নিউজ পোল ব্যুরো:- উত্তরবঙ্গের অন্যতম আকর্ষণীয় অভয়ারণ্য জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের বিস্তীর্ণ সবুজমাঠ, ঘন জঙ্গল এবং বন্যপ্রাণীর বৈচিত্র্যের জন্য এই জায়গাটি পর্যটকদের কাছে খুব জনপ্রিয়। এবার জলদাপাড়ার চিলাপাতা রেঞ্জে হাতি সাফারি চালু করার উদ্যোগ নিয়েছে জেলা প্রশাসন ও বন দফতর, যা পর্যটনের নতুন দিগন্ত খুলে দেবে বলেই মনে করছেন সকলে।
চিলাপাতা রেঞ্জ জলদাপাড়ারই এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যা তার ঘন শালবন এবং বন্যপ্রাণীর সমৃদ্ধির জন্য বিখ্যাত। এখানকার প্রধান আকর্ষণ হল হাতি, গৌর, চিতাবাঘ, হরিণ এবং নানা প্রজাতির পাখি। তবে এতদিন পর্যটকরা এখানে কেবল জিপ সাফারির মাধ্যমে জঙ্গলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারতেন। এবার হাতি সাফারি চালু হলে পর্যটকেরা আরও নিবিড়ভাবে প্রকৃতির মাঝে বন্যপ্রাণীর জীবনযাত্রা প্রত্যক্ষ করতে পারবেন।
হাতি সাফারির অন্যতম বিশেষত্ব হল, এটি পরিবেশবান্ধব। জিপ সাফারির তুলনায় এটি কম শব্দ তৈরী করে, ফলে বন্যপ্রাণীরা কম বিরক্ত হয়। এছাড়া হাতির পিঠে চড়ে জঙ্গলের ভিতরে পৌঁছানো সম্ভব, যেখানে গাড়ি যেতে পারে না। চিলাপাতা রেঞ্জের গভীর অরণ্যে বন্যপ্রাণীদের কাছ থেকে স্বাভাবিক দূরত্ব বজায় রেখে তাঁদের জীবনধারা পর্যবেক্ষণের এটি একটি দারুণ উপায়।
জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের হাতি সাফারির খ্যাতি বহু আগে থেকেই রয়েছে। তবে চিলাপাতা রেঞ্জে এটি চালু করতে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ ছিল। জেলা প্রশাসন ও বন দফতর যৌথভাবে সেই সমস্যাগুলো সমাধান করে পর্যটনের নতুন দরজা খুলতে চলেছে বলেই সূত্রের খবর। পর্যটকদের সুবিধার জন্য নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হচ্ছে এবং ট্রেনিংপ্রাপ্ত মাহুতদের তত্ত্বাবধানে হাতিগুলোকে প্রস্তুত করা হচ্ছে।
চিলাপাতায় হাতি সাফারি চালু হলে স্থানীয় পর্যটন শিল্প আরও বিকশিত হবে। ফলে আশপাশের হোটেল, রিসর্ট এবং স্থানীয় ব্যবসায়ীরাও লাভবান হবেন। পাশাপাশি, বন দফতরের এই উদ্যোগ থেকে পাওয়া রাজস্ব সংরক্ষণ কার্যক্রমের উন্নয়নে ব্যবহার করতে পারবে। এই নতুন উদ্যোগের ফলে জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের আকর্ষণ আরও বৃদ্ধি পাবে এবং প্রকৃতিপ্রেমী ও বন্যপ্রাণী পর্যবেক্ষকদের জন্য এটি হবে এক অনন্য অভিজ্ঞতা।