শতাব্দী প্রাচীন তিন নম্বর বাস এখন অতীত!

জেলা রাজ্য

নিজস্ব প্রতিনিধি, হুগলি: সেঞ্চুরি হল না, ৯৭ এ থামল দৌড়! তিন নম্বর রুটের একমাত্র বাসটি আর দৌড়বে না! প্রায় ৯৭ বছর পর্যন্ত সকল মানুষের কলকাতা যাওয়ার একমাত্র সহজ অবলম্বন ছিল ৩ নম্বর বাস। তবে এবার তার চাকায় পড়লো বেড়ি। চিরতরে শেষ হচ্ছে তিন নম্বর বাসের পথচলা। গত পাঁচ বছর ধরে যাত্রা পথ ছোটো করে দক্ষিণেশ্বর পর্যন্ত চলছিল।

জানা গিয়েছে, ১৯২৭ সালে শ্রীরামপুরের থেকে কলকাতা যাওয়ার জন্য পথচলা শুরু হয় তিন নম্বর বাসের। হুগলি হাওড়া, উত্তর ২৪ পরগনা, কলকাতা চারটি জেলাকে সংযোগ করেছিল এই বাস। এক সময় অনেক বাস ছিল এই রুটে। ২০২৪ এর শেষের সঙ্গে পথ চলার সমাপ্ত করলো শ্রীরামপুরের বহু প্রাচীন এই বাসটি। গত পাঁচ বছর ধরে চলছিল টিকে থাকার লড়াই। শেষের একটি মাত্র বাস প্রদীপের সলতের মত জ্বলছিল।সেই বাসের মালিক নিজেই কখনও বাসের ড্রাইভার, আবার নিজেই বাসের কন্ডাক্টর। শুধুমাত্র নিজের বাসকে ভালোবেসে এতদিন লড়াই চালিয়ে যাচ্ছিলেন বাস মালিক সুদীপ গোস্বামী। তাঁর স্বপ্ন ছিল অন্তত ১০০ বছর এই বাসের রুটকে বাঁচিয়ে রাখবেন। তবে সেঞ্চুরির আগে ৯৭ তেই শেষ হল তাঁর লড়াই।

অনেক ঝড়ঝাপটা সামলে কোনভাবে একটি মাত্র বাসকে বাঁচিয়ে রেখেছিলেন বাস মালিক সুদীপ গোস্বামী। নিজেই কখনও চালক কখনও কন্ডাক্টর হয়ে চালিয়ে নিয়ে গেছেন বাস। কিন্তু যাত্রীর অভাবে সেই বাস বন্ধই করে দিতে হল তাঁকে। তেলের খরচ বাসের মেইন্টেনেন্স বেড়েছে সেই তুলনায় বাসে যাত্রী নেই। অটো টোটোয় যাত্রীরা স্বাচ্ছন্দ মনে করেন। বাসে করে শ্রীরামপুর থেকে কলকাতা যাওয়ার বদলে বিকল্প পরিবহনের সুযোগ থাকায় বাসের যাত্রা কমছে। ফলে গাড়ি চালিয়ে তেলের খরচ ওঠে না।

হুগলি জেলার লাইফ লাইন হিসেবে পরিচিত ছিল একসময় এই বাস রুট। শ্রীরামপুর রিষড়া কোন্নগর উত্তরপাড়া পেরিয়ে দক্ষিণেশ্বর হয়ে বাগবাজার শ্যামবাজার। মফস্বল চাকুরিজীবী মানুষের উত্তর কলকাতা যাওয়ার একমাত্র সহজ অবলম্বন ছিল এই তিন নম্বর বাস। যা এবার স্থান পেল অতীতের পাতায়।