সিভিকের পাটকাঠির পাঠশালা

জেলা রাজনীতি রাজ্য শিক্ষা

নিজস্ব প্রতিনিধি, হুগলি: আরজি কর কাণ্ডের পর থেকেই সিভিক ভলান্টিয়ারের ভূমিকা নিয়ে বারবার প্রশ্ন উঠছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ভালো কাজের চেয়ে খারাপ সমালোচনায় বেশি প্রচারিত হয় সিভিক ভলান্টিয়াররা। সম্প্রতি সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায় গ্রেফতার হওয়ার পর থেকেই বিষয়টি নিয়ে আরও সমালোচনার কারণ হয়ে উঠেছে। বারবার কালি লেগেছে তাঁদের ভাবমূর্তিতে। কিন্তু এর মাঝেই সিভিক ভলান্টিয়ার হীরালাল সরকার তাঁর কাজের মাধ্যমে এক অনন্য নজির স্থাপন করেছেন সমাজের কাছে।

জানা গিয়েছে, বলাগড় থানার নাটা ঘর এলাকায় তাঁর বাড়ি। বাড়ির কাছেই রাস্তার পাশে পাটকাঠি দিয়ে একটি কুঁড়েঘর গড়ে তুলেছেন। যার নাম ‘হীরার পাঠশালা’। পেশায় সিভিক ভলেন্টিয়ার হলেও নেশায় শিক্ষক হীরালাল। সমস্ত পিছিয়ে পড়া আদিবাসী সম্প্রদায় যাদের আর্থিক অবস্থা অত্যন্ত দুর্বল সেইসব শিশুদের শিশুদের বিনামূল্যে পড়ান তিনি। হীরালাল এই শিশুদের শিক্ষার প্রতি আগ্রহী গড়ে তুলতে তাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। ক্লাস শেষে শিশুদের হাতে লজেন্স এবং বিস্কুট তুলে দেন যাতে তারা পড়াশোনায় আরও আগ্রহী হয়ে ওঠে। শিক্ষাদানের পাশাপাশি হীরালাল মানবিক মূল্যবোধ ও শিশুদের শেখাচ্ছেন যা তাদের ভবিষ্যতে ভালো মানুষ হয়ে উঠতে সাহায্য করবে।

মকর সংক্রান্তি উপলক্ষে হীরালাল বাচ্চাদের নতুন পোশাক এবং খাবার বিতরণ করেছেন যাতে এই ছোট উপহার তাদের মনে আনন্দ সৃষ্টি করে। হীরালালের এই উদ্যোগকে জানিয়েছেন সমাজের সর্বোচ্চ স্তরের মানুষজন।

এদিন হীরালালের পাঠশালা পরিদর্শনে আসেন হুগলির অ্যাডিশনাল পুলিশ সুপার কল্যাণ সরকার। সঙ্গে ছিলেন সিআই মগরা সৌমেন বিশ্বাস, বলাগড়ের ওসি সোমদেব পাত্র এবং অন্যান্য পুলিশ কর্তারা। পুলিশ সুপার বলেন, ‘সমাজের এক অনুপ্রেরণা হীরালালের মত সিভিক ভলান্টিয়াররা। তার এই কাজকে সবসময় সমর্থন করব।’

হীরালাল বলেন, ‘শিশুদের পড়ানোর মাঝে এক অন্যরকম আনন্দ পাই। তাই আমার এমন উদ্যোগ। এরা যদি ভবিষ্যতে মানুষের মতো মানুষ হতে পারে তার চেয়ে বড় পুরস্কার আমার জন্য হতে পারে না।’