ক্রিসমাসে সেজে উঠছে হাওড়ার ডুমুরজলা

জেলা সংস্কৃতি


মৌমিতা সানা, হাওড়া: আসছে বড়দিন। আপামর বাঙালির কাছে ক্রিসমাস হল বছর শেষের মেতে ওঠার এক উৎসব। মূলত খ্রীষ্টান ধর্মাবলম্বী মানুষদের উৎসব হলেও তা আজ হয়ে উঠেছে সর্বজনীন। ২৫ ডিসেম্বর খ্রীষ্টান সম্প্রদায়ের আরাধ্য যিশু খ্রীষ্টের জন্মদিন। আর সেই জন্মদিনকে উপলক্ষ করেই এই উৎসব পালিত হয়। খ্রীষ্টানদের বিশ্বাস অনুসারে, এদিন মাতা মেরির গর্ভে আসেন‌ যিশু খ্রীষ্ট। তাই হিসেব অনুসারে ২৫ ডিসেম্বর তারিখটিকে যিশুর জন্মতারিখ হিসেবে ধরা হয়। বিশ্বের অধিকাংশ রাষ্ট্রেই বড়দিন একটি প্রধান উৎসব তাই এটি সরকারি ছুটির দিন হিসেবেও পালিত হয়। অ-খ্রীষ্টান সংখ্যাগরিষ্ঠ কয়েকটি দেশেও মহা সমারোহে বড়দিন উদযাপিত হতে দেখা যায়। রাশিয়া, জর্জিয়া, মিশর, আর্মেনিয়া, ইউক্রেন ও সার্বিয়ার মতো কয়েকটি দেশে ২৫ ডিসেম্বর উপলক্ষ্যে মেতে ওঠেন আমজনতা।


ভারতের অনেক রাজ্যে এই ২৫ ডিসেম্বর দিনটিকে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করা হয়। পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন এলাকায় ২৫ ডিসেম্বর উপলক্ষে আলোর রোশনাইয়ে সেজে ওঠে। বৃহস্পতিবার রাজ্য সরকারের উদ্যোগে পার্ক স্ট্রিটের আ্যলেন পার্কে বড়দিন কার্নিভালের উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই কার্নিভালে শুধুমাত্র খ্রীষ্টান সম্প্রদায়ের নাগরিকরাই নয় জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
গত বছরের মতো কলকাতার পাশের ঐতিহ্যপূর্ণ যমজ শহর হাওড়ার ডুমুরজুলাতেও ক্রিসমাস কার্নিভালের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। এই উপলক্ষে আলোর সাজে সেজে উঠছে ডুমুরজলার ষষ্ঠী নারায়ণ ইকো পার্ক চত্বর। জোরকদমে চলছে প্রস্তুতির কাজ। হাওড়া পুরসভার উদ্যোগে গত বছর শুরু হয়েছিল হাওড়া ক্রিসমাস কার্নিভাল। বছরের শেষে কলকাতা সংলগ্ন হাওড়ায় অনুষ্ঠিত এই কার্নিভাল সাড়া ফেলে দিয়েছিল জেলাবাসীর মধ্যে। এই বছরেও বর্ষ শেষে এই উৎসবে মেতে উঠতে প্রস্তুতি নিচ্ছে হাওড়াবাসী। আগামী ২৩ ডিসেম্বর থেকে ১ জানুয়ারি পর্যন্ত এই অনুষ্ঠান চলবে। এখানে তৈরি হচ্ছে মঞ্চ, খাবার ও বিভিন্ন পণ্য সমগ্রীর দোকান। আলোর রোশনাইয়ে সেজে উঠছে গোটা চত্বর। হাওড়ার পুর প্রশাসক সুজয় চক্রবর্তী বলেন, ‘কার্নিভাল কমিটি পুরো বিষয়টি দেখভাল করছে। বছরের শেষে মানুষকে আনন্দ দেওয়ার জন্যই আমাদের এই উদ্যোগ।’


স্থানীয় কয়েকজনের থেকে জানা যায়, ‘এই ক্রিসমাস কার্নিভাল আমাদের একটা আলাদা অনুভূতি দেয়। কয়েকটা দিন দারুণ আনন্দে কাটে। কিন্তু গত বছর এই কার্নিভালে গাড়ি পার্কিং নিয়ে বিভিন্ন বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। এই নিয়ে রাজ্যের ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মনোজ তিওয়ারির সঙ্গে পূর্ব প্রশাসক সুজয় চক্রবর্তীর বিবাদ বাঁধে। যার ফলস্বরূপ কার্নিভাল বন্ধ করে দেওয়া হয়। শেষ পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে রাজ্যের ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের মধ্যস্থতায় বিবাদের মীমাংসা হয়ে কার্নিভাল চালু হয়।