মা ছেলের রহস্যময় মৃত্যু! খবর পেয়ে হৃদরোগে আক্রান্ত বাবা

জেলা রাজ্য

নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: শিলিগুড়ির উত্তরায়ণ টাউনশিপে একটি ভাড়া বাড়িতে একই ঘরে মা ও ছেলের মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে এই ঘটনা ঘটে।

শিলিগুড়ি সংলগ্ন মাটিগাড়ার উত্তরায়ণ টাউনশিপে একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন সুজিত দাস ও তাঁর পরিবার। সুজিত দাস জাতীয় সড়কের ঠিকাদারি কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ১ জানুয়ারি রাতে বাইরে থেকে খাবার অর্ডার করে খেয়েছিলেন তিথি দাস (৩৮), মেয়ে তেজল দাস (১৮), ছেলে তেজস দাস (৮) এবং তিথির ভাগ্নে তন্ময় সরকার। খাওয়া-দাওয়ার পর ঘুমিয়ে পড়েন তাঁরা। একটি ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন মা, মেয়ে এবং ছেলে। অন্য ঘরে ছিলেন তন্ময়।

বৃহস্পতিবার সকালে মেয়ে তেজল তন্ময়কে জানায়, তার ভাই এবং মা সাড়া দিচ্ছে না। খবর পেয়ে ছুটে আসেন প্রতিবেশীরা। তন্ময় উত্তরায়ণ টাউনশিপ ফাঁড়ির পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তিথির দেহ শৌচালয়ের কাছে এবং তেজসের দেহ বিছানা থেকে উদ্ধার করে। তাদেরকে মাটিগাড়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁদের মৃত বলে জানান। অন্য দিকে, অসুস্থ অবস্থায় মেয়েকে ভর্তি করানো হয় হাসপাতালে। সুজিত ঘটনাস্থলে পৌঁছে ছেলে ও স্ত্রীর মৃত্যুর খবর শুনে হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হন।

পুলিশ বাড়িতে পৌঁছে একটি পাত্র উদ্ধার করে। সেই পাত্রে কয়লা জ্বলছিল ঘরের ভেতর। হিটারও চালানো ছিল। এরইমধ্যে পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখছে পুলিশ। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসার পরে মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে বলে জানিয়েছেন এসিপি বিশ্বচাঁদ ঠাকুর। তিনি বলেন, ‘একই ঘরে মা ও ছেলের দেহ উদ্ধার হয়। ও-ই ঘরে মেয়েও ঘুমিয়েছিল। সে গুরুতর অসুস্থ। তবে এই মৃত্যুর কারণ এখনই সঠিক ভাবে বলা সম্ভব নয়। ঘর থেকে একটি জ্বলন্ত কয়লার পাত্র উদ্ধার হয়েছে। গোটা বিষয়টির তদন্ত চলছে।’

পরিচারিকা সুমতি মুন্ডা বলেন, ‘প্রত্যেকদিন রাতেই ওনারা ঘর গরম করার জন্য কয়লা দিয়ে আগুন জ্বালাতেন এবং রাতে তা নিভিয়ে শুয়ে পড়তেন। কিন্তু ও দিন তাঁরা হয়তো কয়লার আগুন না নিভিয়েই শুয়ে পড়েছিল। দরজা জানলা বন্ধ থাকার জন্য দম বন্ধ হয়ে যাওয়ায় হয়তো তাঁরা মারা গেছেন। আমি সঠিক ভাবে কিছু বলতে পারব না। আমি সকালে জানতে পারি মৃত্যুর খবর।’