নিজস্ব প্রতিনিধি, হুগলি: সমাজ মাধ্যমে সম্মানহানীকর পোস্ট, লাইভে মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ! আত্মসম্মান বাঁচাতে গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন, অগ্নিদগ্ধ দম্পতি!
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে,পাণ্ডুয়ার খিরকুন্ডি নামাজ গ্রাম পঞ্চায়েতের কলিষন্ডা গ্রামের বাসিন্দা আসিফ হোসেন মোল্লার সঙ্গে একটি হার্বাল প্রডাক্টের নেটওয়ার্ক ব্যবসা করতেন অলোক হাজরা। অলোকের বাড়ি খিরকুন্ডিতে।
জানা গেছে, হার্বাল নেটওয়ার্ক ব্যবসা দীর্ঘদিন একসঙ্গে করলেও সম্প্রতি তাঁদের সম্পর্কে ভাঁটা পরে। ব্যবসায়ীক কারনে অলোকের কাছে টাকা পাওনা হয় আসিফের। সেই টাকা না পেয়ে আসিফ হোসেন মোল্লা অলোকের বিরুদ্ধে ফেসবুক লাইভ করে সম্মানহানি করে বলে অভিযোগ। চোর চিটিংবাজ বলে সামাজিক মাধ্যমে প্রচার হওয়ায় সামাজিক সম্মান নষ্ট হতে থাকে অলোকের। পোস্ট ডিলিট করতে বললেও করা হয়নি।
আজ বুধবার সন্ধ্যায় আসিফের বাড়ির সামনে অলোক ও তাঁর স্ত্রী মৌসুমি কয়েকজন লোককে নিয়ে যায়। সেই সময় আসিফ তাঁর মোবাইলের দোকানে ছিলেন। সেখান থেকেও ফেসবুক লাইভ করতে থাকেন। পরে আসিফ বাড়িতে গেলে এই নিয়ে তাঁদের মধ্যে বচসা শুরু হয়। বচসা চলতে চলতে গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন দিয়ে দেন অলোক। স্বামীকে বাঁচাতে গিয়ে অগ্নিদগ্ধ হন তাঁর স্ত্রী।
অলোকের স্ত্রী মৌসুমী জানান, আত্মহত্যা করা ছাড়া উপায় থাকবে না বলে জানায় অলোক। পেট্রোল গায়ে ঢেলেও দেয়। হঠাৎ করে আগুন ধরে যায়।
অলোকের পাশেই দাঁড়িয়ে ছিলেন মৌসুমী। হঠাৎই আগুন জ্বলে যাওয়ায় দু’জনেই অগ্নিদগ্ধ হন। এরপরেই ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় আসিফ। আগুনের তাপে দগ্ধ অবস্থায় তাঁদের প্রথমে পাণ্ডুয়া গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে পাঠানো হয়।
জখমদের সহকর্মী পাপিয়া নন্দী নামে এক মহিলা বলেন, ‘একজন সৎ মানুষকে দিনের পর দিন ফেসবুক লাইভ করে মানসিক নির্যাতন করছিলেন আসিফ। তার বিচার চাইতে গিয়েছিলাম।’
আসিফ ফেসবুক লাইভে বলেন, তাঁর বাড়িতে চড়াও হয়ে অসুস্থ মা বাবাকে হুমকি দেওয়া হয়। তিনি অলোকের থেকে ৬ লাখ টাকা পেতেন। সেটা চাইতেই মহিলা দিয়ে শ্লীলতাহানির মামলা দেওয়ার ভয়ও দেখানো হয়। পুলিশ আসিফকে খুঁজছে।
হুগলি গ্রামীণ পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কল্যাণ সরকার জানান, ‘কোন ব্যবসায়ীক সম্পর্ক থেকে এই ঘটনা। লোকজনের সামনেই আগুন লাগিয়ে দেয়। যেমন অভিযোগ হবে সেই মতো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।’