নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: ডিভিসি, রেল-সহ বিভিন্ন কেন্দ্রীয় সংস্থার অসহযোগিতার কারণে রাজ্যের প্রায় ১০ লক্ষ পরিবার বা ৫০ লক্ষ মানুষ জল জীবন মিশন প্রকল্পের বাড়ি বাড়ি পানীয় জলের পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অবিলম্বে ওই সব সংস্থার সঙ্গে বৈঠক করে সমস্যার সামধান করতে তিনি মুখ্যসচিব মনোজ পন্থকে নির্দেশ দেন। তার পরেই রেল, ডিভিসি, ন্যাশনাল হাইওয়ে অথরিটি অফ ইন্ডিয়া, আইও সি এল-সহ কয়েকটি কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে এই দিনের বৈঠকে বসল নবান্ন।
শুক্রবার সকাল ১১ টা থেকে মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ নবান্নে ওই সব কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলোকে নিয়ে বৈঠক করেন। নবান্ন সূত্রে খবর, শুক্রবার বৈঠকে মুখ্যসচিব বিভিন্ন কেন্দ্রীয় সংস্থার কাছে অনুরোধ করেছেন দ্রুত সমস্যার সমাধান করার জন্য। কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলির তরফেও দ্রুত সমস্যার সমাধানের আশ্বাস মিলেছে বলে প্রশাসনিক সূত্রে জানা গেছে।
প্রসঙ্গত গত সোমবার বিধানসভা থেকে সংশ্লিষ্ট দফতর ও জেলাশাসকদের সঙ্গে জল প্রকল্পের অগ্রগতি নিয়ে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে তিনি বিস্তারিত পরিসংখ্যান তুলে ধরে ওই কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ তোলেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ভোটের প্রচারে ঘরে ঘরে জল পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে, অথচ কেন্দ্রের বিভিন্ন দফতরের জন্য রাজ্যের প্রায় ৫০ লক্ষ মানুষ পানীয় জল থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এরমধ্যে রেলওয়ের জন্য ১ লক্ষ ৩৪ হাজার পরিবার জল পাচ্ছে না। এনএইচ এর জন্য ১ লক্ষ ১৮ হাজার পরিবার জল পাচ্ছে না।
এ প্রসঙ্গে ডিভিসিকে এক হাত নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ডিভিসি শুধু বন্যার জল ছাড়তে জানে, খাবার জল দেয় না। ওদের জন্য প্রায় ৪ লক্ষ পরিবার পানীয় জল পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এদিকে জল চুরি রুখতে কঠোর পদক্ষেপ নিতে মুখ্যসচিবকে নির্দেশ দেন। যে সব ঠিকাদার সংস্থা ঠিকমত কাজ করছে না তাঁদের কালো তালিকাভুক্ত করারও তিনি নির্দেশ দিয়েছেন। একই সঙ্গে কাজে গাফিলতির অভিযোগে একাধিক ঠিকাদার, একাধিক ইঞ্জিনিয়রের বিরুদ্ধে আইনি পদেক্ষপ নেওয়ার কথাও জানান রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান। এখন থেকে প্রতি সপ্তাহে সোমবার জল প্রকল্পের অগ্রগতি খতিয়ে দেখবেন বলে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন। আগামী সোমবার জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের এই প্রকল্প নিয়ে ফের বৈঠকে বসবেন তিনি। গতবারের বৈঠকে কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলির অসহযোগিতার বিষয়টি উঠে এসেছিল। সেটা কতটা সমাধানের পথে এগোলো শুক্রবারের বৈঠকের পর সোমবার বিধানসভার বৈঠকে রিপোর্ট পেশ করা হবে বলে জানা গেছে।