নিউজ পোল ব্যুরো: হিমালয়ের কোলে অবস্থিত শৈলশহর দার্জিলিং। এই শহর বরাবরই ভ্রমণ পিপাসুদের কাছে অন্যতম এক পছন্দের জায়গা। তুষারপাতের দৃশ্য আরও মনোমুগ্ধকর করে তুলেছে দার্জিলিংকে। আর দার্জিলিং মানেই টয়ট্রেন। কিন্তু এইবার দার্জিলিং যাওয়ার পরিকল্পনা করেছেন যাঁরা, তাঁদের জন্য রয়েছে এক মন খারাপের খবর। কেননা দুই মাসের জন্য দার্জিলিংয়ে বন্ধ থাকছে টয় ট্রেন পরিষেবা। হ্যাঁ, আপনি ঠিকই শুনেছেন। দার্জিলিংয়ের ঐতিহ্যবাহী টয়ট্রেন, যা শহরটির আকর্ষণ বহু গুণ বাড়িয়ে তুলেছে, তা আগামী দুই মাসের জন্য বন্ধ থাকবে। যাত্রীসংখ্যা মারাত্মক ভাবে কমে যাওয়ার কারণে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে দার্জিলিং হিমালয়ান রেল কর্তৃপক্ষ।
দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ পর্যটকদের সংখ্যা কমে যাওয়ার কথা মাথায় রেখে শেষ দুটি টয় ট্রেনের জয়রাইড দুইমাসের জন্য বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। চলতি সপ্তাহে ডিএইচআর কর্তৃপক্ষ এক নির্দেশিকা জারি করে জানিয়েছে, ৬ জানুয়ারি থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিকেলের দুটি জয়রাইড বন্ধ থাকবে। এরমধ্যে রয়েছে একটি স্টিম জয়রাইড ও একটি ডিজেল জয়রাইড।
ডিএইচআরের সিপিআরও কে. কে. শর্মা জানিয়েছেন, “সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে পাহাড়ে খুব দ্রুত অন্ধকার নেমে আসে। এর ফলে শেষ দুটি জয়রাইডে যাত্রীদের সংখ্যা খুবই কম। পাশাপাশি বর্তমানে পর্যটনের মরসুমও প্রায় শেষের দিকে। এই পরিস্থিতি বিবেচনা করে বিকেলের দুটো জয়রাইড বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সন্ধ্যায় পাহাড়ের কোলে দ্রুত অন্ধকার নেমে আসার কারণে শেষ দুটি জয়রাইডে প্রকৃতির দৃশ্য উপভোগ করা যায় না। অনেক পর্যটকও এই সময় টয় ট্রেনে চড়তে আগ্রহী থাকেন না। ডিএইচআরের দাবি, এই সিদ্ধান্ত পাহাড়ের পর্যটনে কোনও বড় প্রভাব ফেলবে না। তবে পর্যটন মহলের একাংশ এই সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। নতুন বছরের ছুটিতে দার্জিলিংয়ে বিপুল সংখ্যক পর্যটকের সমাগম হয়েছে। ফেস্টিভাল মরশুম, মনোরম আবহাওয়া এবং সম্ভাব্য তুষারপাতের কারণে দার্জিলিং শহরে পর্যটকদের ঢল নেমেছে। ঐতিহ্যবাহী ব্রিটিশ আমলের টয় ট্রেনে চেপে দার্জিলিং থেকে ঘুম রুটে জয়রাইড করা পর্যটকদের কাছে এক অন্যতম আকর্ষণ। বর্তমানে দার্জিলিং থেকে ঘুম পর্যন্ত মোট আটটি জয়রাইড চলাচল করছে। তবে শেষ দুটি জয়রাইড পরিষেবা বন্ধ রাখায় এখন থেকে ছয়টি জয়রাইড পরিষেবা চালু থাকবে। ডিএইচআর কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্ত কতটা যুক্তিযুক্ত তা নিয়ে পর্যটন মহলে আলোচনা শুরু হয়েছে। যদিও কর্তৃপক্ষ আশ্বস্ত করেছে যে, এই সিদ্ধান্তে পর্যটনে কোনও দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব পড়বে না। দার্জিলিংয়ে টয়ট্রেনের জনপ্রিয়তা যেমন আছে, তেমনই পর্যটকদের চাহিদার দিকে নজর রেখে ভবিষ্যতে পরিষেবা পুনর্বিবেচনা করা হতে পারে।