নিউজ পোল ব্যুরো, কেশপুর: কেশপুর : অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক কার্যালয়ে কর্তব্যরত শিক্ষা কর্মীর অশ্লীল ছবি তোলার অভিযোগ প্রাইমারি শিক্ষকের বিরুদ্ধে! ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার কেশপুর ব্লকের অন্তর্গত কেশপুর এক চক্র অর্থাৎ নেড়াদেউল অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক কার্যালয়ে। গত ৫ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার দুপুর ২ টো নাগাদ বই বিতরণ হচ্ছিল অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকের কার্যালয়ের সামনে কোয়াই বালিকা বিদ্যালয়ে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন অবর বিদ্যালয়ের চুক্তিভিত্তিক এডুকেশনাল সুপারভাইজার। তাঁর অভিযোগ, তাঁর অজান্তেই কৌশিক মণ্ডল তাঁর বিভিন্ন অশ্লীল ছবি তোলেন। বারবার বারণ করলেও সে কথা শোনেননি। এমনকি তাঁকে ছবি তুলতে বাধা দিতে গেলে, অভিযুক্ত ওই মহিলা শিক্ষাকর্মীর গায়ে হাত দেন বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি। পরবর্তীতে সেখান থেকে ওই মহিলা শিক্ষা কর্মী দৌড়ে চলে যান এসআই অফিসে। এসআই অফিসে থাকা শিক্ষকদের এবং এসআই ম্যাডামকেও বিষয়টি জানান তিনি। পরবর্তীতে বাড়িতে জানান এবং আইনের দ্বারস্থ হয়ে কেশপুর থানায় একটি জেনারেল ডায়রি করেন।
আইনের দ্বারস্থ হবার পর, বাড়ি ফেরার পথে ওই অভিযুক্ত শিক্ষক সহ বেশ কয়েকজন কেশপুর বাসস্ট্যান্ডে তাঁকে বিষয়টি মিটিয়ে নেওয়ার কথা বলে। তাঁদের কথায় রাজি না হাওয়ায় অভিযুক্ত শিক্ষকগণ দেখে নেওয়ার হুমকি দেয় বলে অভিযোগ করেছেন ওই মহিলা শিক্ষাকর্মী। মহিলা শিক্ষাকর্মী আরও বলেন যে, তিনি ভয়-ভীতিতে রয়েছেন, তাঁর প্রাণ সংশয়ের আশঙ্কা রয়েছে বলেও জানান তিনি। ওই মহিলা শিক্ষা কর্মী আরও বলেন, তাঁর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ অর্থাৎ এসআই ম্যাডামকে বিষয়টি জানালেও তিনি কোন পদক্ষেপ নেননি উদাসীনই থাকেন। অবশেষে অভিযুক্তদের নামে কেশপুর থানায় এফআইআর দায়ের করেন।
তবে যার বিরুদ্ধে অভিযোগ সেই কৌশিক মণ্ডল জানিয়েছেন, ‘এইসব সাজানো নাটক! উনি নিজেই ঠিক মতো প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ইন্সপেক্সনের কাজ করেন না। ওনার বিরুদ্ধে অনৈতিক কাজের অভিযোগ রয়েছে। এর কারণে তাঁকেই(অভিযোগকারিনী মহিল) এর আগে শো-কজ করা হয়েছে। সেই সময় উনি আমাদের সাহায্য চেয়েছিলেন। আমি বা আমাদের সংগঠন তাঁর পাশে না থাকায় উনি আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করছেন।’
ঘটনায় অভিযোগ ওঠা আরও এক শিক্ষক চন্দন চক্রবর্তী বলেন, ‘উনি আমার নামেও মিথ্যে দাবি করেছেন। যে আমি ওনাকে কেশপুর বাসস্ট্যান্ডে নাকি বিষয়টি মিটমাট করার জন্য বলেছি। এইসব কথা সম্পূর্ণ সাজানো এবং মিথ্যে। ওনার বিরুদ্ধে অনৈতিক কাজকর্মের অভিযোগ রয়েছে। উনি আমাদের সংগঠনের সাহায্য চেয়েছিলেন, তখন আমাদের সংগঠন জানিয়েছে, কোন ধরনের অনৈতিক কাজে জড়িত ব্যক্তির পাশে থাকবে না। তাই উনি মিথ্যে নাটক করছেন।’
তবে এইসব অনৈতিক কাজ কর্মের কথা একেবারেই মানতে রাজি নন ওই মহিলা শিক্ষা কর্মী। তিনি জানিয়েছেন, ‘যদি এই ধরনের কোন অনৈতিক কাজ থেকেই থাকতো, তাহলে এতদিন কেন কেউ বলেনি। যখনই আমি থানায় অভিযোগ করেছি তারপর কেন এসব কথা হচ্ছে। আসলে উনারা আইনের হাত থেকে বাঁচতে, এইসব বাহানার আশ্রয় নিচ্ছেন। আমি পুলিশ প্রশাসনকে অনুরোধ করবো দ্রুত অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার।’ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে এরই মধ্যে মামলা রুজু করেছে কেশপুর থানার পুলিশ।