নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতাঃ অগ্নিমূল্য বাজার দর, মাথায় হাত আম জনতার। বাজারে কাঁচা আনাজের দাম ক্রমশই ঊর্ধ্বমুখী এবং বাড়ছে অন্যান্য সামগ্রীর মূল্যও, ফের চিন্তায় আম জনতা। সাম্প্রতিক বাজারদর নিয়ন্ত্রনে শহরের একাধিক জায়গায় পরিদর্শনে নেমেছিল টাস্ক ফোর্স। চলে ইনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চ, টাস্কফোর্স এবং পুলিশের যৌথ অভিযান। বাদ যায়নি গ্রামের বাজারগুলিও। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশের পর আরও বাড়ে তৎপরতা। জোর কদমে চলে অভিযান পর্ব।
এই অভিযানের পরবর্তীতে বেশিরভাগ বাজারেই মূল্য সাধারণের হাতের নাগালে আসতে দেখা যায়। কিন্তু কয়েক মাস পেরিয়ে যেতেই আবারও দেখা যাচ্ছে সেই একই সমস্যা, খাদ্যদ্রব্যের বেলাগাম দর।
প্রসঙ্গত, সে সময়ে কাঁচা আনাজ এবং আলুর দাম বিভিন্ন দোকানে বিভিন্ন মূল্য তাতেই একাধিকবার মেজাজ হারিয়েছিলেন টাস্ক ফোর্সের অন্যতম সদস্য রবীন্দ্রনাথ কোলে। সেই সময় বেশ ধমকের সুরে কথা বলতেও শোনা যায় তাঁকে। এখন প্রশ্ন একটাই তাহলে আবারও কেন অনিয়ন্ত্রিত বাজার দর? কেন মধ্যবিত্তের পকেটে টান? এর পেছনেও কী তবে সেই একই তত্ব? মূল্যবৃদ্ধির দ্বিতীয় পথ! মূল্যবৃদ্ধির দ্বিতীয় পথটি হল আমদানির বাজার। আদতে আন্তর্জাতিক বাজার বৃদ্ধির জন্য বাড়ছে বাজারদর। আন্তর্জাতিক বাজারে বেড়েছে ভোজ্য তেলের দাম, যার প্রভাব পড়েছে দেশের বাজারে। খুচরো পণ্য মূল্য সূচকের নিরিখে মূদ্রাস্ফীতির হার পৌঁছয় প্রায় ১১ শতাংশে। ১৫ মাসে এটাই সর্বোচ্চ মূদ্রাস্ফীতির হার। অবশ্য এই কারণ ছাড়াও আরও কয়েকটি দিক স্পষ্ট করেছেন অর্থনীতিবিদরা। যার মধ্যে প্রথম কারণ অকাল বর্ষণ।
অকালে বৃষ্টির ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে চাষ জমি, নষ্ট হয়েছে ফসল। সময়ের আগেই তুলতে হয়েছে বাকি অংশটুক যার সঞ্চয়ের পরিমাণও কম। ফলত সবজির দাম আকাশ ছোঁয়া।
প্রসঙ্গত, কেবলমাত্র এই বছরই নয় বিগত বেশ কয়েক বছরে এই ঘটনা বারবার সামনে এসেছে। অকাল বর্ষার ফলে একাধিকবার নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি বাজার দর। কোথাও আবার দেখা গেছে অন্য চিত্র। অনাবৃষ্টির ফলে শুকিয়েছে জমি, ফসল ফলানো হয়েছে দুষ্কর। যার ফলস্বরূপ সেই সকল জায়গা থেকেও পরিমাণ মতো বাজারে মজুদ করা যায়নি ফসল।
এ তো গেল প্রথম কারণ, এবার দ্বিতীয় কারণ হিসেবে অর্থনীতিবিদরা যা কিছু বলেছেন তা হল আমদানির বাজার। আন্তর্জাতিক বাজারে বেড়েছে ভোজ্য তেলের দাম যার প্রভাব পড়ছে দেশে। আমদানিকৃত পণ্যের দাম বৃদ্ধি ছাড়াও আরও একাধিক পথে আন্তর্জাতিক বাজারের প্রভাব দেশের বাজারে পড়ে। এদিক থেকেও বাজার দর বাড়ার কারণ দেখিয়েছেন তারা। পেট্রোলিয়ামের মূল্যবৃদ্ধির ফলে পরিবহণ ব্যয় বৃদ্ধি পেতে পারে এমনটা আশঙ্কা করেছেন অর্থনীতিবিদরা। আন্তর্জাতিক পরিবহণের ক্ষেত্রেও কথাটি প্রযোজ্য, আবার দেশের বাজারে পণ্য পরিবহণের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। এখন প্রশ্ন একটাই তবে কি এসবের চক্করে আবারো সেই হয়রানি শুধু মধ্যবিত্তের? আর কতদিন অনিয়ন্ত্রিত বাজার দর সহ্য করতে হবে সকলকে? নাকি এবার এসব নিয়ে সরব হবে সরকার সেটাই দেখার অপেক্ষা।