রাজ্যের যুক্তি খারিজ, প্রতিবাদ মিছিল নিয়ে সিঙ্গল বেঞ্চের রায়কেই বহাল ডিভিশন বেঞ্চের

কলকাতা রাজ্য

নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: আলিপুর চিড়িয়াখানা বেসরকারিকরণের প্রতিবাদে বিজেপির মিছিলে অনুমতি দেয়নি রাজ্য। এবার রাজ্যের এই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে মামলায় রাজ্যের আবেদন খারিজ কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের। এই মামলায় সিঙ্গেল বেঞ্চের নির্দেশকেই বহাল রাখল ডিভিশন বেঞ্চে। আদালতের নির্দেশ মিছিল করতে পারবে বিজেপি।তবে মানতে হবে শর্ত।একক বেঞ্চের শর্তকেই বহাল রাখল ডিভিশন বেঞ্চ।প্রসঙ্গত, আলিপুর চিড়িয়াখানার জমি বেআইনি ভাবে বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহারের প্রতিবাদে, ৯ জানুয়ারি রবীন্দ্র সদন থেকে চিড়িয়াখানা পর্যন্ত বিজেপির তরফে মিছিলের ডাক দেওয়া হয়। সেই মিছিলের অনুমতি দেয়নি রাজ্য। এরপর বিজেপির তরফে কলকাতা হাই কোর্টে আবেদন জানান হয়। তার প্রেক্ষিতে কলকাতা হাই কোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন জানায় রাজ্য। বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডনের ডিভিশন বেঞ্চের দৃষ্টি আকর্ষণ করে দ্রুত শুনানির আবেদন করে রাজ্য।

উল্লেখ্য, আজ বেলা ১২টা থেকে বিজেপির এই মিছিলের অনুমতি দিয়েছিলেন সিঙ্গেল বেঞ্চের বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। সেই রায়কেই চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ডিভিশন বেঞ্চে যায় রাজ্য।বৃহস্পতিবার বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন ও বিচারপতি প্রসেনজিৎ বিশ্বাসের ডিভিশন বেঞ্চে এর শুনানিতে রাজ্যের আইনজীবী কিশোর দত্ত বলেন, বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের সিঙ্গেল বেঞ্চ রবীন্দ্র সদন থেকে জাতীয় গ্রন্থাগার পর্যন্ত মিছিলের অনুমোদন দিয়েছে। একটি রাজনৈতিক দল এই মিছিল করছে।আমাদের প্রশ্ন যে ইস্যু নিয়ে এই মিছিল তার গুরুত্ব কোথায়? আলিপুর চিড়িয়াখানা বেসরকারিকরণের কোনও বৈধতা এখনও নেই। যে ঘটনা ঘটছে না সেটা ইস্যু করে মিছিল করে শহরের ট্রাফিক ব্যবস্থা নষ্ট করার কি মানে? সাহিনবাগের ঘটনায় প্রচুর মৃত্যু ও ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল।এক্ষেত্রেও সেটা হতে পারে। তিনি আরও বলেন, আর এই ইস্যুতে এখনই মিছিলের তাড়াহুড়োর কি আছে? এখন শীতের সময় আলিপুর চিড়িয়াখানায় প্রচুর ভিড় থাকে। যে এলাকায় মিছিল হবে ওই এলাকায় প্রচুর মানুষ ঘুরতে আসেন। তার মধ্যে মিছিল করলে সমস্যা বাড়বে।তাছাড়া এখন গঙ্গাসাগর মেলার সময়। আমরা প্রচুর পুলিশ পাঠাচ্ছি ওখানে। পুলিশ এসব নিয়ে ব্যস্ত থাকবে।এসএসকেএমের মতো গুরুত্বপূর্ণ হাসপাতাল আছে। হাসপাতালের জন্য পুলিশ কোনদিন ওই জায়গায় কিছু করার অনুমতি দেয় না। সাপ্তাহিক দিনে ১৫০০ এর বেশি লোক হচ্ছে চিড়িয়াখানা নন্দন এলাকায়।এর প্রত্যুত্তরে মিছিলকারীদের আইনজীবী রাজদীপ মজুমদার বলেন, সব জায়গায় গুরুত্বপূর্ণ ও সেনসেটিভ! শ্যামবাজারে মিছিল করতে চাইলে রাজ্য বলবে আরজি কর আছে। এভাবে হাসপাতাল দেখিয়ে গণতান্ত্রিক অধিকার ভঙ্গ করতে পারে না রাজ্য। সিঙ্গেল বেঞ্চ বুঝেই নির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দিয়েছ।আর ১হাজার জন সংখ্যা বেঁধে দিয়েছেন।বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন বলেন, যেখানে হাসপাতালের মতো জরুরি পরিষেবা রয়েছে সেটা ব্যাহত না হয় সেটাও দেখতে হবে। মিছিল যাতে একটা চ্যানেল দিয়ে যায় তাহলে ট্রাফিকটাও খেয়াল রাখতে হবে। রাজ্য যে সাহিনবাগের উদাহরণ দিচ্ছে এই মিছিলের ক্ষেত্রে সেটার প্রয়োজনীয়তা নেই। এটা সাহিনবাগের মত ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা নেই।রাজদীপ মজুমদার বলেন, আমরা মিছিল রাস্তার পাশ দিয়েই করবো। সিঙ্গেল বেঞ্চে এমনি আবেদন ছিল আমাদের। ট্রাফিক নিয়ে কোনও সমস্যা হবে না।ভলেন্টিয়ার থাকবে।আমরা সিঙ্গেল বেঞ্চকে জানিয়েছিলাম।