নিজস্ব প্রতিনিধি, হুগলি: যোগা চ্যাম্পিয়নশিপে আবারও এক চমকপ্রদ সাফল্য নিয়ে সামনে এসেছেন বাংলার সৃজা সাহা। গত ৬ জানুয়ারি থেকে ৮ই জানুয়ারি দশম যোগা প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছিল সিঙ্গাপুরে। সেখানে চারটি ইভেন্টে সোনা ও একটি ইভেন্টে ব্রোঞ্জ জিতে ভারতকে শীর্ষে পৌঁছে দিয়েছে। হুগলির মানকুন্ডুর দু’নম্বর মহাডাঙ্গার বাসিন্দা সৃজা সাহা। বয়স ১৫ বছর। চন্দননগর ঊষাঙ্গিনী বালিকা বিদ্যালয়ে দশম শ্রেণীতে পড়ে। এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছিল দশটি দেশ ও রাজ্য। ভারতবর্ষ থেকে এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিল ৩১ জন প্রতিযোগী। সৃজা ট্রাডিশনাল সিলভার, অটিস্টিক সলো, রিদমিক পেয়ার অর্টিস্টিক পেয়ার, ফ্রি ফ্লোর ইভেন্টে গোল্ড পদক জিতেছে। সৃজার এই সাফল্যে খুশি তার পরিবার ও প্রতিবেশীরা। ছোট থেকেই খেলার প্রতি আলাদাই আগ্রহ ছিল সৃজার। সৃজার বাবা সুকান্ত সাহা চন্দননগর কর্পোরেশনের অস্থায়ী কর্মী। মা নবনীতা সাহা গৃহবধূ। ছোট থেকেই কোচ অমিত কুমার দাস এর কাছে যোগাসন শেখে সৃজা। ডিস্ট্রিক্ট বেঙ্গল ও ন্যাশনাল প্রতিযোগিতায় একাধিক পুরস্কার রয়েছে তার ঝুলিতে।
২০১৯ সালে মাত্র ৯ বছর বয়সে সাউথ কোরিয়ার নবম এশিয়ান যোগা স্পোর্টস চ্যাম্পিয়নশীপে গিয়েছিল সৃজা। তারপর ২০২৪ সালে অক্টোবর মাসে ৪৯ তম যোগাসন প্রতিযোগিতায় পদক জয় করেছিল। সেখানেই প্রথম সোনা জয় তার তারপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। সেখানে তার প্রথম জয় সোনা। এই বছর দশম এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে সিঙ্গাপুরে অংশ নিয়েছে। সৃজার কথায়, “ভবিষ্যতে যোগা নিয়ে এগিয়ে যেতে চাই এবং আগামী দিনে অলিম্পিকে যেতে চাই। ২০১৯ সালে সাউথ কোরিয়ায় নবম চ্যাম্পিয়নশিপের জন্য গিয়েছিলাম সেখানে একটি স্বর্ণপদক ও একটি ব্রোঞ্জ পদক জিতেছিলাম। এবার সিঙ্গাপুরে পদক জয় করে আমার খুব ভালো লাগছে।”সৃজার মা নবনীতা সাহা বলেন, “যোগা দেখে ভালো লাগত তাই ঠিক করি তখন থেকেই মেয়েকে যোগা শেখাবো। ছোট থেকে সৃজার যোগার প্রতি ভালবাসা। তবে প্রতিযোগিতায় পাঠাতে গিয়ে অনেক টাকা খরচ হয়ে গিয়েছে, কিন্তু আমার মেয়ে তার প্রতিভা দিয়েই সেই মূল্য অর্জন করেছে।” তাদের জীবনযাত্রা সাধারণ হলেও মেয়ের জন্য তারা কিছু কমতি রাখেননি। সৃজার এই সাফল্যে তার পরিবার ও কোচের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে বলেও জানান তিনি। তবে বর্তমানে তার পরিবার কিছুটা হলেও চিন্তিত। তবে সৃজা তার সাফল্যের মাধ্যমে ভবিষ্যতে আরও বড় কিছু অর্জন করার আশা জাগিয়েছেন।