বাস দুর্ঘটনা এড়াতে কমিশন প্রথা বিলোপের পাশাপাশি কড়া পদক্ষেপের ভাবনা রাজ্যের

কলকাতা রাজ্য শহর

নিজস্ব প্রতিনিধি, বিধাননগর: শহর কলকাতায় এবার বেপরোয়া ভাবে গাড়ি চালানোয় রাশ টানতে একাধিক পদক্ষেপের পথে হাঁটতে চলেছে রাজ্য সরকার। বে-সরকারি বাসের মধ্যে রেষারেষির বিষয়ে কড়া পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি দিয়ে তা বন্ধের নির্দেশ দিল পরিবহণ দফতর। এর পাশাপাশি এবার থেকে বেপরোয়া ভাবে গাড়ি চালিয়ে দুর্ঘটনায় কারোর মৃত্যু হলে খুনের মামলা রুজু করা হবে। একই সঙ্গে মালিকদের কাছে বাস চালকদের কমিশন প্রথা বন্ধের কথাও বলেন পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী।

বৃহস্পতিবার বাস সংগঠন এবং ক্যাব সংগঠনগুলির সঙ্গে এক বৈঠকে মিলিত হন পরিবহণমন্ত্রী। সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, রাজ্য পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিকেরা।
বৈঠক শেষে স্নেহাশিস চক্রবর্তী বলেন, ‘রেষারেষি বন্ধ করতেই হবে। জনবহুল এলাকায় রেষারেষি করলে চালকের বিরুদ্ধে আইনানুগ পদক্ষেপ নেওয়া হবে। বেপরোয়া ভাবে গাড়ি চালালে চালকের বিরুদ্ধে খুনের মামলা রুজু করা হবে।’

একই সঙ্গে এদিন বাস চালকদের কমিশন প্রথা বন্ধের কথাও বৈঠকে বাস মালিকদের বলেন পরিবহণমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘বাস সংগঠনগুলিকে কমিশন প্রথা তোলার কথা বলা হয়েছে। এই ভাবে বাস চালাতে দেওয়া হবে না।’

পরিবহন মন্ত্রীর বক্তব্যের সমর্থনে রাজ্যের পুরমন্ত্রী তথা কলকাতর মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘কমিশন প্রথার জন্যই বাসগুলো রেষারেষি করে। আমি বলেছি একটা এসওপি করতে, যেখানে কমিশন প্রথা থাকবে না।’

তবে এদিনের বৈঠকে কমিশন প্রথা সংক্রান্ত সরকারের নির্দেশ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বাস সংগঠনগুলি। জয়েন্ট কাউন্সিল অফ বাস সিন্ডিকেটের সাধারণ সম্পাদক তপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘কমিশন শুধু কলকাতা ও দুই ২৪ পরগনায় আছে। তা হলে অন্য জায়গায় অ্যাক্সিডেন্ট হয় কেন?’

অপরদিকে, এদিন ট্র্যাফিক শিক্ষা দেওয়ার পাশাপাশি দুর্ঘটনা এড়াতে ট্র্যাফিক আইন কঠোর ভাবে মানার কথা বলেন পরিবহণমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আইন অমান্য করলে এবার থেকে কড়া পদক্ষেপও নেওয়া হবে। অনেকগুলো প্রস্তাব এসেছে। তা নিয়ে নির্দেশিকা দেবে সরকার, সেটা না মানলে কড়া পদক্ষেপ। আয় করার জন্য আর বেপরোয়া ভাবে বাস চালানো যাবে না। এই বিষয়ের ওপর মালিককেও নজর রাখতে হবে। এই বিষয়ে সরকার কড়া পদক্ষেপ নেবে।’

তিনি বলেন, হেলমেট ছাড়া বাইক চালানো, চালকের বদলে খালাসির ওপর গাড়ি চালোনোর দায়িত্ব দেওয়া, মদ্যপান করে গাড়ি চালানোর মতো ঘটনা আটকাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

শহরে একের পর এক স্কুল পড়ুয়া বহনকারী যানের দুর্ঘটনা এড়াতে কিছু পদক্ষেপের বিষয়ে ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘সব স্কুলের সামনে রেলিং বসবে। পুলিশ গার্ডরেল দেবে।’
এর পাশাপাশি, একসঙ্গে সব স্কুলের বাচ্চাকে যাতে ছাড়া না হয়, সে দিকেও নজর দেওয়ার কথা বলেছেন পুরমন্ত্রী। এ ছাড়াও ‘সেভ ড্রাইভ সেফ লাইভ’ কর্মসূচির ওপর জোর দেওয়া থেকে সচেতনতা বৃদ্ধির ব্যাপারেও পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন পরিবহণ দফতরকে।