নিউজ পোল ব্যুরো, নয়াদিল্লি: এবার থেকে ব্যাঙ্কিং ক্ষেত্রে বড়সড় বদল আনতে চলেছে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদীর সরকার। এখন থেকে যেকোন গ্রাহক তাঁর অ্যাকাউন্টে একজন নয়, চারজন ব্যক্তিকে নমিনি হিসেবে রাখতে পারবেন। সাম্প্রতিক মহামারি করোনা থেকে শিক্ষা নিয়েই এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার বলে সংসদের শীপকালীন অধিবেশনে জানান কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামণ।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবারই লোকসভায় পাশ হয় ব্যাঙ্কিং আইন (সংশোধনী) বিল। এই বিলে ব্যাঙ্কিং সংক্রান্ত ৫টি আইনে মোট ১৯টি সংশোধনের কথা বলা হয়েছে। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামণ জানান, গ্রাহকদের আরও সহজ ব্যাঙ্কিং পরিষেবা দিতেই এই সংশোধনী বিল আনা হয়েছে।
ব্যাঙ্ক, কো-অপারেটিভ সংস্থা, যেগুলি ব্যাঙ্কিং পরিষেবা দেয়, সেক্ষেত্রে গ্রাহকদের আরও ভাল ও উন্নত পরিষেবা দেওয়ার জন্যই সরকারের তরফে এই বিল আনা হয়েছে। পাশাপাশি বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা ও বেসরকারি ব্যাঙ্কে আরও ভাল পরিষেবা দেওয়ার বিষয়েও বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
এই প্রসঙ্গে লোকসভায় কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামণ বলেন, ‘এই প্রস্তাবিত সংশোধনী ভারতীয় ব্যাঙ্কিং সেক্টরকে আরও মজবুত করবে। বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা ও নমিনেশনেও সুবিধা হবে।’
অর্থমন্ত্রী আরও জানান, এবার থেকে একজনের বদলে একাধিক নমিনির নাম থাকার অন্যতম সুবিধা হবে, অ্যাকাউন্ট হোল্ডারের মৃত্যুর পর তা ‘আনক্লেইমড ক্যাটেগরি’তে চলে যাবে না। নমিনিরা অ্যাকাউন্টের অর্থে অংশীদারিত্ব পাবেন। করোনাকালে গ্রাহকদের মৃত্যুর পর আনক্লেইমড অ্যাকাউন্টের সংখ্যাবৃদ্ধির পরেই সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যাতে নমিনিরা সহজেই অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তুলতে পারেন। তবে লকারের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট সংখ্যক নমিনিই থাকতে পারবে।
পাশাপাশি এই বিল শিক্ষা ও সেভিং অ্যাকাউন্টের অধীনে আনক্লেইমড বা দাবি না করা শেয়ার, বন্ড, লভ্যাংশ, সুদ ট্রান্সফারের পদ্ধতিকেও সহজতর করবে। বিলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারগুলির মধ্যে রয়েছে ব্যাঙ্কের কর্তাদের জন্য ‘পর্যাপ্ত সুদের’ পুনর্নির্ধারণ। বিলে এই সীমা ৫ লক্ষ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২ কোটি টাকা পর্যন্ত করার বিধান দেওয়া হয়েছে। যা প্রায় ছয় দশক ধরে অপরিবর্তিতই ছিল। বিল পাশ হওয়ার পর ১৫ দিনের মধ্যে ব্যাঙ্কগুলিকে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কাছে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে।
অপরদিকে, কোনও অ্যাকাউন্টে ৭ বছর ধরে কোন লেনদেন না হলে, সেই অ্যাকাউন্ট শিক্ষা ও সুরক্ষা ফান্ডে ট্রান্সফার করে দেওয়া হত। এই বিল পাশ হলে, গ্রাহকরা সেই অর্থ ফেরতের দাবি জানাতে পারবে বলেও জানান সীতারামণ।