নিজস্ব প্রতিনিধি,কলকাতাঃ- সংসদে পেশ হয়ে গেল এক দেশ এক নির্বাচন বিল| দীর্ঘদিন আলোচনা চলছিল নির্বাচন কে কেন্দ্র করে যে বিপুল টাকা খরচ হয় তাকে বন্ধ করার জন্য়ই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার| মঙ্গলবার লোকসভায় পেশ হল এক দেশ, এক নির্বাচন বিল। বৃহস্পতিবারই এক দেশ, এক নির্বাচনের প্রস্তাবে সায় দিয়েছে মোদি মন্ত্রীসভা। সোমবার বিলটি লোকসভায় পেশ করার কথা থাকলেও তা পেশ হল মঙ্গলবার| পরে আলোচনার জন্য বিলটি পাঠানো হবে জেপিসিতে (জয়েন্ট পার্লামেন্টারি কমিটি)। দীর্ঘ আলোচনা ও ঐক্যমত তৈরীর জন্য বিলটিকে জেপিসিতে পাঠাবে কেন্দ্রীয় সরকার। সংসদের দুই কক্ষে বিলটি পাশ হওয়ার পর সেটা পাঠানো হবে রাষ্ট্রপতির সম্মতির জন্য। রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষর মিললেই বিলটি পরিণত হবে আইনে। দীর্ঘদিন ধরেই এক দেশ, এক নির্বাচনের পক্ষে সওয়াল করে আসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি স্বয়ং। মোদি সরকারের যুক্তি, এক দেশ, এক নির্বাচন হলে লাগাম টানা যাবে নির্বাচনের বিপুল ব্যয়ে। একদিকে যেমন সরকারের খরচ কমবে, তেমনি অন্য দিকে ঝামেলা পোহাতে হবে না সরকারি কর্মীদের। নির্বাচন ঘোষণা হলে লাগু হয় আদর্শ আচরণবিধি। তার জেরে ব্যাহত হয় সরকারি উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ। খাটুনি কমবে ভোটকর্মী ও নিরাপত্তারক্ষীদের। বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, একই সঙ্গে লোকসভা ও বিধানসভার নির্বাচন হলে, বাড়তে পারে ভোট দানের হারও। বারবার ভোটপ্রচারের ঝক্কি না থাকায় রাজনৈতিক দলের নেতারা আরও বেশি করে মনোনিবেশ করতে পারবেন মানুষের কাজে। খসড়া বিলের প্রস্তাব অনুযায়ী, লোকসভা নির্বাচনের প্রথম অধিবেশনে রাষ্ট্রপতি এক দেশ, এক নির্বাচনের তারিখ নির্দিষ্ট করে বিজ্ঞপ্তি জারি করবে। এই হিসেবে ২০২৯ সালে লোকসভা নির্বাচনের পর নয়া সরকার গঠিত হলে, তার পরেই শুরু হবে প্রসেস। এর পরবর্তী পাঁচ বছর ধরে চলবে একই সঙ্গে লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি। সেক্ষেত্রে ২০২৯ সালের পর যে যে রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন হবে, ২০৩৪ এর লোকসভা নির্বাচনের সময় সেই সরকার ভেঙে দেওয়া হবে। ওই নির্বাচন হবে লোকসভা নির্বাচনের সঙ্গেই। যদি কোনও বিধানসভা বা লোকসভা মেয়াদ শেষের আগেই ভেঙে যায়, তাহলে অন্তর্বর্তীকালীন নির্বাচনে গঠিত সরকারের মেয়াদ থাকবে অবশিষ্ট সময়ের জন্যই। এখন দেখার সোমবার সংসদে এই বিল পেশ হলে কি পরিস্থিতি দাঁড়ায়। তবে নির্বাচন কমিশনের এতে কোনো অসুবিধা হবে না নির্বাচন পরিচালনা করতে,কারণ,এর আগেও অনেক জায়গাতেই একইসঙ্গে লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচন সম্পন্ন করা হয়েছে 2019 ও 2024 সালে| সেক্ষেত্রে কমিশনের তরফে একজন অতিরিক্ত ভোটকর্মী লাগে প্রতি বুথের জন্য আর লাগে একটি অতিরিক্ত ইভিএম ও ভিভিপ্যাট| ফলে নির্বাচন পরিচালনা করার জন্য নির্বাচন কমিশনকে একেবারেই যে বেশিমাত্রায় সবকিছুই লাগবে তা নয়| তবে কমিশন সূত্রে খবর,কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে আনা এই বিল আইনে পরিণত হওয়ার পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে আদপে কিভাবে নির্বাচনকে পরিচালানা করবে কমিশন| তবে আপাতদৃষ্টিতে বলা যায় যে,একসঙ্গে নির্বাচন হলে সাধারণ মানুষের যেমন সুবিধা হবে পাশাপাশি কমিশনের একদিকে যেমন খাটুনি কমে যাবে অন্যদিকে একই কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে দুটো নির্বাচন কে পরিচালনা করা যাবে| এখন দেখার বিষয় যে কতদিনে এই বিল আইনে পরিণত হয়|