নিউজ পোল ব্যুরো: সেনাকে হস্তান্তরের আগেই ব্যর্থ আদানির ‘অস্ত্র’! উড়তে গিয়ে মুখ থুবড়ে পড়ল ১৫০ কোটির প্রহরী আদানি ‘ডিফেন্স অ্যান্ড এরোস্পেস’ নির্মিত ‘দৃষ্টি ১০ স্টারলাইনার’ ড্রোন। ‘দৃষ্টি ১০ স্টারলাইনার’ ড্রোন মাঝারি উচ্চতায় একটানা ৩৬ ঘণ্টা আকাশে উড়তে সক্ষম। শুধু তাই নয়, এই ড্রোনটি ৪৫০ কেজি ওজনের ভার বহন করতেও সক্ষম। নৌ ও সেনাবাহিনীর গোয়েন্দা তথ্য ও নজরদারি চালানোর জন্য দু’টি ড্রোনের অর্ডার দেওয়া হয়েছিল। সেই দ্বিতীয় ড্রোনটি মঙ্গলবার পরীক্ষায় ব্যর্থ হয়েছে বলেই জানা গিয়েছে।
ইজরায়েলের প্রযুক্তি ব্যবহার করে এদেশে তৈরি আদানি গ্রুপের প্রথম ড্রোন, ‘দৃষ্টি ১০ স্টারলাইনার আনম্যান্ড এরিয়াল ভেহিকল’। মাঝারি উচ্চতার ক্ষমতাযুক্ত শক্তিশালী এই ড্রোন এরই মধ্যে নৌবাহিনী তাদের নজরদারির জন্য ব্যবহার করতে শুরু করে। ভারতীয় ভূখণ্ডের উপকূলবর্তী অঞ্চলে নজরদারি বৃদ্ধিতে এই ড্রোনটি নৌবাহিনীর কাছে বিশেষ সহায়ক ভূমিকা নিতে পারে বলে দাবি করেছিল আদানি গ্রুপ।
নৌসেনা এই ড্রোনের সাহায্যে সমুদ্রে শত্রুপক্ষের জাহাজ বা জলদস্যুদের জলযানের ওপর নজরদারি চালাতে সক্ষম হবে। এমনকি যে কোনও পরিবেশে কার্যকরী এই ড্রোন, ঝড়-ঝঞ্ঝা সইতেও সক্ষম বলেও দাবি করেছিল প্রস্তুতকারক সংস্থা।
‘দৃষ্টি ১০ স্টারলাইনার’কে গত বছরেই সেনাবাহিনীর নজরদারির কাজে অন্তর্ভূক্ত করা হয়। এরপর গত ডিসেম্বরে এই সংস্থার তৈরি আরও একটি ড্রোন আনুষ্ঠানিক ভাবে ভারতীয় নৌসেনার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল। যাকে সমুদ্রের ওপর নজরদারি চালানোর কাজে ব্যবহার করার লক্ষ্যে হায়দরাবাদ থেকে পোরবন্দরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
নৌসেনার কাছে তা হস্তান্তরের আগেই পরীক্ষামূলক উড়ানের সময় এটি ভেঙে পড়ে বলে সূত্রের খবর। সূত্রের আরও খবর, ভেঙে পড়া ড্রোনটি উদ্ধার করলেও সংশ্লিষ্ট সংস্থা আদানি গ্রুপ এখনও পর্যন্ত বিষয়টি সম্পর্কে কোনও প্রতিক্রিয়া জানায়নি।
উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী মোদীর ঘনিষ্ঠ শিল্পপতি গৌতম আদানির সংস্থার থেকে ড্রোন কেনা নিয়ে কংগ্রেস-সহ বিরোধী দলগুলি প্রশ্ন তুলেছিল। রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান হিন্দুস্তান এরোনটিক্স লিমিটেড এবং ভারত ডায়নামিক্সও ড্রোন তৈরি করে। তা সত্ত্বেও ড্রোন তৈরির জন্য ইজরায়েলের এলবিট সিস্টেমস ও আদানি গোষ্ঠীর যৌথ উদ্যোগে তৈরি সংস্থাকে দায়িত্ব দেওয়া নিয়ে সমালোচনায় মুখর বিরোধীরা। তাদের অভিযোগ, সরকারি প্রতিষ্ঠানের ওপর ভরসা না করে কেন আদানির নতুন সংস্থাকে কয়েকশো কোটি টাকার বরাত দেওয়া হল? কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ অভিযোগ জানিয়ে বলেছিলেন, আদানি গোষ্ঠী ইজরায়েল থেকে চারটি ‘হার্মিস-৯০০’ ড্রোনের যন্ত্রাংশ আমদানি করেছে। আর তা জুড়েই এই ড্রোনের নাম ‘দৃষ্টি-১০ স্টারলাইনার’ রেখেছে। তারা শুধু ড্রোনের এয়ারফ্রেম তৈরি করেছে। বাকি প্রযুক্তি পুরোটাই ইজরায়েলের।