শো-কজের লিখিত জবাব দিয়েও নিজের সিদ্ধান্তে অনড় হুমায়ুন

রাজনীতি রাজ্য

নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতাঃ সম্প্রতি দল বিরোধী মন্তব্য করায় তৃণমূল কংগ্রেসের বিধানসভার শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটি হুমায়ন কবিরকে নোটিশ দেয় কারণ দর্শানোর। আজ শুক্রবার তার উত্তরে দলের কাছে লিখিত জবাব দিয়েছেন ভরতপুরের তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। তার জবাব খতিয়ে দেখে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। উল্লেখ্য জবাব ঠিকভাবে পাওয়া না গেলে দলের যে কোন স্তরের সদস্য বা সদস্যাদের সর্বাধিক তিনবার কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করা হবে বলে চলতি সপ্তাহে দলের জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকে স্থির হয়েছে। তারপরেও সন্তোষজনক উত্তর না পাওয়া গেলে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে।
এর আগেও প্রকাশ্যে আসে তার একের পর এক বিতর্কিত মন্তব্য। বুধবার তাকে দলের তরফ থেকে ‘শো-কজ’ করা হয়। পুলিশের তরফে দেওয়া হুমায়ুনের ‘অতিরিক্ত’ নিরাপত্তা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয় তখনই। যদিও নিরাপত্তা প্রত্যাহার নিয়ে তিনি কোনও মন্তব্য করেননি এখনো পর্যন্ত। দলের প্রতি অভিমান কথায় প্রকাশ করেছেন তিনি।

প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ১৯ মার্চ কলকাতার ক্যামাক স্ট্রিটে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সাংসদ অভিষেক ব্যানার্জির সঙ্গে একটি রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন হুমায়ুন কবির। সেই বৈঠকের পর থেকেই তাঁর জন্য পুলিশ প্রশাসনের তরফ থেকে অতিরিক্ত নিরাপত্তা বরাদ্দ করা হয়েছিল।

সূত্র মারফত জানা যায় হুমায়ুনের সঙ্গে অভিষেকের বৈঠকের সময় মুর্শিদাবাদ জেলার কয়েকজন জনপ্রতিনিধির ‘অতিরিক্ত’ নিরাপত্তা পাওয়ার প্রসঙ্গটি উঠে। এরপরই পদক্ষেপ নেওয়া হয় প্রশাসনের সর্বোচ্চ মহল থেকে। বরাদ্দ হয় একজন এএসআই সহ মোট পাঁচজন সশস্ত্র নিরাপত্তারক্ষী। এ ছাড়াও একটি এসকর্ট গাড়িও আসে তার বরাদ্দে।

এরপর ১৬ নভেম্বর প্রকাশ্যে পুলিশ প্রশাসনকে নিয়ে সমালোচনা করেন হুমায়ুন। এরপর ওইদিন থেকে তাঁর নিরাপত্তা বাহিনী থেকে একজন এএসআই এবং দু’ জন কনস্টেবলকে সরিয়ে দেওয়া হয়। তুলে নেওয়া হয়েছে তাঁর এসকর্ট গাড়িও।
এ বিষয়ে তিনি বলেন ‘আমি এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করব না। বর্তমানে আমার সঙ্গে দু’জন নিরাপত্তারক্ষী রয়েছেন। প্রশাসনের কর্তারা কেন অতিরিক্ত নিরাপত্তা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন তার জবাব তাঁরাই দিতে পারবেন।’ পুলিশের এক আধিকারিক যদিও জানিয়েছেন, ‘জেলাতে যে সমস্ত ব্যক্তি পুলিশের নিরাপত্তা পান, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে মাঝেমধ্যেই তাদের নিরাপত্তা বাহিনী পাওয়ার বিষয়টি ‘রিভিউ’ করা হয়। পরবর্তী সিদ্ধান্ত সেই তথ্যের ভিত্তিতে নেওয়া হয়।’

অন্যদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার দলের ‘শোকজ’ চিঠি পাওয়া প্রসঙ্গে হুমায়ুন কবীর বলেছিলেন, ‘সংবাদ মাধ্যমের কাছ থেকেই আমি কেবল জানতে পারছি যে আমাকে দলের তরফ থেকে ‘শোকজ’ করা হয়েছে। তবে এই খবরটি সত্যি কি না আমার জানা নেই। বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টা পর্যন্ত আমার কাছে এই মর্মে দলের কোনও চিঠি হাতে এসে পৌঁছয়নি। যদি আমি চিঠি পাই তাহলে দলকে তার জবাব দেব।’