নিজস্ব প্রতিনিধি,কলকাতা:- ১৪৪ বছর পর উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজে শুরু হয়েছে মহাকুম্ভ মেলা। আর এদিকে আমাদের বাংলায় শুরু হয়েছে গঙ্গাসাগর মেলা। প্রতি বছরের মতো এবছরও লক্ষ লক্ষ ভক্ত সমাগমে মুখরিত হয়েছিল গঙ্গাসাগরে। মেলাকে কেন্দ্র করে সাধারণ মানুষের যাতায়াতের সুবিধার্তে পশ্চিমবঙ্গ সরকার বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। রাজ্য সরকারের তরফে অতিরিক্ত যানবাহনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। একইসঙ্গে পূর্ব রেলের তরফে চালানো হয়েছে যার মধ্যে বেশিরভাগই গঙ্গাসাগর স্পেশাল। ১২-১৬ জানুয়ারী পর্যন্ত চালু ছিল এই বিশেষ ট্রেন পরিষেবা। মেলা শেষে পূর্ব রেলের তরফে জানানো হয়েছে, কাকদ্বীপ শাখায় এই কয়েকদিনে রেলের মোট আয় হয়েছে ১৫,৯০,৪১১ টাকা। মেলার দিনগুলোতে ভক্ত ও পর্যটকদের ভিড় সামলাতে ট্রেন পরিষেবায় গতি আনায় রেলের এই আয় উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।
গঙ্গাসাগর মেলার আয়োজনে নামখানা বিভাগে মোট ৭,৯৪,৪৫০ টাকা আয় হয়েছে। মেলা চলাকালীন শিয়ালদহ দক্ষিণ, প্রিন্সেপ ঘাট, কাকদ্বীপ এবং নামখানা স্টেশন মিলিয়ে মোট আয় হয়েছে ২৩,৮৪,৮৬১ টাকা। যাত্রীদের ভীড় সামলাতে ট্রেনের অতিরিক্ত রেক প্রস্তুত রাখা হয়েছিল। যাত্রীদের সুবিধার্তে শিয়ালদহ দক্ষিণ, প্রিন্সেপ ঘাট, কাকদ্বীপ ও নামখানা স্টেশনে ‘মে আই হেল্প ইউ বুথ’ রাখা হয়েছিল। সহায়তার জন্য একটি বিশেষ হেল্পলাইন নম্বর চালু ছিল, যাতে যাত্রীরা সহজেই তাঁদের সমস্যার সমাধান পেতে পারেন। পাশাপাশি জরুরী পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ফোন নম্বরের একটি তালিকাও প্রকাশ করা হয়। মেলার সময় ভিড়ের ওপর বিশেষ নজরদারি ও যাত্রীদের সুরক্ষার জন্য শিয়ালদহ দক্ষিণ, প্রিন্সেপ ঘাট, কাকদ্বীপ এবং নামখানা স্টেশনে বিশেষ আরপিএফ বাহিনী মোতায়েন করা হয়। মেলার সময় যাত্রী সহায়তায় সিভিল ডিফেন্স, স্কাউট এবং সেন্ট জন অ্যাম্বুলেন্স থেকে প্রশিক্ষিত স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করা হয়েছিল। তাঁদের সক্রিয় ভূমিকায় যাত্রীরা যথাযথ সেবা ও সহায়তা পেয়েছেন।
যাত্রীদের সুবিধার্তে পূর্ব রেলের তরফ থেকে কাকদ্বীপ এবং নামখানায় পাঁচটি করে অতিরিক্ত টিকিট কাউন্টার রাখা হয়েছিল। সেই সঙ্গে প্রতিটি কাউন্টারে রাখা হয়েছিল অতিরিক্ত বুকিং ক্লার্ক, যাতে টিকিট সংগ্রহে যাত্রীদের কোন অসুবিধা না হয়। শিয়ালদহ, কাকদ্বীপ এবং নামখানায় যাত্রীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য বিশেষ মেডিক্যাল বুথ স্থাপন করা হয়েছিল। সঙ্গে রাখা ছিল জরুরী পরিষেবার জন্য অ্যাম্বুলেন্স। নিরাপত্তার বিষয়েও পূর্ব রেল ছিল বিশেষভাবে সজাগ। শিয়ালদহে ২৮টি এবং নামখানায় ২২টি অতিরিক্ত সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়েছিল যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য। ওভারহেড তার সংক্রান্ত যে কোন সমস্যার দ্রুত সমাধানের জন্য বারুইপুর, লক্ষ্মীকান্তপুর এবং শিয়ালদহে বিশেষ টাওয়ার ওয়াগন প্রস্তুত রাখা হয়েছিল। মেলার সময় ওভারহেড তার ছিঁড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা মাথায় রেখে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়। পূর্ব রেলের এই বিশেষ উদ্যোগ গঙ্গাসাগর মেলার সময় যাত্রীদের যাতায়াত আরও সুষ্ঠু এবং সুরক্ষিত করেছে।