলে স্লিপ। এই সময়ে পাসবুক সাপ্লাই নেই বলে মহিলাকে জানানো হয় তাঁদের তরফ থেকে।
এরপর আচমকাই একদিন সকালে তাঁদের বাড়ির সামনে সাত সকালে হাজির হয় শান্তিপুর থানার পুলিশ। দীর্ঘক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদের পর আটক করা হয় শেফালী দিয়ে এবং তাঁর শাশুড়িকে। এদিকে অপরাধ কী তা কিছুতেই বুঝে উঠতে পারছিলেন না উভয়েই। খোঁজ নিতেই দেখেন এই কাণ্ড! লক্ষ্মীর ভাণ্ডার নয় টাকা ঢুকেছে বিধবা ভাতা’র। এরপর থানার বড়বাবু তাঁদের পাঠান বিডিওর কাছে। অভিযোগ করা হয় তাঁদের যাবতীয় নথি আটকে দাবি করেন ২৪ মাসের ২৪ হাজার টাকা ফেরতের। এরপর শেফালী দে’র শাশুড়ি পদ্ম দে জানান, এতদিন জানতাম না। তাঁর সন্তান জীবিত নয়? এ বিষয়ে সুনিশ্চিত করেন তিনি নিজেই।
শেফালিদেবী বলেন, ‘দুবছর ধরেই টাকা পাচ্ছি। মাসে-মাসে তুলেছি। কখনও সাত-আট মাস ছেড়ে তুলেছি। আমি লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা জানতাম। উত্তম সর্দার বলেছিলেন আমি করিয়ে দেব। আমায় ১০০০ টাকা দাও। বই হওয়ার পর ২০০০ হাজার টাকা নিয়ে গিয়েছিল। সে কোথায় আমি এখন খোঁজ পাচ্ছি না!’