রহস্যজনক মৃত্যু ব্যবসায়ীর

অপরাধ জেলা

নিজস্ব প্রতিনিধি, হুগলি: বেশকিছুদিন ধরে নিখোঁজ ছিলেন হুগলির এক ব্যবসায়ী। আজ শুক্রবারে ওই ব্যবসায়ীর ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার হয় নদিয়ার শান্তিপুরে। শোকস্তব্ধ মৃতের পরিবার ও প্রতিবেশীরা।

হুগলি জেলার বলাগড় থানার গুপ্তিপাড়ার বাঁধাগাছি এলাকার বাসিন্দা সমর দাস পেশায় ব্যবসায়ী। এছাড়া তাঁর কাপড়ের উপর ডিজাইন করা অ্যাপ্লিকের কাঠের ব্যবসাও আছে। গত ২৩ ডিসেম্বর সকালে ব্যবসার কাজে গিয়েছিলেন শান্তিপুরে। তারপর কিছুক্ষণ পরে তাঁকে আর ফোনে পাওয়া যায়নি। তাঁর পরিবার নিখোঁজ ডায়েরি করে বলাগড় থানায়। এরপর পুলিশ তল্লাশি চালায়। অবশেষে গঙ্গার ঘাটের পাশে জঙ্গল থেকে সমর দাসের ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার হয়। তাঁর পরিবারের দাবি গলায় শোনাচ্ছেন এবং হাতের সোনার আংটি ছিল পাওয়া যায়নি। এমনকি মোবাইলের সিম কার্ডও পাওয়া যায়নি।

পরিবার সূত্রে খবর, সরস্বতী পূজোয় মেয়েরা যে বাসন্তী রঙের লালপাড় শাড়ি পড়ে সেই শাড়িগুলোর লাল পাড় বসানোর লেজার মেশিন রয়েছে গুপ্তিপাড়ায় সমর দাসের। কিন্তু সম্প্রতি শান্তিপুরের এক ব্যবসায়ী ওই মেশিন বসানোয়, শান্তিপুরের ক্রেতারা শান্তিপুর থেকে ওই কাপড় কিনতে শুরু করেছিলেন। শান্তিপুরের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলার জন্যই ওই ব্যক্তি গিয়েছিলেন। প্রয়োজনে শান্তিপুরে থেকে কম দামে ওই শাড়ির ব্যাপারে নাকি কথা বলতে যাচ্ছিলেন বলে পরিবার সূত্রে খবর।

তারপর আর ঘরে ফেরা হলো না তাঁর। বাড়িতে রয়েছে বৃদ্ধ বাবা, মা, স্ত্রী ও সন্তান। পরিবারের সবাই শোকাহত। তাঁরা কান্নায় ভেঙে পড়েছেন। কথা বলার মত অবস্থায় নেই পরিবারে কেউই। প্রতিবেশীদের দাবি, এই রহস্যের উদঘাটন হোক এবং যদি হত্যা করা হয়ে থাকে অবশ্যই হত্যাকারীর শাস্তি হোক।

ওই ব্যবসায়ী ভাই অভিজিৎ দাস জানান, কয়েকটা বিষয় তাঁদের সন্দেহ হচ্ছে। দাদা যদি আত্মহত্যা করবে তাহলে নদিয়ায় কেন? জানা যায়,নিঁখোজের দিন তারাপুর বাজার থেকে এক কাস্টমারের সঙ্গে বাইরে যাবে অন্য এক জায়গায় গিয়েছিলেন। আবার সেখান থেকে টোটো চেপে ফিরে আসে তারাপুর ঘাটে। ওই ব্যবসায়ের ভাইয়ের দাবি, ঘাটের পাশেই পুরনো ফেরিঘাটে তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। কেউ দেখলো না! গলার সোনার চেন, আংটি ছিল সেগুলো কোথায় গেল! মোবাইলের সিম নেই কেন! এমন কি একাধিক প্রশ্ন দেখা দিচ্ছে। দেহ ময়নাতদন্তের পর রিপোর্ট এলে বোঝা যাবে মৃত্যুর আসল কারণ।

হুগলি গ্রামীণ পুলিশ সুপার কল্যান সরকার বলেন, ‘একটা নিখোঁজ ডায়েরি হয়েছিল।’ বলাগড় থানার পুলিশ পরিবারের লোক নিয়ে নদীয়া গিয়েও খোঁজ খবর নেয়। এমনকি সিসি ক্যামেরা খতিয়ে দেখেন তাঁরা। সূত্রের খবর, ওপারে স্থানীয় একজনের সঙ্গে খাওয়া-দাওয়া করে তারপর আর খোঁজ পাওয়া যায়নি। পুলিশের অনুমান, যা হওয়ার তার পরেই হয়েছে।