নিজস্ব প্রতিনিধি,কলকাতাঃ জাঁকিয়ে পড়েছে শীত। আর শীতকাল মানেই পিঠে-পুলি খাওয়ার ধুম ওঠে বাঙালির। আজ মঙ্গলবার মকর সংক্রান্তি। আর এই মকর সংক্রান্তি মানেই ঘরে ঘরে পিঠেপুলির উৎসব। ছোটবেলায় ঠাকুমা-দিদিমার হাতে তৈরি পিঠের সেই অমলিন স্বাদ, যে স্বাদে মিশে থাকত আদর-ভালোবাসার গল্প। কিন্তু সময়ের অভাবে আর শহুরে জীবনের চাপে আজকাল সেই পিঠে বানানোর রেওয়াজ প্রায় নেই বললেই চলে। তবে পুরনো ঐতিহ্যকে ফিরিয়ে আনার এক দারুণ উদ্যোগ দেখা গেল দমদমে।
মকর সংক্রান্তি উপলক্ষে দমদমে তৈরি হচ্ছে পাঁচ রকমের পিঠে-পুলি। প্রায় ১০০ জন মিলে তৈরি করছে সেই পিঠে পুলি। যা পৌঁছে যাবে দমদমের মানুষের বাড়ি বাড়ি। এই পিঠে পুলি তৈরি হচ্ছে দমদম দাগা কলোনি এলাকায়। বাঙালির এই স্বাদপ্রিয় পিঠে পুলি বানানো হচ্ছে প্রায় ২৬ হাজার নারকেল,৪০০ কেজি চালের আটা,৪০০ কেজি ময়দা এবং ২ হাজার লিটার দুধ দিয়ে।
মকর সংক্রান্তির নিয়মরীতি মেনেই এই পিঠে পুলি উৎসব তৈরি হচ্ছে। এটি তৈরি করছে ৫০ জন মহিলা এবং ৫০ জন পুরুষ। এঁদের মধ্যে কেও এসেছেন বনগাঁ থেকে আবার কেও এসেছেন রানাঘাট এবং অশোকনগর থেকে। বাড়ি বাড়ি পিঠে দিয়ে আসার জন্য পাঁচ রকম কন্টেনারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। যার মধ্যে পাটিসাপটা,চুষী পিঠে, দুধ পুলি, গোকুল পিঠে, রসে ভরা পিঠে পৌঁছে দেওয়া হবে বাড়ি বাড়ি।
অন্যদিকে, কলকাতার অন্যতম নামি মিষ্টির দোকান রাধারমন মল্লিক ও বলরাম মল্লিকের অন্যতম কর্ণধার গৌতম মল্লিক জানান, কর্মব্যস্ততার জন্য এবং এই প্রজন্মের ছেলে মেয়েরা অনেকেই বিভিন্ন পিঠে, পাটিসাপটা কীভাবে বানাতে হয় তা জানেন না। আমাদের দোকানে এই সংক্রান্তির আগে থেকেই পিঠের চাহিদা তুঙ্গে। দোকান থেকে কেনার পাশাপাশি হোম ডেলিভারি দিতে দিতে নাভিঃশ্বাস উঠছে। তাও যতটা সম্ভব রসনার তৃপ্তি মেটাতে রসবড়া, দুধপুলি, ভাপা পিঠে, ভাজা পিঠে,পাটিসাপটা নিরন্তন বানিয়ে চলেছেন তাঁরা। গৌতম বাবু জানান, সাধারণ মানুষের কথা ভেবে স্বল্পমূল্যে পিঠের দাম রেখেছেন তাঁরা।