বিজেপি সভাপতি কে হবেন? মোদি-শাহর সঙ্গে দ্বন্দ্ব সঙ্ঘের

দেশ রাজনীতি

সমৃদ্ধ দত্ত, নয়াদিল্লি: নরেন্দ্র মোদি যতই জনপ্রিয়তা হারাচ্ছেন এবং সাংগঠনিক শক্তিতে দুর্বল হচ্ছেন, ততই কর্তৃত্ব দখলে রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সঙ্ঘের চাপ বাড়ছে। নবতম তীব্র দ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছে সর্বভারতীয় সভাপতি নির্বাচন নিয়ে। জগৎপ্রকাশ নাড্ডা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। তাঁকে সরে যেতে হবে দলের সর্বভারতীয় সভাপতির পদ থেকে। তাঁর সময়সীমা সম্প্রসারিত করা হয়েছে। এখন তিনি  কেয়ারটেকার সভাপতির দায়িত্ব সামলাচ্ছেন। জানুয়ারি মাসের মধ্যেই নতুন সভাপতি মনোনয়নের কথা। কিন্তু বিগত ১০ বছর ধরে যতটা সহজ ছিল এই প্রক্রিয়া, এখন সময় পাল্টে গিয়েছে। আরএসএস এখন আর চাইছে না যে, নরেন্দ্র মোদি এবং অমিত শাহ জুটির পছন্দসই ও অনুগত কোনও নেতা সভাপতি হোক। তারা চায় স্বাধীন সত্তার সভাপতি। মোদি ও শাহের বাধ্য হবেন, এটাই একমাত্র যোগ্যতা হতে পারে না। সোজা কথায়, পরোক্ষে এই শর্তের কথা বুঝিয়ে প্রকৃতপক্ষে নিজেদের হাতেই বিজেপির রাশ ধরে রাখতে চাইছে সঙ্ঘ। 
বিজেপির পক্ষ থেকে কয়েক দফার বৈঠকে একাধিক নামের প্রস্তাব এলেও আরএসএস রাজি হয়নি। উল্টো দিকে সঙ্ঘ যে নামগুলির আভাস দিয়েছে, সেগুলি নিয়ে আলোচনা হবে বলে জানিয়েও ঝুলিয়ে রেখেছেন মোদি-শাহ। সম্প্রতি রাজনাথ সিংয়ের বাসভবনে বিজেপি এবং আরএসএস কর্তাদের দীর্ঘ কয়েক ঘণ্টা ধরে বৈঠক হয়েছে। বিজেপির পক্ষ থেকে ওই উচ্চপর্যায়ের আলোচনায় ছিলেন অমিত শাহ, রাজনাথ সিং ও বি এল সন্তোষ। আর সঙ্ঘের প্রতিনিধি হিসেবে পাঠানো হয়েছিল সাধারণ সম্পাদক দত্তাত্রেয় হোশবালে ও অরুণ কুমার। মোহন ভাগবতের পর আগামী সরসঙ্ঘচালক সম্ভবত হবেন এই হোশবালে। প্রায় ৬ ঘণ্টা ধরে চলে আলোচনা। কিন্তু সমাধান মেলেনি। 
সভাপতি নির্বাচনের সময় সমন্বয় বৈঠকের রীতি হল, আরএসএস কোনও নামের প্রস্তাব করে না। বিজেপির পক্ষ থেকে নামের তালিকা দেওয়া হয়। আরএসএস সেই নামগুলি নিয়ে আলোচনা করে। তারপর চূড়ান্ত মতামত জানায়। তবে এই বৈঠকে আরএসএসের প্রতিনিধিদের পক্ষ থেকে কিছু নামও বলা হয়েছে। যদিও সম্ভাব্য সভাপতি হিসেবে নয়। দলে কাদের অভিজ্ঞতা এবং সাংগঠনিক যোগ্যতা বেশি। কারা হবেন নতুন প্রজন্মের প্রতিনিধি, তা নিয়েই কিছু নাম উত্থাপন করে সঙ্ঘ। কিন্তু ওই বৈঠক ফলপ্রসূ হয়নি। বিজেপি যাদের নাম উত্থাপন করেছে তাদের সকলেই আদতে মোদি এবং শাহের অনুগত হবেন বলেই মনে  করা হচ্ছে। যে নামগুলি নিয়ে আলোচনা হয়েছে সেগুলি হল, সুনীল বনশাল, বিনোদ তাওড়ে,  সি আর পাতিল, মনোহরলাল খট্টর, শিবরাজ সিং  চৌহান, রাজনাথ সিং, ভূপেন্দ্র যাদব, দেবেন্দ্র ফড়নবিশ এবং ধর্মেন্দ্র প্রধান। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি নাম নিয়ে যথেষ্ট সন্দিগ্ধ মোদি-শাহ। তাঁদের আশঙ্কা, ওই নেতাদের দলের সভাপতি হওয়ার অর্থ হল একটি সমান্তরাল ক্ষমতার অক্ষ তৈরি হওয়া। যা তাঁরা মোটেও চাইছেন না।