নিজস্ব প্রতিনিধি, কুলতলি: সবে পা দিয়েছিলেন খাঁড়িতে, আচমকাই জঙ্গল থেকে বেরিয়ে এক লাফ রয়্যাল বেঙ্গলের। মুহূর্তের মধ্যেই খুবলে খেল কুলতলির এক মৎস্যজীবীকে। একদিকে যখন কুলতলিতে বাঘের আতঙ্কে আতঙ্কিত সকলে, ঠিক তখনই সামনে এল এই মর্মান্তিক ঘটনার খবর।
কাঁকড়া ধরতে গিয়ে বাঘের হামলায় মৃত্যু হল এক মৎস্যজীবীর। ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার কুলতলি গ্রামের বৈঠভাঙির জঙ্গলে। মৃতের নাম বর্ণধর মণ্ডল(২২)।স্থানীয় সূত্রে খবর, বর্ণধর নামে ওই ব্যক্তি সহ এলাকার আরও ৫ জন কাঁকড়া ধরার জন্য জঙ্গলে যান। নৌকা থেকে কাঁকড়া ধরতে তাঁরা খাঁড়িতে নামেন। সেই সময় জঙ্গলে লুকিয়ে থাকা একটি বাঘ এসে ঝাঁপিয়ে পড়ে বর্ণধরের ওপরে। গুরুতর জখম হন তিনি। সঙ্গীরা বাঘের হাত থেকে তাঁকে বাঁচানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের জন্য তাঁকে আর প্রাণে বাঁচানো যায়নি।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, বর্ণধর মণ্ডলের বাড়িতে তাঁর স্ত্রী, ৭ বছরের মেয়ে ও বৃদ্ধ বাবা আছেন। সংসারের একমাত্র রোজগেরে ছিলেন বর্ণধর। জীবিকার কারণে বৃহস্পতিবার সকাল ৮ টা নাগাদ কাঁকড়া ধরার জন্য রওনা দেন তিনি। জানা যায়, নিয়মিত কাঁকড়া ধরার জন্য যেত ওই এলাকার অনেক বাসিন্দা। বর্ণধরের ওপর বাঘের হামলার পর তাঁর সঙ্গীরা লাঠিসোটা নিয়ে বাঘের সামনে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। মানুষ ও বাঘের লড়াই হলেও শেষপর্যন্ত রণে ভঙ্গ দিয়ে বাঘটি ওই মৎস্যজীবীকে ছেড়ে জঙ্গলে পালিয়ে যায়। গুরুতর জখম অবস্থায় তাঁকে নৌকায় করে বাড়িতে নিয়ে আসার পথেই মৃত্যু হয় ওই ব্যক্তির। দেহটি আপাতত কুলতুলি ব্লকের গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
এই ঘটনার পর ওই এলাকায় পৌঁছয় বনদফতরের কর্মীরা। ঘটনার তদন্ত করছেন তাঁরা। আনন্দ গাড়ু নামে বর্ণধরের সঙ্গে যাওয়া এক মৎস্যজীবী বলেন, ‘আজ সকাল ৮ টায় গিয়েছিলাম কাঁকড়া ধরতে। খাঁড়িতে নামার সঙ্গে-সঙ্গে একটি বাঘ ওর ওপরে ঝাঁপিয়ে পড়ল। আমরা লাঠি নিয়ে বাঁচানোর অনেক চেষ্টা করেছি। কিন্তু ওকে বাঁচাতে পারিনি।’