মমতা মন্ত্রিসভায় রদবদল আসন্ন?

breakingnews কলকাতা রাজনীতি রাজ্য

বাংলার রাজনীতিক মহলে এখন জোর চর্চা চলছে মমতার মন্ত্রিসভায় রদবদল নিয়ে। গুঞ্জন শুরু হয়েছে যে ২৬ এর নির্বাচনের আগেই মন্ত্রিসভায় বড়সড় পরিবর্তন হতে পারে। তবে প্রশ্ন উঠছে মমতা পন্থী নাকি অভিষেক ঘনিষ্ঠদের নিয়ে আসা হবে ক্যাবিনেটে?

সূত্রের খবর ডিসেম্বর মাসের মাঝামাঝি না হলে একেবারে জানুয়ারি মাসের শেষের দিকে মন্ত্রিসভায় রদবদল হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। তবে প্রশ্ন উঠছে মন্ত্রিসভায় কি জায়গা পাবেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ঘনিষ্ঠ নারায়ণ গোস্বামী? নাকি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের মত সাজাবেন নিজের মন্ত্রিসভার ঘরানা? প্রবীণ নবীনের প্রতিযোগিতায়, কে করবে বাজিমাত? সেটাই এখন লাখ টাকার প্রশ্ন।

নবান্নে কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে যে মন্ত্রিসভায় গুরুত্ব বাড়বে প্রবীণ ও অভিজ্ঞ পোড়খাওয়া রাজনীতিকদের। যারা মধ্যে বড় একটা তালিকা না হলেও ২৬ এর ফাইনাল ম্যাচের আগে প্লেয়ার পরিবর্তন করতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কাউকে বসাতে পারেন রিজার্ভ বেঞ্চে আবার কারোর জন্য জায়গা হতে পারে মমতা ইলেভেনে। এ আবার কারণ ডাউন চেঞ্জ ও করতে পারেন। অর্থাৎ এক দফতর থেকে অন্য দফতরে পাঠাতে পারেন তৃণমূল সুপ্রিমো ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সাম্প্রতিক কালে বিভিন্ন সময়ে প্রশাসনিক বৈঠকে বেশ কয়েকটি দফতরের কাজে অসন্তুষ্ট বোধ করেছেন। কাউকে প্রকাশ্য ভর্ৎসনা করেছেন। আবার কাউকে কাজে গতি আনতে পরামর্শ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে মনে করা হচ্ছে খুব একটা উল্টোপাল্টা হচ্ছে না মন্ত্রিসভায়। শুধু কিছু মন্ত্রীকে এক দফতর থেকে অন্য দফতরে পাঠাতে হতে পারে। বিশেষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বেশ কয়েকটি দফতরের কাজে না-খুশ। তার মধ্যে সর্বপ্রথম রয়েছে পূর্ত দফতর। তার পরে রয়েছে পরিবহন দফতর। এছাড়া খাদ্য দফতর নিয়ও খুব একটা খুশি নন মুখ্যমন্ত্রী। ফলে এই তিনটে দফতরে রদবদলের সম্ভাবনা সবচেয়ে প্রবল এবং নিশ্চিত বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

তাঁদের মতে এই দফতর গুলিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিশেষ নজর রয়েছে। এছাড়া শিক্ষা দফতর নিয়েও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে খুব একটা খুশি। সেটা কিন্তু নয়। তবে কে হবে ইন আর কে হবে আউট। তার একটা আভাস এরই মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে বলে মনে করছে রাজনীতিক মহল।

পূর্ত দফতর পুলক রায়ের হাত থেকে নিয়ে হাওড়া জেলা বর্ষীয়ান নেতা ও মন্ত্রী অরূপ রায়কে দেওয়ার একটা সুযোগ তৈরি হচ্ছে বলে জানা যাচ্ছে। তার পরে খাদ্য দফতরের মন্ত্রী রথীন ঘোষের কাজে অসন্তুষ্ট মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই দফতরে আরও একজন অভিজ্ঞ পোড়খাওয়া রাজনীতিক ও বর্তমানে শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটককে জায়গা করে দেওয়ার একটা সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে।

একই ভাবে পরিবহন দফতরের কাজে না-খুশ রয়েছেন নেত্রী বলে খবর। সেই দফতরে বড় একটা চমক থাকতে পারে বলে জানা যাচ্ছে। তবে সে কে হবেন এখনই খুব একটা পরিষ্কার নয়। তবে মনে করা হচ্ছে কোনও শ্রমিক নেতাকে পরিবহন দফতরে নিয়ে আসা হতে পারে। কারণ রাজ্য পরিবহনের অবস্থা খুব একটা ভালো নেই। তাই তার হাল ফেরানোর জন্য অভিজ্ঞ তথা বর্ষীয়ান নেতাকে জায়গা করে দিতে পারেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

তবে এখানেই শেষ নয়, কিছু গুরুত্বপূর্ণ দফতরে ও রদবদলের সম্ভাবনা থাকছে। তথ্য প্রযুক্তি ও ইলেকট্রনিক্স দফতর যার মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়।পর্যটন দফতর, কৃষি বিপণন দফতর সহ আরও বেশ কয়েকটি দফতর রদবদলের তালিকায় রয়েছে বলে সূত্রের খবর।

প্রসঙ্গত বর্তমান রাজ্য সরকারের মন্ত্রিসভায় মোট ৩৮ জন মন্ত্রী রয়েছেন। যার মধ্যে ৭ জন রাষ্ট্রমন্ত্রী স্বাধীন ভারপ্রাপ্ত এবং ৮ জন রাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ফলে মন্ত্রিসভায় রদবদল শুধুমাত্র সময়ের অপেক্ষা বলে মনে করছেন প্রশাসনিক বিশেষজ্ঞরা।

তাঁদের মতে তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরামর্শ ও ধারণাও গুরুত্ব সহকারে মন্ত্রিসভার রদবদলে হতে পারে। প্রবীণ নবীনের সামঞ্জস্য রেখেই মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মন্ত্রিসভায় রদবদলের সিদ্ধান্ত নিতে পারেন বলে জানা যাচ্ছে। তবে বেশ কয়েক জন অভিষেক ঘনিষ্ঠ মন্ত্রিসভায় আসতে পারেন বলে সম্ভাবনা আরও প্রবল হচ্ছে। ফলে একদিকে প্রবীণরা নিজেদের গৌরব লাভ করবেন। আবার নবীনদের কাজ করার সুযোগ তৈরি করে দিতে পারেন দলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।