নিজস্ব প্রতিনিধি, উত্তর চব্বিশ পরগনা: জলা জমি ভরাট করে চলছে অবৈধভাবে পাকা বিল্ডিংয় নির্মাণ। দীর্ঘদিনের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমেই হাতেনাতে পাকড়াও। সম্প্রতি নয়ানজুলিতে অভিযোগ ওঠে অবৈধভাবে ভরাট করা হচ্ছে জলা জমি। আজ বৃহস্পতিবার সেই জমি পরিদর্শনেই পৌঁছালেন ভূমি রাজস্ব দফতরের আধিকারিকরা। সেখানে পৌঁছেই যা দেখলেন, তাতেই রীতিমতন চক্ষু চড়কগাছ আধিকারিকদের। উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট মহাকুমার বসিরহাট ১ নম্বর ব্লকের পিফা গ্রাম পঞ্চায়েতের ঘটনা।
সেখানেই শেতপুুরগ্রামে পুর্ত দপ্তরের নয়নজলিতে জলা জমি ভরাট করে দেদার পাকা বিল্ডিং নির্মাণ করছে কেউ বা কারা। কিন্তু সরকারি জমিতে কিভাবে রমরমিয়ে চলছে অবৈধ কাজ?
উল্লেখ্য, ২০২২ সালে আব্দুল্লাহ হাজী নামের এক ব্যক্তি ৪৮ শতক জমি কেনেন। পরবর্তীতে সেখান থেকে এক শতক জমি বিক্রি করেন ক্লাব কর্তৃপক্ষের কাছে। বাকি ৪৭ শতক জমি নিজের ভেবেই করছিলেন নির্মাণ, যার ফলেই বিপাকে পড়েছে পাঁচটি গ্রামের কয়েকশ চাষী। অতিবৃষ্টির ফলে নষ্ট হয়েছে ফসল, ক্ষতি হয়েছে চাষীদের।
অপরদিকে আবার এলাকায় ডুবে যাওয়ার কারণে জল বেরোনোর ব্যবস্থা নেই। এই নিয়ে স্থানীয় একটি ক্লাব অভিযোগ দায়ের করলে সেই কেসও বিচারাধীন হয়।এরপর সেখানে জমি দখল করে পাকা বিল্ডিং নির্মাণের খবর পাওয়া মাত্রই অবিলম্বে তদন্ত শুরু নির্দেশ দেওয়া হয়।
এদিন পূর্ত দফতরের আধিকারিক সুশান্ত দাস বলেন, ‘আমরা মেপে দেখলাম সরকারি পাঁচ শতক জমি দখল করে সেখানে বেআইনিভাবে বিল্ডিং নির্মাণ হয়েছে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাবো দ্রুত ব্যবস্থা নেব। এইভাবে সরকারি জমির দখল করা যায় না তাহলে প্রশ্ন হচ্ছে গত তিন বছর ধরে এখানে বেআইনি বিল্ডিং হল। রাস্তা আরে পূর্ত দপ্তরের জমি বেনামে বিক্রি হয়ে গেছে প্রশাসনকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে। বেশ কয়েক বছর ধরে সেখানে অবৈধ নির্মাণ হচ্ছে। সেতপুর ক্লাবের সম্পাদক হাসানুল সরদার বলেন ,জমির মালিক আমাদের কাছে এক শতক ফাকা জমিন সেখানে আমরা ক্লাব তৈরি করেছি দীর্ঘ করেছি এসব অঞ্চলে কৃষকরা ও স্থানীয় বাসিন্দারা আমাদের কাছে অভিযোগ করে আসছিল। তাদের ফসল মাঠে জমির ফসল ভোলাতে পারছে না অল্প বৃষ্টি হলেই জল দাঁড়িয়ে যাচ্ছে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কৃষকরা জীবন জীবিকার টান পড়ছে। পাশাপাশি পাঁচটা থেকে ছয়টা গ্রামের জল এই নয়নজলি থেকে নিকাশি হয়। তা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। এখানকার এই জমির মালিক বেআনিভাবে আটকে বিল্ডিং করেছে অবিলম্বে সেগুলো ভাঙ্গা হোক তার জন্যই আমরা অভিযোগ করেছি’।
এই বিষয়ে জমির মালিক আব্দুল্লাহ মণ্ডল বলেন, ‘আমার এখানে ৪৮ শতক জমি রয়েছে। আমি ক্লাব কর্তৃপক্ষকে ১ শতক জমি দিয়েছিলাম সেখানে তারা ক্লাব নির্মাণ করেছে পাশাপাশি আরো জমি দখল করে বিল্ডিং তৈরি করেছে। এটাও প্রশাসন দেখুক যদি আমি নয়নঞ্জলি ভরাট করে কংক্রিটের বিল্ডিং তৈরি করি যদি তদন্ত করে বেআইনি হয় তা সবার জন্য যা তাই ন আমার জন্য তাই একই হোক আমি সেটা মেনে নেব। কিন্তু পাশাপাশি দুটো দোকান ঘর অবৈধভাবে নির্মাণ করা হয়েছে’। পিফা গ্রাম পঞ্চায়েতের কংগ্রেসের সদস্য রবিন মোল্লা বলেন, ‘এটা বিচারাধীন যেভাবে বেআইনি জমি দখল হচ্ছে এগুলো বন্ধ হোক প্রশাসন ব্যবস্থা নি ক সবার জন্য সমান আইন। একজনের ভাঙবে আর একজনের ভাঙবে না এটা হতে পারে না’। এর পাশাপাশি পিফা গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান আলমগীর মন্ডল বলেন, ‘এই জমি বিছানা দিন প্রশাসন তদন্ত করছে যদি কেউ নিয়ে তাকে উপযুক্ত তদন্ত করে সেগুলো ফিরিয়ে আনা হোক পাশাপাশি তেঁতুলতলা থেকে শেতপুর পর্যন্ত যেসব অবৈধ নির্মাণ হয়েছে প্রশাসন সেটাও তদন্ত করে দেখুন আমরা চাই সঠিক তদন্ত করে সরকারি জমি পুনরায় সেই জায়গায় ফিরে আসুক’।