নিজস্ব প্রতিনিধি, ঝাড়গ্রাম: জঙ্গলে বাঘের হানা, এর ফলে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন ঝাড়গ্রামবাসীরা। আবহাওয়ার পরিবর্তনের জেরে এখন জমিয়ে ঠান্ডা পড়েছে জঙ্গল মহল এলাকা ভুক্ত ঝাড়গ্রামে। আর তার মধ্যেই লোকালয়ে বাঘ ঢোকার ঘটনায় আঙঙ্কিত স্থানীয় বাসিন্দারা। কারণ তাঁদের অধিকাংশেরই জীবিকা জঙ্গল থেকে কাঠ ও শালপাতা কুড়ানো। বাঘের আতঙ্কে তাঁদের জঙ্গলের পথ মাড়িয়ে চলতে নিষাধাজ্ঞা জারি করেছে বন দফতর।
এরই মধ্যে শীতের সময় এই অঞ্চলে পর্যটকদের ভিড় অপেক্ষাকৃত বাড়ে। কিন্তু বাঘের আতঙ্কে তাঁরাও এলাকা ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন। বন দফতরের তরফে ঘরের মধ্যেই থাকার নিদান দেওয়া হয়েছে। যার ফলে বিপাকে পড়েছেন পর্যটকরা।
উল্লেখ্য, দিন দুই আগে ঝাড়খন্ড পেরিয়ে ঝাড়গ্রামে ঢুকে পরে একটি রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার। ওই রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের নাম ‘জিনাত’। রেডিও কলারের মাধ্যমে তার গতিবিধির খবর আসে বনদফতরের হাতে। খবর পেয়ে বনদফতরের কর্মীরা ওই এলাকায় এসে তল্লাশি চালানোর পাশাপাশি জিনাতকে খাঁচায় পুড়ে জঙ্গলে ফেরৎ পাঠানোর উদ্যোগ নিয়েছে। কিন্তু এখনও ধরা দেয়নি জিনাত। তাই চিন্তার ভাঁজ বন দফতরের কর্তাদের কপালে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, ঝাড়গ্রামের জঙ্গল সীমানার অন্তত ১০ টি গ্রামের আশেপাশে তাকে বিচরণ করতে দেখা গেছে। তবে এখন সে কোথায় আছে তা নিয়ে চিন্তিত গ্রামবাসী ও বনদফতরের কর্মীরা। রাজ্য বনদফতরের উচ্চ পর্যায়ের আধিকারিকরা উপস্থিত হন কাঁকড়া, আমলাশোল, দলেদলে, সহ আশেপাশের বিভিন্ন এলাকায়। ডেকে পাঠানো হয় সুন্দরবনের ব্যাঘ্র বিশেষজ্ঞদের।
এদিকে বাঘের ভয়ে কাঠ ও পাতা কুড়োতে যেতে পারছেন না অরণ্যবাসীরা। জঙ্গলে না গেলে তাঁদের আয় কিভাবে হবে তা নিয়েও দুশ্চিন্তায় পড়েছেন গ্রামবাসীরা।
বনদফতর সূত্রে খবর, জিনাতের অবস্থান জানতে ড্রোন ক্যামেরার মাধ্যমে নজরদারি চালানো হচ্ছে। এছাড়া টোপ হিসেবে রাখা হয়েছে ২টি গরু। রাজ্যস্তরের উচ্চপর্যায়ের বন আধিকারিকরা উপস্থিত আছেন। এছাড়াও ওই ১০টি এলাকায় সতর্কতা জারি করা হয়েছে। বনাঞ্চলের আশেপাশে যেসব রিসোর্ট, হোটেল রয়েছে সেখানে বিভিন্ন পর্যটকরা রয়েছেন। তাঁরাও যাতে যত্রতত্র বেরিয়ে না যান সেই নিয়েও সতর্ক করা হয়েছে রিসোর্ট ও হোটেলগুলোকে।