নিজস্ব প্রতিনিধি,কলকাতাঃ ভূপতি নগর বিস্ফোরণ কান্ডে অভিযুক্ত বলাইচরণ মাইতি, মানবকুমার পড়ুয়ার শর্তসাপেক্ষ জামিন মঞ্জুর করল কলকাতা হাইকোর্ট। বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিচারপতি অপূর্ব সিনহা রায়ের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দিল পঞ্চাশ হাজার টাকা করে ব্যক্তিগত বন্ড ও রাজারহাট নিউটাউনের বাইরে তাঁরা বেরোতে পারবে না, শুধুমাত্র আদালতের হাজিরা ছাড়া।
আদালতের পর্যবেক্ষণ:
আদালতের কাছে যে নথি জমা পড়েছে তাতে অভিযুক্তরা প্রভাবশালী এটা আদালতও মনে করে। কিন্তু তদন্ত শেষ হয়ে গেলেও নিম্ন আদালতে এখনও পর্যন্ত বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়নি। সাক্ষীর সংখ্যা এতো বেশি তাতে আদালত মনে করছে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে এই বিচার প্রক্রিয়া শেষ করা সম্ভব নয়।
যেহেতু মামলাটি নগর ও দায়রা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে তাই আদালত আইন অনুযায়ী অভিযুক্তের ওপরে বেশ কয়েকটি শর্ত আরোপের মাধ্যমে জামিন মঞ্জুর করছে। কারণ, আদালত মনে করছে যে, যেহেতু অভিযুক্তরা প্রভাবশালী তাই শর্ত আরোপ না করলে বিচারাধীন মামলার নথি এবং সাক্ষী নষ্ট হতে পারে।
আদালতের শর্ত:
- পঞ্চাশ হাজার টাকা করে ব্যক্তিগত বন্ড
- দুজন ব্যক্তিগত জামিনদার
- নিউটাউনের বাইরে বেরোতে পারবেন না
*সপ্তাহে দুদিন করে আদালতের বেঞ্চ ক্লার্কের কাছে হাজিরা দিতে হবে
*নিউটাউনের যেখানে থাকবে সেইখানকার ঠিকানা তদন্তকারী অফিসার ও আদালতে জমা রাখতে হবে
*যে দুটি ফোন নাম্বার ব্যবহার করবে সেই দুটি ফোন নাম্বারের কল রেকর্ড এনআইএ করবে।
প্রসঙ্গত:
২০২২ সালের ২ ডিসেম্বর পূর্ব মেদিনীপুরের ভূপতিনগরের বিস্ফোরণে রাজকুমার মান্না সহ তিন জনের মৃত্যু হয়। ৪ জুন, ২০২৪ রাজ্য পুলিশের কাছ থেকে তদন্তের দায়িত্ব নিয়েছিল এনআইএ। অভিযুক্তদের আইপিসি এবং ইএস আইনের (বিস্ফোরক পদার্থ আইন) বিভিন্ন ধারায় চার্জশিট দেয় এনআইএ।
৬ এপ্রিল ২০২৪ এনআইএ-র একটি দল ভোরবেলা ভূপতিনগরে বোমা বিস্ফোরণ জড়িত অভিযুক্তদের ধরতে গেলে স্থানীয়দের দ্বারা আক্রমনের মুখে পড়ে। আহত হন এন আইয়ের আধিকারিকেরা। পুলিশের গাড়িও ভাঙচুর হয়। নাম জড়ায় পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ মানবকুমার পড়ুয়া এবং তৃণমূল কর্মী নবকুমার পণ্ডার। বৃহত্তর ষড়যন্ত্রে এই দুই তৃণমূল নেতা জড়িত রয়েছে বলে চার্জশিটে দাবি করে এন আই এ।