নিউজ পোল ব্যুরো: যৌনকর্মীদের সামাজিক সুরক্ষা দিতে যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত লাগু। সমস্ত বিতর্কের জট কাটিয়ে অবশেষে মাতৃকালীন ছুটি ঘোষণা যৌন কর্মীদের জন্য! এতদিন বিল পাসে বহু বিতর্ক থাকলেও শেষমেষ হল বাস্তবায়ন। বিশ্বে এই প্রথম যৌনকর্মীদের জন্য চালু হল ভাতা। কর্মক্ষেত্রে ছুটির অভাবে যাতে হেনস্থার শিকার না হতে হয় তাতেই নতুন আইনে সিলমোহর পড়ল।
এবার থেকে মাতৃত্বকালীন ছুটি স্বাস্থ্য বিমা অসুস্থতাজনিত ছুটি পাবেন যৌনকর্মীরা। অর্থাৎ বলাই যায় কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা এবং আইনের সুরক্ষার অভাব বোধ কমাতেই তাঁদের জন্য বিশেষ সুবিধা দিতে এই আইন পাশ।
২০২২ সালে বেলজিয়ামে যৌন পেশাকে বৈধতা দেওয়া হয়। এবার ২০২৪ এর শেষে আবারও সুখবর সমাজের অন্ধকারে থাকা বিশ্বের আদিমতম জীবিকার কর্মীদের স্বার্থে। দেহ ব্যবসা এবং মহিলা পাচারের মতো জ্বলন্ত সমস্যা সারা বিশ্বের কাছে থাকলেও এই আইনি বৈধতা নিয়ে ফের আরেকবার সরব হয়েছে বিশ্ব। মাতৃত্বকালীন অবস্থায় অসহায়তাকে সঙ্গী করে আর কাজ করতে হবে না তাঁদেরকে, চিন্তা করতে হবে না সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে।
বেলজিয়ামের সদ্য পাস হওয়া এই আইনের জেরে যৌনকর্মীদের জন্য কর্মসংস্থানের শংসাপত্র দেওয়া হবে। এবার থেকে তাঁদের দেওয়া হবে পেনশন, মাতৃত্বকালীন ছুটি, স্বাস্থ্যবিমা, অসুস্থতাজনিত ছুটি এমনই উল্লেখ রয়েছে বিলটিতে। ‘প্যানিক বাটন’ এর মতন সুবিধাও থাকছে তাঁদের জন্য। যৌনপল্লীতে আসা যে কারোর ব্যবহারে অস্বস্তি বোধ করলেই থাকছে অভিযোগ জানানোর ব্যবস্থা। বোতামে চাপ দিয়ে সাহায্য চাইতে পারবেন যৌনকর্মীরা।
প্রাচীনতম এই নৃশংস পেশাকে সমাজ বরাবরই ভিন্ন চোখে দেখে থাকে। যার ফলস্বরূপ আগেও একাধিকবার বিভিন্ন দেশে বিল পাশের ক্ষেত্রেও বাধা হয়ে দাঁড়ায় সমাজেরই একাংশ। এ নিয়ে একাধিকবার সরব হয় বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, কিন্তু লাভের লাভ হয়নি কোনবারেই। যার ফলে বিভিন্ন সময়ে কঠোর প্রতিকূল অবস্থা পেরতে হয় এই পেশার কর্মীদের। যার সবথেকে নিদারুণ উদাহরণ হয়ে দাঁড়ায় করোনার সময়। অতিমারি করোনার সময়ে সবচেয়ে বেশি সংশয়ের মধ্যে পড়তে হয়েছিল যৌনকর্মীদের। এ সময়েও বৃহত্তর আন্দোলনে নামতে দেখা যায় তাঁদেরকে। তাই স্বাভাবিকভাবেই সমস্ত জল্পনা কাটিয়ে আইনি স্বীকৃতি লাভের পর খুশি যৌনকর্মীরা।
এখন প্রশ্ন একটাই সমাজে এতকাল ধরে যারা রাতের অন্ধকারের ন্যায় সমাজের কাছে লুকিয়ে রাখতো নিজেদের, শুধুমাত্র আইনি স্বীকৃতির জোরেই কী এবার মাথা উঁচিয়ে দিনের আলোয় হাঁটবেন তাঁরা? নতুন বিলের শক্তিতেই কী কমবে তাঁদের অসহায়তা? বাড়বে মর্যাদা? হাজারো প্রশ্নের উত্তর এখন বোধহয় একটাই, তা হল সময়। এই বিল থেকেই শিক্ষা নেবে পৃথিবীর অন্যান্য দেশগুলি? নাকি এই বিল কেবল একটিমাত্র দেশের আইনের খাতাতেই বন্দি হয়ে থাকবে তা দেখা এখন শুধুই সময়ের অপেক্ষা।