নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: পরিবহন দফতর গাড়ি মালিক, বিশেষত বিলাসবহুল দামি গাড়ির মালিকদের বকেয়া কর আদায় করতে বিশেষ ছাড় দিচ্ছে। এব্যাপারে সচেতনতা প্রচার কর্মসূচি শুরু করা হচ্ছে দফতরের তরফে। দামি গাড়ির মালিকদের এক বড় অংশ নিয়মিত পথ কর মেটাচ্ছে না। যে কারণে বিপুল পরিমাণে রাজস্ব বকেয়া রয়েছে বলে পরিবহন দফতর সূত্রে জানা গেছে। পরিবহন মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী জানিয়েছেন, মোটরযান আইন সংশোধনের ফলে ব্যক্তিগত গাড়ির মালিকেরা তাঁদের পুরনো গাড়ির দামের ৭.৫ শতাংশ দিয়ে আজীবনের কর মিটিয়ে দিতে পারবেন। বাণিজ্যিক গাড়ির ক্ষেত্রে তিন, পাঁচ বা দশ বছরের মেয়াদে কর মেটালে যথাক্রমে ১৫ শতাংশ, ৩০ শতাংশ এবং ৪০ শতাংশ ছাড় পাওয়া যাবে। গাড়ি মালিকেরা যাতে এই ছাড় সম্পর্কে জানতে পারেন সেজন্য বিশেষ প্রচারাভিযান শুরু হচ্ছে বলে পরিবহন মন্ত্রী জানিয়েছেন। ইতোমধ্যেই বকেয়া কর মিটিয়ে দেওয়ার জন্য গাড়ি মালিকদের মোবাইলে এসএমএস পাঠানো শুরু হয়েছে।

রাজ্য সরকারের পরিবহণ আইন বলছে, রাস্তায় গাড়ি বের করতে গেলে পথকর মেটাতেই হবে । অতএব এক্ষেত্রে জরিমানা বাধ্যতামূলক । আর এমন ঘটনার জন্য বহু ক্ষেত্রে এমনও দেখা যায়, গাড়ির পথকর ও জরিমানা মিলে টাকার অঙ্ক ১০-১২ লক্ষ টাকায় পৌঁছে যায় । এইভাবেই শুধু কলকাতায় প্রায় ৮০ কোটি টাকা বাকি রয়েছে দামি গাড়িগুলির ক্ষেত্রে । গোটা রাজ্য ধরলে টাকার অংক আরও বাড়বে তাতে কোনও সন্দেহ নেই ।
এই নিয়ে রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তীকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, পথ কর না দেওয়া নিয়ে সমস্যা দীর্ঘদিনের । তিনি মন্ত্রী হওয়ার আগে এর পরিমাণ ছিল প্রায় ৪০ শতাংশের কাছাকাছি । এখন পরিবহণ দফতর কড়া হওয়ায় সেটা ৩০ শতাংশের কাছাকাছি এসে দাঁড়িয়েছে । তবে এই প্রবণতা তাঁদের কাছে অন্যতম বড় চিন্তার কারণ ।
জানা গেছে, শুধুমাত্র কলকাতাতেই ৩০ শতাংশ গাড়ি মালিকের কাছ থেকে রাজ্য সরকারের প্রায় ৮০ কোটি টাকা রাজস্ব এবং জরিমানা বকেয়া রয়েছে। এদের অধিকাংশই নামী বিদেশী গাড়ির মালিক। মন্ত্রী জানিয়েছেন, ‘বহু ক্ষেত্রে যখন এ ধরনের গাড়ি কিনতে যাওয়া হয়, তখন শোরুম থেকেই বলা হয় না যে, আপনি ১৫ বছরের অর্থাৎ লাইফ টাইম রোড ট্যাক্স দিয়ে দিলে করের ক্ষেত্রে একটা বড় ছাড় পাওয়া যায়। ফলে অনেকেই পাঁচ বছরের পর আর রোড ট্যাক্স দেন না। আমরা চেষ্টা করছি, এই বিষয়টা নিয়ে এসএমএস করে ওই গাড়ির মালিকদের সতর্ক করার। সে ক্ষেত্রেও সতর্ক না হলে পরবর্তীতে কড়া পদক্ষেপ করা হবে।’