নিজস্ব প্রতিনিধি, হুগলি: বুধবার জনসংযোগে বেরিয়ে ক্ষোভের মুখে পড়লেন চুঁচুড়ার বিধায়ক অসিত মজুমদার। কোদালিয়া ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের দেবীপুর ইটখোলা গ্রামে গিয়ে বাসিন্দাদের ক্ষোভের মুখে পড়েন বিধায়ক!
লোকসভা ভোটে কেন হারতে হয়েছে, সেই সব এলাকায় ঘুরে জনতার দুয়ারে গিয়ে জনসংযোগ শুরু করেন বিধায়ক। ইটখোলা গ্ৰামে গিয়ে মন্দিরে পুজো দিয়ে গ্রামের মানুষের কাছে বিধায়ককে জানতে চান তাঁদের সমস্যার কথা। তখনই গ্ৰামের সাধারণ মানুষের পাশাপাশি স্থানীয় তৃণমূল কর্মীদের একাংশ বিধায়কের কাছে তাঁদের ক্ষোভ উগরে দেন।
বাসিন্দা স্বপ্না সরদার সুজাতা দাসরা জানান, স্থানীয় পঞ্চায়েতের সদস্য, পঞ্চায়েত প্রধান কোন কাজ করে না। নতুন রাস্তার হয়নি, ড্রেন পরিষ্কার হয় না। এলাকায় নিকাশি ঠিকঠাক হয় না। বেড়েছে সাপের উপদ্রব। তাঁদের দাবি, বিধায়কও ভোটের সময় আসেন। বাকি সময় দেখা মেলে না! আজকে বিধায়ক আসবেন বলে এলাকা সাফাই করা হয়েছে।
বিধায়ক অসিত মজুমদার জানান, ‘মানুষের ক্ষোভ স্বাভাবিক। কাজ হয়নি তাই ভোট দেয়নি। তবে এই এই এলাকায় যে উন্নয়ন হয়নি, তা কেউ আগে জানায়নি! ভোটে কেন হার হয়েছে তা জানতে বেরিয়ে দেখলাম এলাকার মানুষের ক্ষোভ যথাযথ। তবে যে যে কাজ হয়নি সেগুলো করার চেষ্টা করা হবে। কেন এলাকার পঞ্চায়েত প্রধান বা সদস্য এই এলাকায় কাজ করেননি তাই দলগত ভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
কোদালিয়া ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সুকান্ত কুমার ঘোষ গ্রামবাসীদের অভিযোগের সত্যতা মেনে নিয়েছেন। তবে তাঁর দাবি, ‘অনেক বড় এলাকা একের পর এক উন্নয়ন হচ্ছে, অনেক গলির রাস্তা করা হয়েছে। অনেক রাস্তা বাকি। পাশাপাশি একশো দিনের কাজ বন্ধ। ফান্ডও কম। তাছাড়া আমি সবসময় দাঁড়িয়ে কাজ দেখতে পারি না। সুপারভাইজার আছেন তাঁরা দেখাশোনা করেন।’
তবে এলাকার মানুষ জানিয়েছেন, আগামী দিনে যদি এলাকার উন্নয়ন না হয় তাহলে ২০২৬ এর বিধানসভা নির্বাচনে তার প্রভাব পড়বে। আর এই বিষয় নিয়ে তৃণমূলকে কটাক্ষ করেছে রাজ্যের বিরোধী দল বিজেপি। হুগলি সংগঠনিক জেলা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সুরেশ সাউ বলেন, ‘বিজেপির সদস্য অভিযান দেখে বিধায়ক জনসংযোগে বেরিয়েছেন। কিন্তু তৃণমূলের বিরুদ্ধে মানুষের ক্ষোভ। আর যেখানেই বিধায়ক যাচ্ছেন সেখানেই মানুষ ক্ষোভ দেখাচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে রাস্তা তৈরি হচ্ছে না। জল নিকাশির ব্যবস্থা খারাপ। কেন্দ্র থেকে যে টাকা পাঠাচ্ছে সে টাকা তাঁরা নিজেদের পকেটে ঢুকিয়ে নিচ্ছে। তাই মানুষ তাঁদের প্রতারণা বুঝে গেছে। সেই কারণেই মানুষ বিধায়ককে ঘিরে ক্ষোভ দেখাচ্ছেন। আগামী দিনে আরও বাড়বে এই ক্ষোভ।’