আদিবাসী ও পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়ের মানুষদের কল্যাণমূলক প্রকল্পের সুবিধা দিতে বদ্ধপরিকর সরকার: মমতা

কলকাতা রাজনীতি রাজ্য

নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: আদিবাসী ও পিছিয়ে পড়া শ্রেণির জন্য রাজ্য সরকারের বিভিন্ন কল্যাণমূলক প্রকল্পের সুযোগ যেন তাঁরাই পান তা নিশ্চিত করতে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরজন্য প্রকল্পের প্রচার ও জনসংযোগ বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব দেওয়ার বিষয়ে জোর দিয়েছেন। পাশাপাশি আদিবাসী ও জনজাতিদের প্রশিক্ষণেও গতি আনতে বলা হয়েছে।

সোমবার নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পৌরহিত্যে আদিবাসী উন্নয়ন পর্ষদের বৈঠক বসে। বিভিন্ন জনজাতি সম্প্রদায়ের মন্ত্রী, বিধায়কদের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দফতরের সচিব ও আদিবাসী সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন এই বৈঠকে। বৈঠকে উপস্থিত জনপ্রতিনিধিরা জানান, আদিবাসীদের উন্নয়নে রাজ্য সরকার একাধিক প্রকল্প ও পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। কিন্তু যথাযথ প্রচার ও সচেতনতার অভাবে প্রকৃত সুবিধাভোগীরা এইসব প্রকল্পের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তার প্রেক্ষিতেই এই নির্দেশ বলে জানা গেছে।

রাজ্যের চার জন জনজাতি মন্ত্রীকে আদিবাসী এলাকায় গিয়ে এই নিয়ে প্রচারে গতি আনতে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিকে বিভিন্ন ভাষাভাষির মানুষ রয়েছে এমন জেলাগুলিতে ভাষা ও সংস্কৃতি প্রসারের জন্য একটি কমিটি গঠনেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বৈঠকে। এই কমিটি ভাষা সাহিত্য, সংস্কৃতির প্রসার ও বিস্তারে কাজ করবে। পাশাপাশি ওই সব এলাকার বিধায়কদেরও সক্রিয়তা বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এছাড়াও পাহাড়ের অনুকরণে জঙ্গলমহলেও হোম স্টের প্রসারে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে রাজ্য সরকার । আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকায় পর্যটনের বিকাশের পাশাপাশি স্থানীয়দের কর্মসংস্থানের লক্ষেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। বৈঠকে অভিযোগ জানানো হয়, আদিবাসী গ্রামগুলিতে বাইরে থেকে লোকেরা এসে হোম স্টে তৈরি করছেন। কিন্তু তাতে আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষের কোনও উপকার হচ্ছে না। সে কারণে স্থানীয় যারা হোম স্টে তৈরি করতে ইচ্ছুক, তাঁদের উৎসাহ ও সরকারি অনুদান দিয়ে সাহায্য করার বিষয়ে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে নবান্নের প্রশাসনিক সূত্রে জানা গেছে।

এর পাশাপাশি পর্যটন বিকাশে বিশেষত জঙ্গলমহল ও সুন্দরবন এলাকায় হোম স্টেতে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে রাজ্য। তাই এই এলাকাগুলিকে এরই মধ্যে স্পেশ্যাল ক্যাটাগরির আওতায় আনা হয়েছে। পর্যটনের বিকাশে রাজ্যকে যে পাঁচটি জোনে ভাগ করা হয়েছে তার মধ্যে ওই স্পেশ্যাল ক্যাটাগরি ছাড়াও দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, উত্তর এবং দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা রয়েছে বিশেষ জোনের আওতায়। ওই এলাকায় হোম-স্টে গড়ে তোলা হলে, সরকারের তরফে সুযোগ সুবিধা মিলবে অনেকটাই বেশি৷ এছাড়া যোগ্যরা যাতে সবাই জাতিগত সংশাপত্র হাতে পান সোমবার নবান্নের বৈঠকে তা সুনিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

এদিনের বৈঠকে আদিবাসী সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি তথা মালদহ উত্তরের বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু ও দশরথ তিরকেকে আমন্ত্রণ জানান হয়েছিল। কিন্তু তাঁরা বৈঠক এড়িয়ে যান। এ প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘উন্নয়ন নিয়ে আলোচনার জন্য সকলের জন্য দরজা‌ সবসময় খোলা রয়েছে। এবার কেউ তাতে সামিল হবেন কিনা সেটা তাঁর ব্যক্তিগত বিষয়।’