মৃণালকান্তি সরকার, কলকাতা: বাংলাদেশে আটকে পড়া ভারতীয়দের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অবিলম্বে এ ব্যাপারে কেন্দ্রীয় সরকারের হস্তক্ষেপ দাবি করেন তিনি। বাংলাদেশের পরিস্থিতি ও এ ব্যাপারে কেন্দ্রীয় সরকারের অবস্থান নিয়ে সংসদে প্রধানমন্ত্রী বা বিদেশ মন্ত্রীর সিদ্ধান্ত জানানোর প্রস্তাব পাঠান হচ্ছে বলে এদিন জানান বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। অপরদিকে, মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন, গত ১০ দিন ধরে বাংলাদেশে উদ্বেগজনক বহু ঘটনা ঘটলেও সে ব্যাপারে কেন্দ্রীয় সরকার নীরব!
বিধানসভায় আজ সোমবার বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে ফের বিবৃতি দেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে তিনি জানান, ভুল করে জলসীমা অতিক্রম করায় এ রাজ্যের ৭৯ জন মৎস্যজীবীকে বাংলাদেশের একটি থানায় আটক করে রাখা হয়েছে। রাজ্যের তরফ থেকে তাঁদের আইনজীবী দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারকেও বিষয়টি জানানো হয়েছে। তা স্বত্বেও ওই মৎস্যজীবীরা মুক্তি পাননি! আগে কখনই এরকম ঘটনা ঘটেনি বলে মুখ্যমন্ত্রী জানান। অথচ বাংলাদেশী ট্রলার ডুবে যাওয়ার পরে উদ্ধার হওয়া মৎস্যজীবীদের নিরাপদে এ দেশ থেকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। এছাড়াও এ রাজ্যের বহু মানুষের পরিবার-পরিজন বাংলাদেশে রয়েছে। তাঁদের জন্য মুখ্যমন্ত্রী উদ্বেগ প্রকাশ করেন। বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে জাতিসংঘের দ্বারস্থ হওয়ারও পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। সোমবার দুপুরে বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশনে যোগ দিয়ে তিনি বাংলাদেশে শান্তিসেনা (পিস কিপিং ফোর্স) পাঠানোর জন্য কেন্দ্রকে রাষ্ট্রপুঞ্জের সঙ্গে কথা বলার আর্জি জানান। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের প্রস্তাব কেন্দ্র রাষ্ট্রপুঞ্জের কাছে বাংলাদেশে শান্তিসেনা পাঠানোর আর্জি জানাক।’
এদিকে বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে প্রধান বিরোধী দল বিজেপির ভূমিকার তীব্র সমালোচনা করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকারের ঘোষিত নীতি হল বিদেশ সংক্রান্ত বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের অবস্থানের সঙ্গে থাকা। কিন্তু বিরোধী দলের সদস্যরা মিটিং মিছিল করছেন, প্ররোচনা মূলক ভাষণ দিচ্ছেন। বলছেন বাংলাদেশে খাদ্য সহ পণ্য রফতানি করতে দেবেন না। এ ব্যাপারে রাজ্য সরকারের কোনও এক্তিয়ার নেই। কেন্দ্রীয় সরকার এব্যাপারে কোন গাইডলাইন দিলে তবেই এব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়া যাবে বলে তিনি জানান।