নিজস্ব প্রতিনিধি, চুঁচুড়া: এ এক তাজ্জব ঘটনা। সবার বাড়ি যখন আলোয় আলোকিত তখন তাঁর বাড়িতেই নেই কোনও আলো। পুরো শহরকে আলোকিত করছেন তিনি, কিন্তু নিজের বাড়িতেই চলছে না আলো! এমনিই ঘটনা ঘটলো যার বাড়িতে তাঁর নাম দেবাশিস চক্রবর্তী।
পুরসভার বিদ্যুৎ বিভাগে কাজ করেন তিনি। শহর আলো করে রাখেন। কিন্তু তাঁর বাড়িতেই অন্ধকার! সূত্রের খবর, তিনমাস বেতন পাননি দেবাশিস, তাই বিদ্যুতের বিলও মেটাতে পারেননি তিনি। লাইন কেটে দিয়ে যায় বিদ্যুৎ দফতর।
প্রসঙ্গত, দীর্ঘ তিন মাস বেতন পাননি হুগলি চুঁচুড়া পুরসভার অস্থায়ী পুর কর্মচারীরা। তবু সহকর্মীর দুর্দিনে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেন তাঁরা। দেবাশিসের বাড়ির বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে দেওয়ার খবর পাওয়া মাত্রই বাড়িতে পৌঁছে যান সহকর্মীরা। গামছা পেতে চাঁদা তোলা শুরু করেন। দশ কুড়ি টাকা করে অনেকেই দেন। যা ওঠে তা নিয়ে বিদ্যুৎ দফতরে গিয়ে বিল মেটান দেবাশিস।
পুরসভার কর্মীদের নিজেদেরই নুন আনতে পান্তা ফুরায় অবস্থা। দীর্ঘ তিন মাস বেতন হয়নি হুগলি চুঁচুড়া পুরসভার অস্থায়ী পুর কর্মচারীদের। তবু সহকর্মীর পাশে দাঁড়িয়ে দুর্দিনে তাঁরাই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেন।
পুর কর্মচারী সংগঠনের নেতা অসীম অধিকারীর কথা অনুযায়ী, এক সহকর্মী যে কিনা বিদ্যুৎ দফতরেই কাজ করেন, বিল মেটাতে পারেননি বলে তাঁর লাইন কেটে দিয়ে যায়। আমরা সাহায্য করেছি। কিন্তু পুরসভা তিন মাস বেতন দেয়নি। কি করে চলবে সবারই এক অবস্থা।
দেবাশিস চক্রবর্তী সহকর্মীদের উদ্দেশ্যে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, ‘পুরসভার বেতন পাইনি। সংসার চালাতে একটা ভাড়ার টোটো চালাই। পাঁচ হাজার ছশো টাকার বিদ্যুতের বিল এসেছে। কিন্তু দিতে পারিনি। তাই লাইন কেটে দিয়েছে। ছেলের পরীক্ষা চলছে আর তার মধ্যে ঘর অন্ধকার! সহকর্মীদের বললাম, ওরা সবাই সাহায্য করেছেন।’