শীতের পথে বাধা পশ্চিমী ঝঞ্ঝা

আবহাওয়া কলকাতা জেলা রাজ্য শহর

নিজস্ব প্রতিনিধি: বৃহস্পতিবার রাজ্যের বেশিরভাগ জায়গা ঘন কুয়াশায় ঢেকে ছিল, যার ফলে দৃশ্যমানতা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গিয়েছিল। এতটাই ঘন কুয়াশা ছিল যে কাছাকাছি বস্তুও অস্পষ্ট হয়ে উঠেছিল। এই কারণে রেল, সড়ক এবং জলপথে যান চলাচলে ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। তবে কুয়াশার কারণে হালকা ঠান্ডার অনুভূতিও তেমনভাবে টের পাওয়া যায়নি।আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, শুক্রবারও একই পরিস্থিতি বজায় থাকবে। শীতের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে পশ্চিমী ঝঞ্ঝা। তবে আবহবিদরা জানিয়েছেন, শনিবার থেকে পশ্চিমী ঝঞ্ঝা কেটে গেলে রাজ্যে শীত আবার ফিরতে পারে।

শুক্রবার সকালে ঘন কুয়াশা থাকার সম্ভাবনা থাকলেও, দিনের বেলা কুয়াশা কাটতে শুরু করবে। কলকাতা ও তার আশপাশের অঞ্চলে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশপাশে থাকবে। আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, উত্তরবঙ্গে আগামী সপ্তাহের শুরুতে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। দার্জিলিং ও কালিম্পং জেলার পার্বত্য এলাকায় হালকা বৃষ্টি হতে পারে, যার সঙ্গে তুষারপাতও হতে পারে।

বুধবার থেকে রাজ্যে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বাড়তে শুরু করেছে। এরই মধ্যে তাপমাত্রা ২ ডিগ্রির বেশি বেড়েছে। পশ্চিমী ঝঞ্ঝার কারণে উত্তুরে হাওয়ার গতি কমে গেছে। এর ফলে শনিবার পর্যন্ত তাপমাত্রা ঊর্ধ্বমুখী থাকবে। তবে রবিবার থেকে পশ্চিমী ঝঞ্ঝা সরে গিয়ে উত্তুরে হাওয়ার দাপট বাড়বে, যার ফলে তাপমাত্রা ফের ২-৩ ডিগ্রি কমে যাবে। কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকায় তাপমাত্রা ফের ১৩ থেকে ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঘরে নেমে আসার সম্ভাবনা। যদিও কড়া শীত অনুভূত হবে না, তবে শীতের আমেজ বজায় থাকবে আরও কয়েকদিন।

সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বৃদ্ধির সঙ্গে রাজ্যে কুয়াশার দাপটও বাড়ছে। উত্তরবঙ্গের মালদা, দুই দিনাজপুর ও কোচবিহারে ঘন কুয়াশার সতর্কতা জারি করা হয়েছে। দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কোচবিহার এবং আলিপুরদুয়ার জেলায় শুক্রবার ঘন কুয়াশার সতর্কতা রয়েছে। কিছু এলাকায় দৃশ্যমানতা ৫০ মিটারে নেমে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। বাংলাতেও ঘন কুয়াশার প্রভাব থাকবে। হাওয়া অফিস জানিয়েছে, কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ ও নদিয়া জেলায় ঘন কুয়াশার সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৬.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিকের চেয়ে ২.৭ ডিগ্রি বেশি। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিকের তুলনায় ১.২ ডিগ্রি বেশি। বাতাসে আপেক্ষিক আর্দ্রতা সর্বাধিক ছিল ৮৮ শতাংশ এবং সর্বনিম্ন ৫৯ শতাংশ। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যবাসীকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, বিশেষত কুয়াশার কারণে যান চলাচলে সমস্যা এড়াতে। পশ্চিমী ঝঞ্ঝা কেটে যাওয়ার পর শীত ফের রাজ্যে ফিরে আসার সম্ভাবনা থাকলেও, কুয়াশার দাপট আপাতত বজায় থাকবে।