নিউজ পোল ব্যুরো : ২০ বছর আগে হারিয়ে যাওয়া নিজের মাকে খুঁজতে স্পেন থেকে ভারতে এল এক তরুণী। ২১ বছর বয়সী ওই তরুণী মানুষ হন এক স্প্যানিশ দম্পত্তির কাছে। স্নেহার আর একটি ভাই আছে সোমু। ওই স্প্যানিশ দম্পত্তি ২জনকেই দত্তক নেন ভারত থেকে তারপর তাঁরা পাকাপাকি ভাবেই স্পেনে চলে যান।
কিছুদিন আগে স্নেহা জানতে পারেন যাদের কাছে সে বড়ো হয়েছে তাঁরা আসল বাবা-মা নন। এরপরেই তিনি নিজের মায়ের খোঁজ করতে ভারতে চলে আসেন। জানা যায় স্নেহা উড়িশার ভুবনেশ্বরের একাধিক জায়গায় মায়ের খোঁজ করেছেন, কিন্তু সব জায়গায় গিয়ে নিরাশ হতে হয়েছে।
কিন্তু এখন প্রশ্ন হল স্নেহা আচমকা ভুবনেশ্বরে গেলেন? তাঁর পালিত স্প্যানিশ দম্পত্তির কাছ থেকে জানতে পারেন ২০১০ সালে ভুবনেশ্বরের একটি অনাথ আশ্রম থেকে স্নেহা ও তাঁর ভাই সোমুকে দত্তক নেন তাঁদের স্প্যানিশ বাবা-মা ভিদাল ও জুয়ান জোশ। এ কথা জানতে পেরে স্পেন থেকে উড়িশার সেই আশ্রমে চলে আসেন। স্নেহা নিজেও বর্তমানে শিশুদের নিয়ে গবেষণা করছেন। স্প্যানিশ দম্পত্তির কাছে বড়ো হলেও স্নেহা ও তাঁর ভাই মনেপ্রাণে একজন ভারতীয়।
স্নেহা আশ্রমে আসে জানতে পারেন, ২০০৫ সালেই তাঁদের জন্মদাত্রী বনলতা দাস ভুবনেশ্বরের নয়াপল্লী এলাকার ভাড়া বাড়িতেই তাঁদের ছেড়ে চলে গেছিলেন। পরে বনলতার স্বামী সন্তোষ, যিনি একটি বেসরকারি সংস্থায় বাবুর্চি হিসাবে কাজ করতেন তিনিও পরিবার ছাড়েন। বনলতার চার সন্তান ছিল। তবে তিনি স্নেহা ও সোমুকে বাড়িতে রেখে বাকি দু’জনকে নিয়ে পালিয়ে যান। এরপর বাড়ির মালিক পুলিশকে খবর দিলে দু’জনকে অনাথ আশ্রমে নিয়ে যাওয়া হয়।
২০১০ সালে পাঁচ বছর বয়সি স্নেহা ও চার বছর বয়সি সোমুকে স্প্যানিশ দম্পতি আইনিভাবে ২ জনকে দত্তক নেন। পরে স্নেহা বড় হতেই তাঁকে পুরো বিষয়টি জানান স্প্যানিশ বাবা-মা। এরপরই স্পেন থেকে ভারতে আসেন তাঁর মায়ের খোঁজে। স্নেহা জানিয়েছেন, গত বছরের ১৯ ডিসেম্বর তিনি তাঁর যোগা টিচারের সঙ্গে ভারতে আসেন। এরপর ভুবনেশ্বরের একটি হোটেলে থাকতে শুরু করেন। তবে নিজের লেখাপড়া শুরু হয়ে যাওয়ার কারণে পুনরায় স্পেনে ফিরে যাওয়ার কথা রয়েছে তাঁর। পাশাপাশি পুরনো যে বাড়িতে স্নেহা পরিবারের সঙ্গে থাকতেন সেখানকার মালিকের থেকে বাবা-মায়ের বিষয়ে খোঁজ নিয়ে পুলিশের কাছে সমস্ত বিষয় খুলে জানান। পুলিশ তাঁর বাবা-মার সন্ধান করছেন।