নিউজ পোল ব্যুরো:- প্রাকৃতিক সম্পদ এবং পরিবেশের সংরক্ষণে ভারতের দৃঢ় প্রতিশ্রুতি আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল। উদয়পুর এবং ইন্দোর – এই দুই শহর ইউনেস্কো স্বীকৃত বিশ্বের জলাভূমি শহরের তালিকায় স্থান পেয়েছে। এই নতুন সম্মাননার মাধ্যমে ভারতের জলাভূমি শহরের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৩১টি, যা দেশের পরিবেশবান্ধব উন্নয়নের প্রতি এক শক্তিশালী বার্তা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের চৌহদ্দিতে ছড়িয়ে পড়া এই দুটি শহরের প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য তাদেরকে এই বিশেষ মর্যাদার যোগ্য করে তুলেছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সোশাল মিডিয়ায় এই কৃতিত্ব তুলে ধরেছেন এবং এই অর্জনকে দেশের পরিবেশগত উন্নয়নের প্রেরণা হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তিনি লিখেছেন, “এই স্বীকৃতি আমাদের দৃঢ় প্রতিশ্রুতি, উন্নয়ন, প্রকৃতি এবং নগর উন্নয়নের মধ্যে সমন্বয় প্রতিষ্ঠা করার কথা প্রতিফলিত করে। এটি আমাদের দেশজুড়ে সবুজ, পরিষ্কার এবং পরিবেশবান্ধব নগর গড়ে তোলার কাজ চালিয়ে যাওয়ার জন্য এক উৎসাহ প্রদান করবে।” এছাড়া, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ভূপেন্দ্র যাদবও তাঁর পোস্টে এই বিষয় নিয়ে বলেছেন, “এই স্বীকৃতি আমাদের জন্য আনন্দের দ্বিগুণ কারণ এটি অর্থনীতি এবং বাস্তুতন্ত্রের সমন্বয়ে এগিয়ে যাওয়ার প্রমাণ। এটি শহুরে এবং গ্রামীণ অঞ্চলে পরিবেশগত সংরক্ষণ বজায় রেখে সামগ্রিক নগর উন্নয়নকে প্রতিফলিত করে।”
এই অর্জনের পথের শুরু ছিল গত ডিসেম্বর মাসে, যখন ভারতের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় তিনটি শহরের মনোনয়ন জমা দিয়েছিল। এই শহরগুলি হল মধ্যপ্রদেশের ইন্দোর, ভোপাল, এবং রাজস্থানের উদয়পুর। সরকারের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “এই শহরগুলির আশেপাশের জলাভূমিগুলি বন্যা নিয়ন্ত্রণ, জীবিকার সুযোগ এবং সাংস্কৃতিক মূল্যবোধের ক্ষেত্রে নাগরিকদের অনেক সুবিধা প্রদান করে।”
বিশ্বের জলাভূমি শহরের তালিকায় স্থান পাওয়া ইন্দোরের রামসার সাইট, সিরপুর হ্রদ, জল পাখি সমাবেশের জন্য খ্যাতি অর্জন করেছে এবং সেখানে একটি পাখির অভয়ারণ্য তৈরী করা হচ্ছে। রাজস্থানের উদয়পুর পাঁচটি প্রধান জলাভূমির জন্য পরিচিত—পিচোলা, ফতেহ সাগর, রঙ সাগর, স্বরূপ সাগর এবং দুধ তালাই—এটি শহরের সংস্কৃতি এবং পরিচয়ের অবিচ্ছেদ্য অংশ। এই জলাভূমিগুলি শহরের মাইক্রো-ক্লাইমেট বজায় রাখতে সাহায্য করে এবং চরম আবহাওয়া থেকে রক্ষা করে। এই অর্জন শুধুমাত্র ভারতের নগর উন্নয়ন ও পরিবেশের প্রতি প্রতিশ্রুতি প্রদর্শনই করছে না, বরং এটি অন্যান্য শহরকে নিজেদের প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণে আরও মনোযোগী হতে উদ্বুদ্ধ করবে আগামীদিনে এমনটাই বিশ্বাস সকলের।