‘ফাঁসি হলে সান্ত্বনা পেতাম! আক্ষেপ করে সিবিআইয়ের ভূমিকার সমালোচনা

অপরাধ আইন জেলা রাজনীতি রাজ্য শহর স্বাস্থ্য

নিজস্ব প্রতিনিধি, মালদা: সোমবার দীর্ঘ ৫ মাস বাদে আরজি করের হাসপাতালের জুনিয়র চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রাইকে যাবজ্জীবন আমৃত্যু কারাদণ্ডের সাজা শুনিয়েছেন বিচারক অনির্বাণ দাস। শিয়ালদা আদালতের এই রায় শুনে হতাশ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানান, তিনি এখনও ফাঁসির দাবিতেই অনড়। যাবজ্জীবন আমৃত্যু সাজা না হয়ে ফাঁসির সাজা হলে মনকে সান্ত্বনা দিতে পারতেন বলেও আক্ষেপ করেন তিনি। এর পাশাপাশি সিবিআইয়ের ভূমিকা নিয়েও কটাক্ষ করতে ছাড়েননি মুখ্যমন্ত্রী।

উল্লেখ্য, এদিন দুপুরে জেলা সফরে কলকাতা থেকে মুর্শিদাবাদে যান। সেখান থেকে মালদহে এসে পৌঁছন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। হাওড়ার হেলিকপ্টার থেকে নামতেই আরজি কর মামলা নিয়ে তাঁকে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে সেই প্রশ্নের উত্তরে মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট জানিয়ে দেন, আরজি করের রায়ে তিনি খুশি নন। এই প্রসঙ্গে মমতা জয়নগর, ফরাক্কা এবং গুড়াপের ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা তুলে ধরে বলেন, ‘তিনটি ক্ষেত্রেই তদন্ত করেছে পুলিশ। পুলিশের দেওয়া চার্জশিটের ভিত্তিতেই বিচার করে নিম্ন আদালত ফাঁসির সাজা শুনিয়েছে।’ মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘তিনটি কেসেই আমরা ফাঁসির সাজা করিয়ে দিয়েছি। এটা (আরজি কর মামলা) খুব গম্ভীর বিষয়!’

তবে এদিন বিচারকের রায় নিয়ে কিছু না বললেও সিবিআইয়ের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমাদের হাতে এই মামলা থাকলে, আমরা অনেক আগেই ফাঁসির রায় করিয়ে দিতে পারতাম।’ তার পরই সিবিআইয়ের ভূমিকা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, ‘আমি জানি না, কী ভাবে লড়াই করেছে, কী যুক্তি দিয়েছে। সবটাই সিবিআই করেছে। আমাদের হাত থেকে মামলাটা ইচ্ছা করে কেড়ে নিয়ে চলে গেল! আমরা চেয়েছিলাম নর পিশাচদের, চরমতম শাস্তি হোক! এই রায়ে আমি সন্তুষ্ট নই। ফাঁসির সাজা হলে অন্তত মনকে সান্ত্বনা দিতে পারতাম।’

প্রসঙ্গত, সোমবার জেলা সফর শুরু করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রথমে তিনি মুর্শিদাবাদে যান। সেখানে সরকারি কর্মসূচি সেরে মালদহের উদ্দেশে উড়ে যান। মুর্শিদাবাদে যাওয়ার আগে ডুমুরজলা হেলিপ্যাড গ্রাউন্ডে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট জানিয়েছিলেন, ফাঁসির দাবিতে তিনিও পথে নেমেছিলেন। মিছিলেও হেঁটেছেন। তিনিও দোষীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান। তিনি যখন এই কথা বলেন, তখনও বিচারক আরজি কর মামলায় সাজা ঘোষণা করেননি। তবে সাজা ঘোষণার পরেও মমতা প্রথম প্রতিক্রিয়াতেই নিজের অসন্তোষের কথা জানিয়ে দেন।