নিজস্ব প্রতিনিধি,কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গ সরকারের হাতে গার্ডেনরিচ শিপ বিল্ডার্স তুলে দিল প্রথম ইকো ফ্রেন্ডলি ফেরি ঢেউ। দেশে এই প্রথম পথ চলা শুরু হয়েছে এনজি ইলেক্ট্রিক্যাল ফেরি ভেসেলের। দেশে এই প্রথম জলপথ পরিবহনে বিশেষ ধরনের ফেরি পরিষেবা। যা দূষণ কমাতে বিশেষভাবে কার্যকর। ভেসেল বানাতে রাজ্যের খরচ হয়েছে ছয় কোটি টাকা।
মিলেনিয়াম পার্ক থেকে বেলুড়মঠ হয়ে দক্ষিণেশ্বর পর্যন্ত যাবে ভেসেল, পরিবহন দফতর সূত্রের খবর। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে এই বিশেষ পরিষেবার কথা ঘোষণা করেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ক্লাসে ৩০ জন এবং সাধারণ ক্লাসে ৬০ জন যাত্রীদের জন্য স্থান রাখা হয়েছে। রাজ্য সরকার আরও ১২টি ই-ভেসেল এবং ১২টি ই-বার্জ চালানোর উদ্যোগ নিয়েছে। ই-ভেসেলটিতে এসি ও নন এসি দুটি বিভাগই থাকছে। মিলেনিয়াম পার্ক থেকে বেলুড় মঠ হয়ে দক্ষিণেশ্বর পর্যন্ত যাবে এই ভেসেলটি।
পরিবহণ দফতরের এক কর্তা জানান, ইলেক্ট্রিক ব্যাটারি চালিত এই ভেসেল দু ঘণ্টা পর্যন্ত বা ৩০ কিমি পথ একটানা চলতে পারবে।
সূত্রের খবর আগামী দিনে রাজ্যে ডিজেল চালিত লঞ্চ কমিয়ে বিদ্যুৎচালিত ভেসেল বৃদ্ধির পরিকল্পনার চিন্তা ভাবনা রয়েছে রাজ্যে সরকারের। মূলত পরিবেশ দূষণ কমাতে এমন উদ্যোগ বলে খবর। এ বিষয়ে পরিবহণ মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী জানিয়েছেন, ‘পরিবেশ দূষণ কমাতে বিশেষভাবে সাহায্য করবে বিদ্যুৎ চালিত এই ভেসেল। যার জেরে যাত্রীরা যেমন আরও বেশি সুরক্ষিত হবেন, ঠিক তেমনভাবেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্য অনুভব করবেন যাত্রায়’।
এবার থেকে এই ইলেকট্রিক ভেসেল বা ফেরি ব্যবহার করা যাবে জাতীয় জলপথ ১ বা হলদিয়া-বারানসী জলপথেও। যা প্রতি ঘণ্টায় ২১০ কিলোওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন এবং সম্পূর্ণভাবে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। যার দৈর্ঘ্য প্রায় ২৪ মিটার দীর্ঘ।
প্রায় ১৫০ জন যাত্রী যাতায়াত করতে পারবেন এই ভেসেলেই। এছাড়া এখানে সোলার প্যানেল বসানো থাকবে শক্তি সঞ্চয় করার প্রয়োজনে। এই ইলেকট্রিক ভেসেলের গতি থাকবে ৮ নট। সর্বোচ্চ গতি ১০ নট পর্যন্ত।
জানা যায় এই ইলেকট্রিক ভেসেলের নকশা তৈরি করেছে জিআরএসই’র ইঞ্জিনিয়াররা। এই বিষয়েজি আর এস ই’র আধিকারিকরা বলেন এই জলযান চলাচলে হলে বিপ্লব আসবে বাংলায়। যেখানে গোটা দেশে চেষ্টা করা হচ্ছে সব দিক থেকে দূষণ কমানোর, সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে রাজ্যের এই নতুন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন তাঁরা। এ বিষয়ে তাঁরা আরও বলেন, ‘এই জলযান যাত্রী পরিবহণ শুরু করলে মানুষের গণ পরিবহণ সংক্রান্ত ধারণা সম্পূর্ণ বদলে যাবে।’