নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: ৪৮ তম আন্তর্জাতিক বইমেলায় স্টল দিতে পারবে না এপিডিআর। গিল্ডের বিরুদ্ধে করা এপিডিআরের মামলা খারিজ কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাসে। আদালতের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, গিল্ড কোনও সরকারি প্রতিষ্ঠান নয়। তারা কোনও সরকারি ডিউটিও পালন করছে না। তাই তাদের বিরুদ্ধে এই মামলার কোনও গ্রহণযোগ্যতা নেই।আবেদনকারী ঝুমা সেন বলেন, ‘আমি একটা সিভিল রাইট অর্গানাইজেশন। শেষ ১০ বছর ধরে আমি বইমেলায় স্টল দেওয়ার জন্য আবেদন জানিয়েছি। আমি আমার সমস্ত ডকুমেন্ট অ্যাটাচ করেছি। নিয়ম অনুযায়ী, গিল্ডের কাছে বইয়ের স্টল দেওয়ার জন্য কিছু নোটিফিকেশন দিতে হয়। এরপর তারা এলিজিবল কিনা সেটা জানায় ফোনে। একটা রেন্টাল ফি দিতে হয়। তারপর লটারি হয়। যেখানে স্টল নম্বর জানা যায়। আজ সেই লটারি ছিল।
পাবলিক ল্যান্ড পাবলিক মানি, এই রিট পিটিশন রেজিস্টার্ড সোসাইটির বিরুদ্ধে করা যাবে না বলা হচ্ছে। কারণ আমরা একটা আন রেজিস্টার্ড সোসাইটি। অনেক অর্ডার আছে রেজিস্টার্ড সোসাইটির বিরুদ্ধে।এর প্রেক্ষিতে বিচারপতি জানতে চান, ‘কোনও অর্ডার আছে গিল্ডের বিরুদ্ধে? সুপ্রীম কোর্টের? জানতে চান বিচারপতি অমৃতা সিনহা।ঝুমা সেন বলেন, গিল্ড পাবলিক মানি পাবলিক ল্যান্ড ইউজ করে।বিচারপতি গিল্ডের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন করেন, কেন আপনারা এবারে অনুমতি দেননি?
গিল্ডের তরফে আইনজীবী জানান: এবছর কিছু নিয়মের পরিবর্তন হয়েছে। রেজিস্ট্রেশন নম্বর লাগবে স্টল দিতে গেলে। যা ওনারা দেননি। কারণ এটা শুধুমাত্র পাবলিশারদের জন্য যারা স্টল দেবেন। আমরা এই নিয়মের কথা সমস্ত সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দিয়ে বলেছিলাম। বিচারপতি: এর আগে এই নিয়ম ছিল না। রেজিস্ট্রেশন, লাইসেন্স নম্বর এবং ক্যাটালগ দিতে হবে।গিল্ডের তরফে আইনজীবী: একাধিক আন্তর্জাতিক সংস্থা স্টল দেয় যাতে সেখানে কোন ভারত বিরোধী সংস্থা স্টল না দেয়। কাউকে তো দায়িত্ব নিতে হবে যাতে কোন রকম বেআইনি ব্যবসায়িক সংস্থা স্টল না দিতে পারে।বিচারপতি: এখানে কি ট্রেড লাইসেন্সের বিষয় আছে? ওনারা ট্রেড অর্গানাইজেশন নয়।গিল্ডের তরফে আইনজীবী: এটা শুধুমাত্র পাবলিশারদের জন্য। আমরা শুধুমাত্র ট্রেড লাইসেন্স চেয়েছি।বিচারপতি: এটা নিয়ে বিজ্ঞপ্তি অক্টোবরের আগে বেরিয়েছিল। আজকে লটারি। আপনি এত দেরিতে কেন এসেছেন?ঝুমা: আমি আবেদন ৪ অক্টোবর দিয়েছিলাম। এরপর কোনও সাড়াশব্দ ছিল না ওনাদের তরফে।বিচারপতি: আপনি তো জানতেন আপনি নিয়মগুলো পালন করেননি।ঝুমা: গিল্ড এ ধরনের নিয়ম কোন আইনের ভিত্তিতে চালু করছে সেটা বলুক।বাদী বিবাদি পক্ষের সওয়াল জবাব শুনে বিচারপতি জানান, আবেদনকারী ৪৮ তম বইমেলায় স্টল দেওয়ার জন্য আবেদন করেছিলেন। গিল্ড অনুমতি দেয়নি। তারা রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট, লাইসেন্স নম্বর এবং ক্যাটালগ চেয়েছে। আবেদনের শেষ দিন ছিল ৩০ অক্টোবর। আবেদনকারী জানিয়েছিলেন, তাঁদের কাছে কোন রেজিস্ট্রেশন নম্বর নেই। গিল্ড তাঁদের অনুমতি দিচ্ছে না বলে অভিযোগ। কারণ তাঁরা রেজিস্ট্রেশন, সার্টিফিকেট এবং ক্যাটালগ জমা দেয়নি।আজ শুক্রবার লটারির দিন ছিল যেখানে স্টল অ্যালটমেন্ট হবে। পিটিশনার জানিয়েছেন এই রিট পিটিশন গিল্ডের বিরুদ্ধে করা যাবে। এর সমর্থনে সুপ্রীম কোর্টের কয়েকটি রায় তিনি দেখিয়েছেন। আবেদন ছিল যে গিল্ড গত বছরের মত এবারেও স্টল দেওয়ার অনুমতি যাতে দেয়। এর জবাবে গিল্ড জানিয়েছে, আবেদনকারীর কাছে রেগুলার লাইসেন্স এবং রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট না থাকায় এই অনুমতি দেওয়া যাবে না।এই কোর্টে যে তথ্য পরিবেশিত হয়েছে সেই অনুযায়ী, আদালতের পর্যবেক্ষণ গিল্ড কোনও পাবলিক ডিউটি পালন করছে না।এটা একটা প্রাইভেট বডি। গিল্ডের বিরুদ্ধে রিট পিটিশন মেনটেন করা যাবে না। আবেদনকারীকে রিলিফ দেওয়া হচ্ছে না। খারিজ করা হল। তারা রেমেডি খুঁজতে অন্য আদালতের দ্বারস্থ হতে পারেন।