বিতর্কিত মন্তব্যের জের, হুমায়ুন কবীরকে শো-কজ

রাজনীতি রাজ্য

নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: হুমায়ুন কবীরকে শো-কজ করল তৃণমূল কংগ্রেস৷ বুধবার বিধানসভায় দলের রুদ্ধদ্বার বৈঠকের পর তাঁকে শো-কজ করা হয়৷ আজই তাঁর কাছে শো-কজের চিঠি পৌঁছে যাবে। তাঁকে আগামী তিনদিনের মধ্যে জবাব দিতে হবে। কেন প্রকাশ্যে সংবাদমাধ্যমের সামনে দলের বিরুদ্ধে মুখ খুলে দলকে তিনি অস্বস্তিতে ফেলেছেন? মূলতঃ এর জবাব চেয়েই তাঁকে চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে সূত্রের খবর।

প্রসঙ্গত, বুধবার বিধানসভা অধিবেশনের ফাঁকেই বৈঠকে বসেছিলেন বিধানসভার শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির সদস্যরা। বৈঠকে ছিলেন শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, ফিরহাদ হাকিম, অরূপ বিশ্বাস-সহ শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির অন্যান্য সদস্যরা। গতকালই দল নিয়ে বেসুরো মন্তব্য করার পর বিষয়টি যে তৃণমূল কংগ্রেস ভালোভাবে নেয়নি, তা দলীয় নেতৃত্বের কথাতেই বোঝা গিয়েছিল। প্রকাশ্যে কেউই এই নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।

তবে সূত্রের খবর, দলনেত্রীর কাছে বিষয়টি জানানো হয়। তাঁর কাছ থেকে সবুজ সংকেত পাওয়ার পরই বিধায়কের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হল। এদিন যে শো-কজের চিঠি তাঁকে ধরানো হয়েছে তাতে লেখা হয়েছে, ‘আপনাকে এই মর্মে জানানো হচ্ছে যে, আপনি বিভিন্ন মিডিয়াতে যেসব বক্তব্য রেখেছেন, তাতে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়েছে। এক্ষেত্রে আপনাকে তিনদিনের মধ্যে উপযুক্ত জবাব দিতে হবে।’

যদিও এই শো-কজ নিয়ে শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির সদস্যরা কেউই মুখ খোলেননি। তবে বিধানসভা সূত্র মারফত খবর, আগামী তিনদিনের মধ্যে সন্তোষজনক উত্তর না-দিলে পদক্ষেপ করা হতে পারে তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়কের বিরুদ্ধে।

প্রসঙ্গত, গতকালই রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম এবং তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে মন্তব্য করেছিলেন হুমায়ুন। তিনি বলেন, ‘একজন তিনটে দফতর, একজন চারটে দফতর নিয়ে বসে আছেন৷ কেউ আবার মেয়র হয়েছেন। এঁরা সবাই একেকজন শক্তিমান হয়ে গিয়েছেন। সেখানে অভিষেককে জায়গা দিলে অসুবিধা কোথায়! মমতার কাছে নম্বর বাড়ানোর কৌশল এঁটেছে একদল। দলে তোষামোদ রয়েছে। শৃঙ্খলা নেই। তাই তোষামোদ করে নম্বর বাড়াতে চাইছেন এঁরা।’

কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে হুমায়ুন বলেন, ‘কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন হুমায়ুন কবীর কে! আমি তোষামোদ করে নেতা হইনি। মুর্শিদাবাদের মানুষ প্রমাণ করে দেবে হুমায়ুন কবীর কে! কীসের এত অহংকার। কেউ হুমায়ুন কবীরকে অপমান করবে, আমি তা শোনার লোক নই। আমি কাউকে তোষামোদ করে জীবন যাপন করি না।’ তাঁর এই মন্তব্য যথেষ্ট অস্বস্তি বাড়ায় দলের। তারপর বুধবারই তাঁর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হল৷

এদিকে এই নিয়ে হুমায়ুন করীরকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, ‘আমিও শুনেছি আমাকে শো-কজ করা হয়েছে, যদিও আমি হাতে কোনও চিঠি পাইনি ।’