নিজস্ব প্রতিনিধি:- পাহাড়ের অপার সৌন্দর্য, নীল আকাশের নীচে সবুজের মেলবন্ধন আর নিরিবিলি পরিবেশ খুঁজতে আমরা প্রায়ই দার্জিলিংয়ের কথা ভাবি। কিন্তু দার্জিলিংয়ের অতিরিক্ত ভীড় আজ আর সেই স্বপ্নপূরণের জায়গা নেই। তাই ভ্রমণ পিপাশুদের জন্য দার্জিলিংয়ের পাশেই এক অজানা রত্ন অপেক্ষা করছে—লাবদা ও শিকসিন গ্রাম। এই দুই ছোট্ট পাহাড়ি গ্রামে লুকিয়ে আছে প্রকৃতির নিভৃত সৌন্দর্য্য। লাবদা গ্রামে পা রাখলেই আপনার মন ভরে যাবে নানা রঙের ফুলের বাহার আর পাইনের জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে বয়ে যাওয়া বাতাসে। পাহাড়ের খাঁজে খাঁজে ছড়িয়ে থাকা রংবেরঙের বাড়ি আর তাঁদের চারপাশে ফুটে থাকা ফুল যেন আপনাকে বলে, “এখানেই বাকি জীবনটা কাটিয়ে দিন।”
লাবদা শুধু প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য নয়, ঐতিহাসিক দিক থেকেও গুরুত্বপূর্ণ। ব্রিটিশ আমলের স্মৃতি বহন করে এখানকার একটি পুরনো বাংলো, যা স্থানীয়দের কাছে সিরিয়াল বাংলো নামে পরিচিত। যদিও এটি এখন প্রায় ধ্বংসপ্রাপ্ত, তবে এই বাংলোতে একসময়ে “বরসাত কি এক রাত” সিনেমার শুটিং হয়েছিল। লাবদার এই প্রাচীন স্থাপত্য নিদর্শন যেন সময়ের কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। লাবদা গ্রাম মংপু সাবডিভিশনের অন্তর্ভুক্ত। এখান থেকে আশপাশের বেশ কয়েকটি জায়গায় ঘুরে আসতে পারেন। মংপুতে গেলে অবশ্যই দেখতে হবে সেই বিখ্যাত বাড়িটি যেখানে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কিছুদিন কাটিয়েছিলেন। মংপু ছাড়াও কাছাকাছি রয়েছে সিটং ও রঙ্গারুন, যেখানকার মনোমুগ্ধকর পরিবেশ আপনাকে আরও আকর্ষণ করবে।
শিলিগুড়ি থেকে লাবদা আসা বেশ সহজ। গাড়ি ভাড়া করে অথবা শেয়ার গাড়িতে এখানে পৌঁছানো যায়। তবে এখানে থাকার জন্য আগে থেকেই ফার্মস্টে মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ করে বুকিং নিশ্চিত করে নেওয়া ভালো। লাবদা ও শিকসিন শুধু একবার ঘুরে আসার জায়গা নয়, বরং এমন এক অভিজ্ঞতা যা দীর্ঘদিন মনে থেকে যাবে। শহরের কোলাহল থেকে দূরে প্রকৃতির কোলে কয়েকটা দিন কাটানোর জন্য এই গ্রামগুলো নিখুঁত। শান্তি, সৌন্দর্য্য ইতিহাসের ছোঁয়ায় ভরপুর এই জায়গাগুলো ভ্রমণ পিপাশুদের হৃদয়ে চিরস্থায়ী জায়গা করে নেবে।