নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতাঃ মায়ের মৃত্যুর পর প্রায় ২বছর তাঁর বেলঘরিয়ার বাড়িতে ফিরলেন অর্পিতা মুখোপাধ্যায়। বুধবার রাতে মায়ের মৃত্যুর পর বৃহস্পতিবার দু’দিনের প্যারোলে মুক্তি দেয় কলকাতা হাই কোর্ট। এরপর আলিপুর মহিলা সংশোধনাগার থেকে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় বেলঘরিয়ায়। নিয়োগ মামলায় ২০২২ সালের ২৩ জুলাই কেন্দ্রীয় এজেন্সি ইডির হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন রাজ্যের তৎকালীন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও তাঁর ‘ঘনিষ্ঠ’ অর্পিতা।
বারবার আদালতে জামিনের আবেদন জানিয়েও ফল হয়নি। এমনকি, মায়ের অসুস্থতার সময়েও জামিন চেয়েও মেলেনি। এবার মায়ের মৃত্যুর পর তাঁর শেষকৃত্য ও পারলৌকিক কাজের জন্য নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ধৃত অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের প্যারোলে মুক্তির আবেদন মঞ্জুর করল আদালত। মায়ের মৃত্যুর কারণে বিশেষ আদালত বৃহস্পতিবার অর্পিতাকে পাঁচ দিনের জন্য প্যারোলে মুক্তির নির্দেশ দিয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ২৩ জুলাই গ্রেফতার হয়েছিলেন রাজ্যের তৎকালীন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং তাঁর ‘ঘনিষ্ঠ’ অর্পিতা। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি তাঁদের গ্রেফতার করেছিল। সে দিন অর্পিতার টালিগঞ্জ এবং বেলঘরিয়ার ফ্ল্যাটে হানা দিয়েছিল ইডি। টালিগঞ্জের ‘ডায়মন্ড সিটি’ আবাসনে অর্পিতার ফ্ল্যাট থেকে নগদ ২১ কোটি ৯০ লক্ষ টাকা উদ্ধার করে ইডি। একই সঙ্গে উদ্ধার হয় প্রচুর বিদেশি মুদ্রা এবং সোনার গয়নাও।
এর পরে ওই বছরেরই ২৭ জুলাই বেলঘরিয়ার ‘ক্লাব টাউন হাইট্স’ আবাসনে অর্পিতার নামে থাকা দু’টি ফ্ল্যাটে অভিযান চালিয়ে সেখান থেকে মোট ২৭ কোটি ৯০ লক্ষ টাকা নগদে উদ্ধার করে ইডি। সঙ্গে প্রচুর গয়না। পার্থ এবং অর্পিতা দু’জনেই জেলে বন্দি এবং তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা এখনও আদালতে বিচারাধীন।
অর্পিতার বাবা ছিলেন কেন্দ্রীয় সরকারি আধিকারিক। মেয়ের গ্রেফতারির পর মিনতিদেবী জানিয়েছিলেন, তাঁর অকাল প্রয়াণের পর অর্পিতাকে চাকরিতে যোগদান করতে বলেছিলেন তিনি। কিন্তু মেয়ের মন ছিল অভিনয়ে। মিনতিদেবী বলেন, ‘আমি জানি ও সিনেমা করে। কয়েকটা সিনেমায় অভিনয় করেছে বলে শুনেছি। বেলঘরিয়াতেই থাকতেন অর্পিতার মা। দীর্ঘদিন বার্ধক্যজনিত সমস্যায় ভোগার পর মৃত্যু হয় তাঁর। মায়ের অন্ত্যেষ্টি ও পারলৌকিক ক্রিয়ায় যোগদানের জন্য প্যারোলে মঞ্জুর করার পর বাড়ি এসেছেন অর্পিতা। দীর্ঘ দুই বছর পর অর্পিতা মুখোপাধ্যায় পা রাখলেন নিজের বাড়িতে।