ইরানের পরমাণু অস্ত্রভাণ্ডার ঘিরে রহস্য, লোকেশনের খোঁজে মরিয়া ইজরায়েল সহ ৭ দেশের স্পাই এজেন্সি 

অপরাধ রাজনীতি

নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: আমেরিকা সহ ন্যাটো গোষ্ঠী সংযত হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছে। কিন্তু বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর ইজরায়েল যে আজ নয় কাল ইরানকে প্রত্যাঘাত করবেই, তা স্পষ্ট। কিন্তু টার্গেট কোন জায়গা? এটাই কোটি টাকার প্রশ্ন। প্রাথমিক লক্ষ্য তিনটি— ইরানের পরমাণু অস্ত্রভাণ্ডার, ড্রোন ও মিসা‌ইল ভাণ্ডার ও তেলভাণ্ডার। ইজরায়েলের স্পাই এজেন্সি হিসেবে বিশ্বজুড়ে পরিচিত শিন বেট এবং মোসাদ। যদিও পশ্চিম এশিয়ার বর্তমান যুদ্ধে নেতানিয়াহুর দেশের একের পর এক সাফল্যের পিছনে রয়েছে প্রখর অত্যাধুনিক টেকনোক্র্যাট স্পাই সংস্থা ‘ইউনিট ৮২০০’। এই সিগন্যাল ইন্টেলিজেন্স এজেন্সিই হিজবুল্লার পেজার এবং ওয়াকিটকিতে বিস্ফোরক ঢুকিয়ে দেওয়ার প্ল্যান দিয়েছিল। কিন্তু ইরানের পরমাণু অস্ত্রভাণ্ডারের প্রকৃত লোকেশন জানতে পারেনি তারাও। শুধু জানা গিয়েছে, তাদের ৬০ শতাংশ পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে নান্তাজ এবং ফোরডো নামক দু’টি এলাকায়। সেটাও আন্ডারগ্রাউন্ডে। ফলে বাড়ছে রহস্য।
ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের আভাস হল, পাহাড়ের অভ্যন্তরে অনেক গভীরে রাখা আছে ইরানের তিনটি অস্ত্রভাণ্ডার। কিন্তু কোন পাহাড়? জানা যাচ্ছে না। ইরানের তেলভাণ্ডারের বহুলাংশ রাখা খাড়্গ অয়েল টার্মিনালে। মাত্র ২৫ শতাংশ রয়েছে ইরাক সীমান্তে আবাদান রিফাইনারিতে। প্রতিটি লোকেশনকে টার্গেট করতে পারে ইজরায়েল ডিফেন্স ফোর্স। কিন্তু এখনও জানা সম্ভব হয়নি ইরানের পরমাণু অস্ত্র, ড্রোন এবং মিসাইল ভাণ্ডারের প্রকৃত অবস্থান। ড্রোন এবং মিসাইলগুলি রাখা সম্পূর্ণ আন্ডারগ্রাউন্ডে। আমেরিকার সিআইএ, ইজরায়েলের মোসাদ এবং ব্রিটেনের এমআইসিক্স শুধু জেনেছে, অন্তত সাড়ে তিন মাইল এলাকা জুড়ে রয়েছে এই অস্ত্রভাণ্ডার। জি সেভেনের বৈঠকের পর আপাতত সাতটি দেশের স্পাই এজেন্সি মরিয়া হয়ে সন্ধান চালাচ্ছে সেগুলির! অর্থাৎ, মোসাদ, সিআইএ, এমআইসিক্সের পাশাপাশি ইতালির এআ‌ইএসই, জার্মানির বিএনডি, ফ্রান্সের ডিজিএসই। আর তাদের আড়ালে যুদ্ধের গতিপ্রকৃতি তীক্ষ্ণভাবে খতিয়ে দেখছে আর একটি গুপ্তচর সংস্থা, ভারতের ‘র’। 
ইরানের এই তিনটি ভাণ্ডারের একটিতেও ইজরায়েল মিসা‌ইল আক্রমণ করলে, তৎক্ষণাৎ প্রত্যাঘাত আসতে পারে। সেটা হতে পারে আরও কালান্তক। ইরান নিজে আক্রান্ত হওয়ার শঙ্কায়। তবু ইজরায়েলকে ধ্বংস করতে তারা পিছপা হবে না। আর তাই ইজরায়েল এমন কিছু করুক, চাইছে না জো বাইডেনের আমেরিকা। কারণ, সেক্ষেত্রে রাশিয়া এবং পরোক্ষে চীন পর্যন্ত ইরানের পাশে দাঁড়াতে পারে। সেক্ষেত্রে এই প্রবল আর্থিক মন্দার মধ্যেও আবার একটি যুদ্ধ আমেরিকার মাথায় চাপিয়ে দেওয়া হল, এই অভিযোগ আসন্ন ভোটে আছড়ে পড়বে ডেমোক্র্যাটদের বিরুদ্ধে। পক্ষান্তরে বিপরীত চাপও প্রবল। শনিবারই ইজরায়েলকে প্ররোচনা দিয়ে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। বলেছেন, ‘ইরানের পরমাণু এবং তেলভাণ্ডারে এখনই হামলা করো। আমেরিকাবাসী তোমাদের সঙ্গে আছে।’ ফলে বাইডেন উভয় সঙ্কটে।