নিজস্ব প্রতিনিধি, উত্তর ২৪ পরগনা:- মুর্শিদাবাদ এবং বীরভূম জেলার বিভিন্ন গ্রামে দ্রুত টাকা দ্বিগুন করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। তার পাশাপাশি লোন পাইয়ে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে প্রচুর টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগে তিন ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে খড়গ্রাম থানার পুলিশ। ধৃতদের নাম অশোক কুমার সিং, গোপাল মন্ডল এবং সাগর গাজী। তিনজনেই উত্তর ২৪ পরগনার দত্তপুকুর এলাকার বাসিন্দা। জেলা পুলিশের এক আধিকারিক জানান, রাজ্যের বহু মানুষ এর আগেও চিটফান্ড কোম্পানিগুলির ফাঁদে পা দিয়ে সর্বস্বান্ত হয়েছেন। বারবার প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই ধরণের প্রতারণা থেকে সাবধান থাকার জন্য সচেতনতা বাড়ানো সত্ত্বেও দ্রুত লাভের আশায় অনেকেই প্রতারকদের খপ্পরে পড়েছেন।
সূত্রের খবর, ধৃত তিনজন ‘এ সাগর ফিনান্স কোম্পানি নামে’ একটি ভুয়ো সংস্থা চালু করে মুর্শিদাবাদ এবং বীরভূম জেলার প্রত্যন্ত এলাকায় প্রতারণা চালাচ্ছিলেন। তাঁরা মূলত মহিলাদের লক্ষ্য করতেন এবং ‘এম- পকেট’ নামে একটি অনলাইন অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করে লোন পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাঁদের কাছ থেকে বিপুল পরিমান টাকা আদায় করতেন। গত ১২ জানুয়ারি খড়গ্রাম থানায় এক ব্যক্তি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগকারীর দাবি, লোন পাইয়ে দেওয়ার নাম করে ওই সংস্থা তাঁর কাছ থেকে থেকে টাকা নিলেও পরবর্তী সময় কোন পরিষেবা প্রদান করেনি। অভিযোগ পেয়ে পুলিশ তদন্ত শুরু করে। তদন্তে উঠে আসে, অভিযুক্তরা বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে বহু মানুষের কাছ থেকে একইভাবে প্রতারণা করেছে। পুলিশের অনুসন্ধানে উঠে আসা তথ্যের ভিত্তিতে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয়। তাঁদের হেফাজত থেকে ‘এ সাগর ফিনান্স কোম্পানি’র ভুয়ো নথি এবং বেশ কিছু ইলেকট্রনিক ডিভাইস বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
ধৃত তিনজনকে জেরা করে পুলিশ তারাপীঠ থানা এলাকার একটি হোটেল ও কয়েকটি বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে বড়সড় চিটফান্ড চক্রের হদিশ পায়। উদ্ধার হওয়া সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে প্রায় ৩০টি সিমকার্ড, একাধিক ট্রেনের টিকিট, আধার কার্ড, ভোটার কার্ড, পাসপোর্ট ছবি, বেশ কিছু মোবাইল ফোন, ট্যাব ও নানা গুরুত্বপূর্ণ নথি। পুলিশ জানিয়েছে, চিটফান্ড চক্রটি কীভাবে পরিচালিত হত এবং এর সঙ্গে আর কারা জড়িত, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। উদ্ধার হওয়া নথি ও সরঞ্জাম থেকে নতুন করে তথ্য বেরিয়ে আসতে পারে বলে অনুমান পুলিশের।